|
Mollusca
প্রাণিরাজ্যের পর্বের নাম মোলাস্কা।
শব্দরূপ: [অভিধান:
মোলাস্কা]
বর্তমানে এই পর্বের প্রায় ৮৫ হাজার
জীবিত প্রজাতি
পাওয়া যায়। ১৭৫৮ খ্রিষ্টাব্দে
লিনিয়াস এই পর্বের নামকরণ করেন।
এই
পর্বের প্রাণিদের অধিকাংশই শামুক (Gastropoda)
এবং ঝিনুক
(Bivalvia)
জাতীয় প্রাণী।
এছাড়া রয়েছ সেপিয়া,
অক্টোপাস ইত্যাদি।
অধিকাংশ
মোলাস্কা সামুদ্রিক প্রাণী। অল্প কিছু শামুক, ঝিনুক জাতীয় প্রাণী স্বাদু পানিতে বাস
করে। আবার কিছু মোলাস্কা আর্দ্র পরিবেশে ডাঙায় বাস করে। সামুদ্রিক মোলাস্কার ঝিনুক
ও শামুক জাতীয় খোলস অত্যন্ত নান্দনিক হয়ে থাকে। এই সব খোলস অলঙ্কার বা গৃহ সজ্জায়
ব্যবহার করা হয়। এদের নরম দেহাংশ অনেকে খাদ্য হিসাবে মানুষ গ্রহণ করে।
এদের দেহে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ একটি শক্ত খোলস থাকে। এই খোলসের
অভ্যন্তরে থাকে এদের নরম দেহ। এর
অধিকাংশ প্রজাতির অঙ্কীয়দেশে মাংসল নরম পদ বা
পা থাকে। এর সাহায্যে ভূমিতে চলাচল এবং পানিতে সাঁতারে জন্য ব্যবহার করে। এছাড়া
মাটিতে গর্ত খনন, কঠিন কোনো অবলম্বন আঁকড়ে থাকা, খাদ্য গ্রহণে এই পদ ব্যবহৃত
হয়।
এদের দেহ কোমল এবং
দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম। মাথার একটি সুষ্পস্ট নিদর্শন আছে। অঙ্কীয় দেহপ্রাচীরে মাংসল
পা আছে। এর সাহায্যে এরা সাঁতার কাটে, ভূমিতে ধীরগতিতে চলে এবং নরম মাটিতে
গর্ত করে। এক প্রকার পৃষ্ঠীয় ভাঁজ লক্ষ্য করা
যায়। একে বলা হয় ম্যান্টল (mantle)
হয়। এই ম্যান্টেল একটি
ম্যন্টেল গহ্বরকে ঘিরে রাখে। এদের ম্যান্টেল থেকে ক্ষরিত রসের দ্বারা শক্ত খোলস
তৈরি হয়।
এদের শরীকে প্রধানত দেহ মস্তক, ম্যান্টল, পদ ও ভিসারাল মাস -এ বিভক্ত। এরা ত্রিস্তরী প্রাণী এবং এদের দেহে প্রকৃত সিলোম দেখা যায়। তবে তা হৃদযন্ত্রের চারপাশে, জননাঙ্গের গহ্বরে ও বৃক্কের চারপাশে সীমাবদ্ধ থাকে। এদের বেশিরভাগই দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম, তবে অনেকেই অপ্রতিসম প্রজাতিও আছে। অধিকাংশ প্রজাতির মস্তক, কর্ষিকা ও সংবেদী অঙ্গ আছে। এদের সাধারণত পৌষ্টিকনালী ইউ আকৃতির। তবে কোনো কোনো প্রজাতির পৌষ্টিকনালী সোজা আকারের হয়ে থাকে। অধিকাংশের মুখ গহ্বরে র্যাডুলা নামক কৃন্তক অংশ বর্তমান। প্রজাতিভেদে এরা উভলিঙ্গ (Hermaphroditic) বা একলিঙ্গ (Dioecious) হতে পারে। এদের দেহে অন্তঃনিষেক অথবা বহিঃনিষেক দেখতে পাওয়া যায়। তবে অধিকাংশ মোলাস্কার ডিমের নিষেক ঘটে দেহের বাইরে, কোনো জলাশয়ে। কিন্তু কিছু মোলাস্কা স্ত্রী মোলাস্কার সাথে দৈহিক মিলন ঘটে। এ সকল মোলাস্কার ডিম বেশ বড় হয়।
ক্রমবিবর্তনের ধারা
লোফোট্রোকোজোয়া
ঊর্ধবপর্ব থেকে মোলাস্কা পর্বের প্রাণীর আবির্ভাব ঘটেছিল ৫৩ কোটি
খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে।
এই
পর্বের প্রজাতিসমূহ ৫০ কোটি থেকে ২০ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে
৯টি ভাগে বিভাজিত হয়ে যায়। এই ভাগগুলো
হলো—
১.
এ্যাপ্লোকোফোরা:
আবির্ভাবকাল ৫০ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।
২. রোস্ট্রোকোন্চিয়া:
আবির্ভাবকাল ৫০ কোটি
খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। ২৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে এই শ্রেণির সকল প্রজাতি
বিলুপ্ত হয়ে গেছে
৩.
সেফালোপোডা:
আবির্ভাবকাল ৫০ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ
৪.গ্যাস্ট্রোপোডা
আবির্ভাবকাল ৫০ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।
৫.
বাইভালভিয়া:
আবির্ভাবকাল ৫০ কোটি
খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।
৬. হেলছিয়োনেল্লোইডা আবির্ভাবকাল ৫০ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।
২৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে এই শ্রেণির সকল প্রজাতি
বিলুপ্ত হয়ে গেছে
৭. পোলিপ্লাকোফোরা:
আবির্ভাবকাল ৪১ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ
৮. স্ক্যাফোপোডা
(আবির্ভাবকাল ৩৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ
৯.মোনোপ্ল্যাকোফোরা
আবির্ভাবকাল ২০ লক্ষ
খ্রিষ্টপূর্বাব্দ
তথ্য :
বাংলা একাডেমী
বিজ্ঞানকোষ। তৃতীয় খণ্ড। আষাঢ় ১৪০৮/জুন ২০০১
https://en.wikipedia.org/wiki/Mollusca