ভৃগু 
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা 
{ঋষি
| 
 হিন্দু 
পৌরাণিক সত্তা 
| 
ভারতীয় পৌরাণিক সত্তা |
পৌরাণিক সত্তা |
কাল্পনিক সত্তা |
কল্পনা |
সৃজনশীলতা |
কর্মক্ষমতা
|
জ্ঞান |
মনস্তাত্ত্বিক ঘটনা |
বিমূর্তন
 |
বিমূর্ত-সত্তা
| 
সত্তা
|}
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে–
  প্রজাপতি, 
ঋষি এবং ভার্গব 
বংশের প্রতিষ্ঠাতা।
ভৃগুকে ধনুর্বেদ বিদ্যার জনক হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।
একবার ব্রহ্মা বরুণের একটি যজ্ঞানুষ্ঠানের আয়োজন করলে,
ভৃগু 
উক্ত যজ্ঞ থেকে জন্মগ্রহণ করেন।
এঁর স্ত্রীর 
নাম ছিল 
পুলোমা।
উল্লেখ্য,
ভৃগুর স্ত্রী হওয়ার পূর্বে 
পুলোমা নামক এক রাক্ষস এঁকে বিবাহ করার জন্য প্রস্তাব 
পাঠান।
	
	কিন্তু পুলোমা'র 
পিতা রাক্ষস-পুলোমার হাতে কন্যাকে সমর্পণ না করে ভৃগুর সাথে বিবাহ দেন।
	
	ফলে রাক্ষস  ভৃগুপত্নীকে অপহরণের সুযোগ খুঁজতে থাকেন।
	
	একবার গর্ভবতী পুলোমাকে ঘরে রেখে  ভৃগু স্নানে যান।
	 ভৃগু যাবার সময় ঘরের অধিষ্ঠিত 
	
	অগ্নির 
 উপর স্ত্রীর রক্ষাভার দিয়ে যান।
	
	এই সুযোগে রাক্ষস 
পুলোমা ভৃগুপত্নীকে অপহরণ করতে আসেন।
	তিনি 
	
	অগ্নির কাছে প্রশ্ন করেন যে, 
	পূর্বে আমি এই 
কন্যাকে স্ত্রী হিসাবে পাওয়ার জন্য মনে মনে বরণ করেছিলাম।
	
	এরপর 
	ভৃগু একে স্ত্রী হিসাবে লাভ করেন।
	
	আইনত পুলোমা (ভৃগুপত্নী) তাঁরই স্ত্রী হওয়া উচিৎ।
	
	উত্তরে 
	
	অগ্নি 
	
	বলেন যে,–
	যেহেতু 
মন্ত্রপাঠ করে তুমি তাঁকে স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ কর নি তাই সে তোমার স্ত্রী নয়।
	
	এরপর রাক্ষস বরাহরূপ ধারণ করে, 
	
	ভৃগুপত্নীকে 
অপহরণ করে রওনা হন।
	
	কিন্তু পথিমধ্যে 
	ভৃগুপত্নী'র 
	গর্ভস্থ সন্তান 
	
	চ্যাবন ভূমিষ্ট হয় এবং 
	
	
	চ্যাবনেরর তেজে এই রাক্ষস ভস্মীভূত হয়। 
	ভৃগু গৃহে প্রত্যাবর্তনের পর, কেন 
অগ্নি 
তাঁর স্ত্রী পুলোমাকে রক্ষা করেন নাই, এই কারণে অগ্নিকে 'সর্বভুক্ হও'
	
	অভিশাপ দেন।
	
	এরপর 
অগ্নি নিজেকে অগ্নিহোত্র যজ্ঞ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করেন।
	
	ফলে দেবতারা হব্য থেকে বঞ্চিত হতে থাকলে- 
	
	
	ব্রহ্মা
	
অগ্নিকে বলেন যে,
	
	কেবলমাত্র গুহ্যদেশের শিখা ও ক্রব্যাদ (মাংসভক্ষক) শরীর সর্বভুক হবে এবং মুখে যে 
আহুতি দেওয়া হবে,
	
	তাই দেবগণের ভাগরূপে গৃহীত হবে।
    
        
	  
[মহাভারত, 
	আদিপর্ব, 
	পঞ্চম-সপ্তম অধ্যায়। 
	] 
বিষ্ণুপুরাণের 
মতে–
 
ইনি 
ব্রহ্মার 
মানস পুত্র।
মনু সংহিতার মতে ইনি দশজন প্রজাপতির অন্যতম।
ইনি 
কর্দমের 
কন্যা খ্যাতিকে বিবাহ করেছিলেন।
খ্যাতির গর্ভে তাঁর দুটি পুত্র এবং একটি কন্যা জন্মে।
দুই পুত্রের নাম ছিল–
ধাতা ও বিধাতা এবং 
কন্যার নাম ছিল 
লক্ষ্মী।
লক্ষ্মীর 
সাথে বিষ্ণুর বিবাহ হয়।
        [বিষ্ণুপুরাণ। দশম অধ্যায়। ভৃগু আদি 
বংশ পর্যায়] 
 
একবার বীতহব্য নামক এক রাজা প্রতর্দন নাম এক রাজপুত্রের কাছে পরাজিত হয়ে ভৃগুর শরণাপন্ন হন। প্রতর্দন পরাজিত শত্রুকে খুঁজতে খূঁজতে ভৃগুর আশ্রমে এলে– ইনি বীতহব্যকে রক্ষার করার জন্য বলেন, তাঁর আশ্রমে ব্রাহ্মণ ভিন্ন কোন ক্ষত্রিয় নাই। ভৃগুর এই বাক্যের প্রভাবে বীতহব্য ব্রাহ্মণত্ব লাভ করেন। একবার দেবতারা ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরের মধ্যেকে শ্রেষ্ঠ কে, তা জানার জন্য ভৃগুর শরণাপন্ন হন। ভৃগু এই তিন দেবতাদের পরীক্ষার জন্য প্রথমে ব্রহ্মার কাছে যান। ইনি ইচ্ছা পূর্বক ব্রহ্মার প্রতি সম্মান না দেখালে, ব্রহ্মা তাঁর প্রতি তীব্র ক্রোধ প্রকাশ করেন। পরে স্তব দ্বারা তাঁকে সন্তুষ্ট করে মহাদেবেরর কাছে যান। মহাদেবকে সম্মান না দেখানোর কারণে, মহাদেব তাঁকে হত্যা করতে উদ্যত হন। এবারও ভৃগু স্তব করে মহাদেবকে সন্তুষ্ট করেন। এরপর ইনি বিষ্ণুকে পরীক্ষা করার বিষ্ণুর আবাসস্থল গোলকধামে যান। সেখানে বিষ্ণুকে নিদ্রিত অবস্থায় দেখে ইনি বিষ্ণুর বক্ষে পদাঘাত করেন। বিষ্ণু ঘুম থেকে জেগে উঠে ভৃগুর পায়ে আঘাত লেগেছে মনে করে তাঁর পদসেবা করতে থাকেন। এরপর ভৃগু বিষ্ণুকেই শ্রেষ্ঠ দেবতা হিসাবে স্বীকৃতি দেন। উল্লেখ্য এরপর থেকে বিষ্ণুর বুকে ভৃগুর পদচিহ্ন আঁকা রয়েছে।