নারী, নৃবিজ্ঞান
নৃজাতির স্ত্রীসত্তার সাধারণ নাম। শব্দটি নৃজাতির উপশ্রেণি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নৃজাতির এর অপর দুটি উপশ্রেণি হলো- নর এবং নপুংশক। লৈঙ্গিক বিচারে নর-নারী পরস্পরের বিপরীতার্থক শব্দ।  বাংলাতে নারী শব্দটি সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কাদের ক্ষেত্রে পরিচয় বহন করলেও ক্ষেত্র বিশেষে তা ব্যবহৃত হয় না। যেমন- বাংলাতে নারীবাচক শিশু সন্তানকে 'নারীসন্তান'-এর পরিবর্তে শিশুকন্যা, কন্যাশিশু, মেয়ে-সন্তান ইত্যাদি শব্দসমূহ ব্যবহৃত হয়।

উপশ্রেণি হিসেবে নারী'র পরিচয় দৈহিক বৈশিষ্ট্যই প্রাধান্য পায়। শৈশব দশায় শিশুকন্যার দৈহিক বৈশিষ্ট্যের পূর্ণরূপ পাওয়া যায় না, আবার বৃদ্ধাবস্থায় নারীর সকল দৈহিক কার্যক্রম পাওয়া যায় না। নারীয় দৈহিক বৈশিষ্ট্যের বিচার করা হয়, বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ বৈশিষ্ট্যের বিচারে। শিশু অবস্থায় কন্যাসন্তানকে দৃশ্যত যৌনাঙ্গের (যোনী) বিচারে চিহ্নিত করা হয়। প্রাপ্তবয়স্কা নারীর ক্ষেত্রে এই তালিকায় যুক্ত হয়- স্ফীত স্তন। আদিম জনসমাজে নগ্ননারীর পরিচিত বহন করতো মূলত বিকশিত স্তন। পোশাকে ঢাকা নারী শরীরে বিকশিত স্তন আবরিত থাকলেও নারীর কমনীয় মুখাবয়ব, দৈহিক রূপরেখা (অপেক্ষাকৃত সরু কোমর, গুরু নিতম্ব), দীর্ঘ কেশরাশি ইত্যাদিকে নারীকে পৃথকভাবে চিহ্নিত করা যায়।

কন্যাশিশু জন্মের কারণ: নারীর দৈহিক এই রূপলাভের পিছনে থাকে, ক্রোমোজোমের [একটি দীর্ঘ
ডিএনএ
অণু] ধরণ। পুরুষ ও নারী উভয়ের কোষে ২৩ জোড়া (মোট ৪৬টি) ক্রোমোজোম থাকে। এর ২২ জোড়া অটোসোম এবং ২৩তম জোড়া হল সেক্স ক্রোমোজোম (X এবং Y ক্রোমোজোম)। নারীর ক্রোমোজোম সেটে দুটি X ক্রোমোজোম  অর্থাৎ (XX) থাকে,পুরুষদের একটি X এবং একটি Y ক্রোমোজোম (XY) থাকে। এই বিশেষ ক্রোমোজোম বৈশিষ্ট্যের জন্য কন্যা-ভ্রুণ, কন্যাসন্তান হয়ে জন্মগ্রহণ করে। কন্যাসন্তানকে চিহ্নিত করা হয় দৃশ্যত যৌনাঙ্গের (যোনী) বিচারে।

বয়ঃসন্ধিতে শিশুর শরীর প্রজনন সক্ষমতার দিকে অগ্রসর হয়। একই সাথে এদের শরীরে অন্যান্য অংশ পূর্ণতার পথে এগিয়ে চলে। উভয় ধরনের পরিবর্তনের ফলে মানব সন্তানের মনোগত দিকের বিকাশ ঘটে। এর পিছনে বিশেষভাবে সক্রিয় ভূমিকা রাখে শরীরের
পিটুইটারি গ্রন্থি

মানবদেহের বাহ্যিক অংশের পরিচয়

উপশ্রেণি হিসেবে নারী'র পরিচয় দৈহিক বৈশিষ্ট্যই প্রাধান্য পায়। শৈশব দশায় শিশুকন্যার দৈহিক বৈশিষ্ট্যের পূর্ণরূপ পাওয়া যায় না, আবার বৃদ্ধাবস্থায় নারীর সকল দৈহিক কার্যক্রম পাওয়া যায় না। নারীয় দৈহিক বৈশিষ্ট্যের বিচার করা হয়, বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ বৈশিষ্ট্যের বিচারে। শিশু অবস্থায় কন্যাসন্তানকে দৃশ্যত যৌনাঙ্গের (যোনী) বিচারে চিহ্নিত করা হয়। প্রাপ্তবয়স্কা নারীর ক্ষেত্রে এই তালিকায় যুক্ত হয়- স্ফীত স্তন। আদিম জনসমাজে নগ্ননারীর পরিচিত বহন করতো মূলত বিকশিত স্তন। পোশাকে ঢাকা নারী শরীরে বিকশিত স্তন আবরিত থাকলেও নারীর কমনীয় মুখাবয়ব, দৈহিক রূপরেখা (অপেক্ষাকৃত সরু কোমর, গুরু নিতম্ব), দীর্ঘ কেশরাশি ইত্যাদিকে নারীকে পৃথকভাবে চিহ্নিত করা যায়।

