২৫ বৎসর অতিক্রান্ত বয়স
২৫ বৈশাখ ১২৯৩ বঙ্গাব্দ থেকে ২৪ বৈশাখ ১২৯৪ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত (৭ মে ১৮৮৫- ৬ মে ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দ)

কেদার চৌধুরীর রাজা বসন্ত রায় নাটকটি প্রথম অভিনীত হয়েছিল  ১২৯৩ বঙ্গাব্দের ২০ আষাঢ় তারিখে। এই নাটকে একটি গান রবীন্দ্রনাথের ছিল। এই সময়ে রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল- ২৫ বৎসর ২ মাস। এই গানটিন হলো-
          
ওর মানের এ বাঁধ টুটবে না [নাট্যগীতি-৮৯] [তথ্য]

ভারতী ও বালক  পত্রিকার ১২৯৩ ভাদ্র-আশ্বিন সংখ্যায় একটি গানা প্রকাশিত হয়েছিল। গানটি রচনার সুনির্দিষ্ট তারিখ পাওয়া যায় না। এই সময়ে রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল- ২৫ বৎসর ৫ মাস। এই গানটি হলো-
         আমি নিশি নিশি কত [প্রেম-৩০৩] [তথ্য]

১২৯৩ বঙ্গাব্দের ২ অগ্রহায়ণ তারিখে কড়ি ও কোমল প্রকাশিত হয়েছিল। এই গ্রন্থের কিছু কবিতাকে রবীন্দ্রনাথ গানে পরিবর্তন করেন। এর ভিতরে কিছু গান এর আগে কোনো না কোনো পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। এই কবিতাগুলোর রচনাকাল সম্পর্কে জানা যায় না। কবিতাগুলোকে কবে গানে পরিণত করেছিলেন- তাও জানা জায় না। কড়ি ও কোমল -এর প্রকাশকালের সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল- ২৪ বৎসর ৭ মাস। কড়ি ও কোমল -এ যে গানগুলো প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল, তার তালিকা নিচে দেওয়া হলো।
       
কখন যে বসন্ত গেল [প্রেম-৩০৪] [তথ্য]
       
ওগো শোনো কে বাজায় [প্রেম-৫৬] [তথ্য]
       
ওগো এত প্রেম-আশা [প্রেম-৩০২] [তথ্য]
       
হেলা ফেলা সারা বেলা [প্রেম-৩০১] [তথ্য]
       
আজি শরততপনে  প্রভাতস্বপনে [প্রকৃতি-১৪১] [তথ্য]
       
তুমি কোন্‌ কাননের ফুল [প্রেম-৩৬৩] [তথ্য]
        ওগো কে যায় বাঁশরি বাজায়ে [প্রেম-৩০০] [তথ্য]
       
ধরা দিয়েছি গো আমি আকাশের পাখি [প্রেম-৫৪] [তথ্য]
       
এ শুধু অলস মায়া [বিচিত্র-২৯][তথ্য]
       
কেন চেয়ে আছ, গো মা [জাতীয় সংগীত-১০] [তথ্য]
       
আমায় বলো না গাহিতে বোলো না [স্বদেশ-২২] [তথ্য]
       
বিদায় করেছ যারে নয়নজলে [প্রেম-৩৮৩] [তথ্য]

১১ মাঘ ১২৯৩ বঙ্গাব্দ [শনিবার]। এই দিনে দি ব্রাহ্মসমাজের সপ্তপঞ্চাশ সাংবৎসরিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। পূর্বে আদি ব্রাহ্মসমাজের প্রাতঃকালীন অনুষ্ঠানটি মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের পরিবারের অন্তর্ভুক্ত স্ত্রী-পুরুষ ও আদি ব্রাহ্মসমাজের মুষ্টিমেয় সদস্যদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। এবং তা হতো মহর্ষিভবনের ভিতরে। এইবার সর্বপ্রথম বাড়ীর বহিঃপ্রাঙ্গণে প্রাতঃকালীন অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে গীত ২৭টি গানের মধ্যে রবীন্দ্রনাথের রচিত গানের সংখ্যা ২৬টি। প্রভাতের অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয়েছিল ১৩টি গান। এর মধ্যে রবীন্দ্রনাথের গানের সংখ্যা ছিল ১২টি। সন্ধ্যাকালীন অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয়েছিল ১৪টি গান। এর সবগুলোই ছিল রবীন্দ্রনাথের রচিত। নিচে গানগুলির তালিকা দেওয়া হলো।

১২৯৩ বঙ্গাব্দের মাঘোৎসবের পূর্বে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর চুঁচূড়াতে অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েন। অনুষ্ঠানের পরে তিনি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে, চিকিৎসকরা তাঁর জীবনের আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। এই সময় রবীন্দ্রনাথ কয়েকবার চুঁচূড়াতে যাওয়া-আসা করেন। সম্ভবত পিতার মৃত্যু আশঙ্কা থেকে একটি গান রচনা করেন। গানটি হলোলো
        আঁধার সকলই দেখি তোমারে দেখি না যবে।

১২৯৪ বঙ্গাব্দের বৈশাখ মাসে ভারতী ও বালক পত্রিকায় দুটি গান প্রকাশ হয়। গান দুটির পাদটীকা উল্লেখ করা হয়েছে-'এই দুটি গান ডাক্তার প্রসন্নকুমার রায় কর্ত্তৃক আহুত কালেজের ছাত্র সম্মিলন উপলক্ষে গীত হয়।' ধারণা করা হয়, গান দুটি তিনি চৈত্র মাসের শেষে বা বৈশাখ মাসের প্রারম্ভে রচনা করেছিলেন। এই বিচারে গান দুটি রচনার সময় তাঁর বয়স ছিল ২৫ বৎসর ১২ মাস। গান দুটি হলো

    আগে চল্, আগে চল্ ভাই
    তবু পারিনে সঁপিতে প্রাণ

এই বৎসরের বৈশাখ মাসে একটি কবিতা রচনা করেন। এর শিরোনাম ভুলে। এই কবিতাটি রবীন্দ্রনাথের মানসী নামক কাব্যগ্রন্থে ভুল-ভাঙা শিরোনামে গৃহীত হয়েছে।
        ভুলে। কে আমারে যেন এনেছে ডাকিয়া।
             [মানসী, রবীন্দ্ররচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড, বিশ্বভারতী। শ্রাবণ ১৩৯১। পৃষ্ঠা : ১১৯-১২১]

এই কবিতাটির ১, ৩, ৪ ও ৫ সংখ্যক স্তবকে সুরারোপ করেন। বর্তমানে গীতবিতানে গানটি পাওয়া যায়।
গানটি হলো-
    কে আমারে যেন এনেছে ডাকিয়া।

এই বৎসরে বৈশাখ সংখ্যায় রবীন্দ্রনাথের একটি গান (ভূপালী-একাতাল) কল্পনা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। বর্তমান গীতবিতানে গানটি পাওয়া যায় না। রবীন্দ্রনাথের মানসী নামক কাব্যগ্রন্থে ভুল-ভাঙা শিরোনামে গানটি কবিতা হিসাবে গৃহীত হয়েছে। গানটি হলো-
    বুঝেছি আমার নিশার স্বপন হয়েছে ভোর।
        [মানসী, রবীন্দ্ররচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড, বিশ্বভারতী। শ্রাবণ ১৩৯১। পৃষ্ঠা : ১২১-১২৩]