ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { হিন্দু পৌরাণিক সত্তা | ভারতীয় পৌরাণিক সত্তা | পৌরাণিক সত্তা | কাল্পনিক সত্তা | কল্পনা | সৃজনশীলতা | কর্মক্ষমতা | জ্ঞান | মনস্তাত্ত্বিক ঘটনা | বিমূর্তন  | বিমূর্ত-সত্ত | সত্তা |}

হিন্দু পৌরাণিক কাহিনিতে এই নামে উল্লেখযোগ্য দুটি চরিত্র পাওয়া যায়।

১.  দেবরাজ ইন্্রের পত্নী এঁর অপর নাম ছিল শচী এঁর পিতার নাম পুলোমা ইন্দ্র এঁর সতীত্বনাশ করলেও পরে  বিবাহ করেছিলেন সতীত্বনাশের কারণে ইন্দ্রাণীর পিতা পুলোমা ইন্দ্রকে অভিশাপ দিতে পারেন, এই ভয়ে ইন্দ্র পুলোমাকে হত্যা করেছিলেন তৈত্তিরীয় ব্রাহ্মণের মতে, ইন্দ্রাণীর যৌন-আবেদন প্রখর ছিল বলে ইন্দ্র অনেক আগেই এঁকেই স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন ইন্দ্রের ঔরসে এঁর গর্ভে জয়ন্ত নামে একটি পুত্র ও জয়ন্তী নামে একটি কন্যা জন্মগ্রহণ করেছিল

ইন্দ্রাণী দেবরাজ
ইন্্রের স্ত্রী হিসেবে, দেবরাজ্যের রাণী ছিলেন কিন্তু অন্যান্য দেবদেবীদের মতো কোনো বিশেষ বিষয়ের অধিকর্তী ছিলেন না। তাই দেবরাজ্যের সম্রাজ্ঞী হওয়া সত্ত্বেই তিনি দেবীর মর্যাদা লাভ করেন নি। একই কারণে অন্যান্য দেবদেবীদের মতো তিনি পূজিতা নন।

একবার ঘটনাক্রমে
ইন্্র স্বর্গচ্যুত হলে, রাজা নহুষ স্বর্গের রাজা হন। নহুষ দেবরাজ্যলাভ করার পর, ইন্দ্রের পত্নী ইন্দ্রাণীকে অধিকার করার চেষ্টা করেন। নহুষের কামনা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য, ইন্দ্রাণী বৃহস্পতির শরণাপন্ন হন। বৃহস্পতি ইন্দ্রাণীকে রক্ষার করার অঙ্গীকার করেন এবং ইন্দ্রাণীকে সাথে করে নহুষের সাথে সাক্ষাৎ করেন। ইন্দ্রাণী নহুষের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নিয়ে, বিষ্ণুর সাথে দেখা করেন। বিষ্ণু ইন্দ্রাণীকে জানান যে, তাঁর উদ্দেশ্যে ইন্্র অশ্বমেধ যজ্ঞ করলে, তাঁর পাপমোচন হবে। বিষ্ণুর পরামর্শ অনুসারে ইন্্র এই যজ্ঞ করে পাপমুক্ত হন। পাপমুক্ত হয়েও তিনি নহুষের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস পেলেন না। এই কারণে তিনি অসহায়ের মতো নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াতে থাকলেন। ফলে ইন্দ্রাণীর সাথে ইন্দ্রের দেখা হলো না। স্বামীর দেখা পাওয়ার জন্য, তিনি নিশাদেবীর আরাধনা শুরু করেন। পরে তিনি সংবাদদায়িকা দেবী উপশ্রুতির আরাধনা করেন। উপশ্রুতি ইন্দ্রাণীর কাছে সকল বিষয় অবগত হয়ে, তাঁর সাথে ইন্দ্রের দেখা করার ব্যবস্থা করে দেন। ইন্দ্রাণী নহুষের কামনার কথা ইন্দ্রকে জানান। বর্তমান অবস্থায় নহুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ক্ষমতা ইন্দ্রের নেই, এই অপারগতা জানিয়ে, তিনি নহুষের পতনের জন্য ইন্দ্রাণীকে একটি কৌশলের কথা বলেন।  এই পরামর্ষ অনুসারে ইন্দ্রাণী নহুষে জানান যে, ঋষিবাহিত যানে নহুষ যদি তাঁর কাছে আসে তাহলেই তিনি তাঁর পত্নী হবেন। ইন্দ্রের পরামর্শ অনুসারে ইন্দ্রাণী নহুষকে একথা জানান। এরপর নহুষ ইন্দ্রাণীকে পাওয়ার জন্য সপ্তর্ষি ও ব্রহ্মঋষি বাহিত রথের আয়োজন করেন তিনি ওই ঋষিদের ভিতরে অগস্ত্যও ছিলেন হঠাৎ নহুষের পা অগস্ত্যর দেহ স্পর্শ করলে, ক্রুদ্ধ অগস্ত্য রাজাকে সর্প হও অভিশাপ দেন। এই অভিশাপের ফলে, নহুষের পতন হয়।

ইতিমধ্যে
বৃহস্পতি  অগ্নির সাহায্যে জলের তলে কমলতন্তুর ভিতরে লুকায়িত ইন্দ্রের সন্ধান পান। এরপর বৃহস্পতি অন্যান্য দেবতা, ঋষি ও গন্ধর্বদের সাথে নিয়ে ইন্দ্রের কাছে যান এবং তাঁর স্তব করতে থাকেন। এর ফলে ইন্দ্রের তেজবৃদ্ধি পায়। নহুষের পতনের পর, সকলে মিলিত হয়ে ইন্দ্রকে পুনরায় স্বর্গরাজ্যের রাজা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।
    [ উদ্যোগপর্ব। অষ্টম-সপ্তদশ অধ্যায়। মহাভারত (কালীপ্রসন্নসিংহ অনূদিত)। সাহিত্যতীর্থ। জুন ২০১৪]

২.
অষ্টমাতৃকার একজন, তিনি ইন্দ্রের দেহ থেকে উৎপন্ন হয়েছিলেন অন্ধকের দেহ থেকে নির্গত রক্তধারা থেকে অসংখ্য অসুরের সৃষ্টি হতে থাকলে, এই মাতৃকা এদের হত্যায় অংশগ্রহণ করেন।