কন্যাসন্তান যখন প্রাপ্ত বয়ষ্ক হয়ে ওঠে, তখন তার শরীরের গঠন এবং শারীরীক কার্যক্রম পুরুষদের চেয়ে ভিন্নতর হয়ে যায়। যেমন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের পেলভিস ও নিতম্ব চওড়া এবং স্তন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের তুলনায় বড় হয়ে থাকে। মহিলাদের মুখের এবং অন্যান্য শরীরের লোম উল্লেখযোগ্যভাবে কম হয়, শরীরে চর্বি বেশি থাকে এবং পুরুষদের তুলনায় গড় উচ্চতা কম হয় এবং শরীররে পেশি কম থাকে।

নারীত্ব: এই শব্দের দ্বারা মূলত নৃজাতির উপশ্রেণীর হিসেবে নারী পূর্ণরূপকে বুঝানো হয়। প্রাপ্ত বয়স্ক নারীর দৈহিক ও মানিসিক স্থিতিশীল দশায় যে আদর্শিক ব্যক্তিত্ব প্রকাশিত হয়, তাই নারীত্ব। একে সাধারণভাবে নারীর প্রাপ্তবয়স্কতা বুঝানো। মূলত নারীত্ব হলো প্রাপ্তবয়স্ক এবং প্রাপ্তমনস্কের সমন্বিত রূপ। ভৌগোলিক  পরিবেশ ও নৃগোষ্ঠীর ভিন্নতার কারণে নারীত্বের স্থিতিশীল দশা একই বয়সে হয় না। বিভিন্ন দেশে আইন করে নারীত্বের বয়স ধরা হয়েছে ১৮ বৎসর। মূলত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে ৯-১০ বৎসরের দিকে মেয়েদের আদ্য-ঋতু দর্শনের মধ্য দিয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার যাত্রা শুরু করে। এই সময় নারী সন্তন ধারণের উপযোগী হয়ে উঠলেও শরীরে অন্যান্য অংশের পূর্ণাঙ্গ বিকাশ ঘটে না। মানসিকভাবে সে সন্ধান ধারণ, প্রসব এবং সন্তান লালনের মতো বিষয়গুলো সম্পর্কে প্রস্তুত থাকে। শারীর বিজ্ঞানীদের মতে সার্বিকভাবে সে উপযুক্ত হয়ে ওঠে ১৮ বৎসর থেকে। নারীদেহ স্থিতশীল দশায় পৌঁছানোর আগে
পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে হরমোন নিঃসরণের ফলে শরীরের পরিপক্কতার দিক অগ্রসর হয়। এর ফলে নারীয় প্রজনতন্ত্রে অঙ্গ (যোনী, জরায়ু, স্তন) উপযুক্ত হয়ে ওঠে। এই সময় নারীর উচ্চতা, ওজন শক্তি বৃদ্ধি পায়। সব মিলিয়ে নারী তার  কাজের জন্য দৈহিক সক্ষমতা অর্জন করে। মস্তিষ্কের পূর্ণবিকাশের মাধ্যমে তার মধ্যে বুদ্ধিমত্তা সৃজনশীলতার প্রকাশ ঘটে।

এই সময় নারী বিপরীত লিঙ্গ তথা পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং পুরুষকে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়। প্রাকৃতিক বিধিতে প্রজননের মাধ্যমে প্রজাতিকে রক্ষা করার একটি কৌশল হলো সঙ্গম। তাই সহজাত আকর্ষণ এবং মিলনের ফাঁদের ফেলে প্রকৃতি তার প্রজাতিকে রক্ষা করার লক্ষ পূরণ করে নেয়।

নারীর নামগত শ্রেণিকরণ

নারীর বয়স, সামাজিক সম্পর্ক, পেশাগত অবস্থান ইত্যাদির বিচারে নারীকে নানা উপনামে অভিহিত করা হয়। অভিধানে সাধারণভাবে নারী শব্দের সমার্থক শব্দ পাওয়া যায়। কিন্তু বিশেষার্থে এই নামগুলো যথার্থ সমার্থক নয়। এই বিচারে এই শব্দটির শ্রেণিকরণে প্রাথমিকভাবে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। ভাগ দুটি হলো- সাধারণ সমার্থক শব্দাবলি এবং বিশেষার্থক সমার্থক শব্দাবলি।

বিশেষার্থাক সমার্থক শব্দাবলি


সূত্র: