গ্রাম: মধ্যম গ্রাম। ষড়্জ গ্রামের ষাড়্জী ও নৈষাদী এবং মধ্যম গ্রামের গান্ধারী, মধ্যমা, ও পঞ্চমী। উভয় গ্রামের মিশ্রণ হলেও তিনটি মধ্যম গ্রামের প্রাধান্যে কারণে একে মধ্যম গ্রামের রাগ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
গ্রামরাগ: মিশ্র (ষাড়্জী ও নৈষাদী এবং মধ্যম গ্রামের গান্ধারী, মধ্যমা, ও পঞ্চমী)
রাগ প্রকৃতি: ভাষা (গীত)
আরোহণ : স, গ, ম, প কাকলী নিষাদ, র্সা
আরোহণ: র্সা, কাকলী নিষাদ, প, ম, গ, স
জাতি: ঔড়ব-ঔড়ব
গ্রহস্বর : ষড়্জ
অংশস্বর: ষড়্জ
ন্যাস স্বর: ষড়্জ
অলঙ্কার: প্রসন্নাদি।
রস: বীর, নাটকে শম্ভোগ-শৃঙ্গারে ব্যবহৃত হতে পারে।
তাল: চচ্চ্ৎপুট
সঙ্গীতরত্নাকরে প্রদেয় আক্ষিপ্তিকা
ভরত, কোহল প্রমুখ সঙ্গীতাচার্যরা একে
মধ্যম গ্রামের রাগ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। তারপরেও এই রাগের গ্রাম নিয়ে সংশয়
ছিল। কারণ ষড়্জ গ্রামে পঞ্চম ছিল চার শ্রুতির, পক্ষান্তরে মধ্যমগ্রামের পঞ্চম তিন
শ্রুতির। হিন্দোল মধ্যম গ্রামের রাগ হলেও ত্রিশ্রুতির ছিল। সেকালের হিন্দোলের
অংশস্বর, গ্রহস্বর ও ন্যাসস্বর ছিল ষড়্জ। একালের হিন্দোলের বাদী স্বর
ধৈবত। সেকালের হিন্দোলে ধৈবত ও ঋষভ বর্জিত ছিল। একালের হিন্দোলেও এই দুটি স্বর
বর্জিত। অর্থাৎ হিন্দোল ঔড়ব-ঔড়ব জাতির রাগ। নাট্যগীতি বা ধ্রবা গানে বীররসের গানে
ব্যবহৃত হতো। তবে কখনো কখনো শৃঙ্গার রসের গানে এই রাগ ব্যবহৃত হতো।
খ্রিষ্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীতে শার্ঙ্গদেবের রচিত
সঙ্গীতরত্নাকরে এই রাগটিকে মধ্যমগ্রাম গ্রামের
বেসরা
গীতের অধীনে অন্তর্ভুক্ত উল্লেখ করা হয়েছে। এই গ্রন্থে ভাষাজনক রাগ হিন্দোলের অধীনে
রাখা হয়েছে- ৯টি ভাষারাগ। এগুলো হলো- বেসরী, চুতমঞ্জরী, ষড়্জমধ্যমা, মধুরী,
ভিন্নপৌরালী, গৌড়ী, মনবেসরী, ছেবাটী, পিঞ্জরী।
খ্রিষ্টীয় সপ্তদশ শতাব্দীর শেষার্ধে থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে লোচন শর্মার
রচিত 'রাগতরঙ্গিনী' গ্রন্থে হিন্দোলকে আদি রাগ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এবং এর
অধীনে ছিল ৫টি রাগিণী। এগুলো হলো-বেলাবলী, দেশাখ, অরু, রামকরী (রামকেলী), ললিতা ও
পটমঞ্জরী।
বর্তমানে এই রাগের প্রকৃতি
বলা হয় গম্ভীর। এই রাগে ঋষভ
ও পঞ্চম বর্জিত। এই রাগে বিস্তার হয় মধ্য ও তার সপ্তক। এতে নিষাদ বক্রভাবে এবং
দুর্বলভাবে ব্যবহৃত হয়। এই রাগে গমকের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। অনেকে মনে করেন এর
বাদী গান্ধার এবং সমবাদী ধৈবত। এই বিচারে রাগটিকে পূর্বাঙ্গের বলে বিবেচনা করা হয়।
এই রাগের সাথে ঋষভ যুক্ত করলে,
সোহিনী'র
কাঠামো পাওয়া যায়।
আরোহণ: : স, গ হ্ম ধ র্স
অবরোহণ : র্স ন ধ হ্ম গ স
জাতি : ঔড়ব-ঔড়ব।
বাদীস্বর : ধৈবত
সমবাদী স্বর : গান্ধার
অঙ্গ : উত্তরাঙ্গ।
সময়
:
দিবা প্রথম প্রহর।
পকড় : স, গ, হ্ম ধ ন
ধ, হ্ম গ, স।