ভিন্নষড়্‌জ
উত্তর ভারতীয় সঙ্গীত পদ্ধতিতে বিলাবল ঠাটের অন্তর্গত রাগ বিশেষ।

খ্রিষ্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দীর দিকে এই রাগটি গ্রামরাগ হিসেবে প্রচলিত ছিল। ভরতের নাট্যশাস্ত্রে এই রাগটি ভিন্ন গীতরীতির জাতিগান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। গ্রামরাগ শুদ্ধ ষাড়বকে ভিন্নভাবে প্রকাশের কারণে এর নামকরণ করা হয়েছিল ভিন্নষড়্‌জ।

এই গ্রামরাগটি উৎপত্তি হয়েছিল- ষড়্‌জ গ্রামের বিকৃত স্বরভিত্তিক '
ষড়্‌জোদীচ্যবতী' থেকে।  কারণ এতে শুদ্ধ স্বরের পরিবর্তে
অন্তর গান্ধার ও কাকলী নিষাদ ব্যবহৃত হতো।

এক নজরে প্রাচীন ভারতের ভিন্নষড়্‌জের পরিচয়

শারঙ্গদেবের রচিত সঙ্গীতরত্নাকরে এর আক্ষিপ্তিকা দেওয়া আছে। বৃহদ্দেশীতে বলা হয়েছে- এই গ্রামরাগ থেকে সৃষ্টি হয়েছিল ৬টি বিভাষা রাগ। এগুলো হলো- বিশুদ্ধা, দাক্ষিণাত্যা, গান্ধারী, শ্রীকণ্ঠী, পৌরালী ও বঙ্গালী।

খ্রিষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীর দিকে শ্রুতি স্বরের অবস্থান পাল্টে যাওয়ার পর, স্বরের অবস্থান না পাল্টালেও  নাম পাল্টে গেছে। যেমন- প্রাচীন সঙ্গীতশাস্ত্রে এতে ব্যবহৃত হতো অন্তরগান্ধার ও কাকালী নিষাদ। শ্রুতির নবতর বিন্যাসে এই দুটি স্বর আধুনিক কালে শুদ্ধ গান্ধার ও শুদ্ধ নিষাদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। প্রাচীন পদ্ধতি অনুসারে এই রাগে কেউ কেউ এই রাগের বাদী স্বর ধৈবত বলে দাবি করেন। এই মতে সমবাদী স্বর গান্ধার হয়। কিন্তু প্রাচীন গ্রামরাগে কোনো সম্বাদী স্বর ছিল না। এই রাগটি অবশ্য ধৈবতকে যাঁরা বাদী স্বর  হিসেবে মান্য করেন, তাঁরা এই রাগটি দিনের প্রথম প্রহরে গেয়ে থাকেন। এক সময় বাংলা দেশে এই রাগটিকে কেউ কেউ হিন্দোলী নামে অভিহিত করতেন। প্রাচীন সঙ্গীতশাস্ত্রে মূলত হিন্দোল বা হিন্দোলক নামে স্বতন্ত্র গ্রামরাগ রাগ ছিল।

   
আরোহণ:  স  গ মধ ন র্স
   
অবরোহণ : র্স নধ  মগ, স
   
ঠাট : বিলাবল
    জাতি : ঔড়ব-ঔড়ব।
   
বাদীস্বর : মধ্যম (মতান্তরে ধৈবত)
   
সমবাদী স্বর : ষড়্‌জ (গান্ধার)
   
অঙ্গ :  পূর্বাঙ্গ।
   
সময় : রাত প্রথম প্রহর।
    পকড় : র্স, নধ, মধনর্স, নধ মগ, মগ স।


তথ্যসূত্র: