বরুণ
বানান বিশ্লেষণ:
ব্ +অ+র্+উ+ণ্+অ।
উচ্চারণ:
bo.run
(বো.রুন্)
শব্দ-উৎস:
সংস্কৃত
বরুণঃ >
বাংলা
বরুণ।
রূপতাত্ত্বিক
বিশ্লেষণ: √
বৃ
( আবরিত করা )+উন্
(উনন্),
কর্মবাচ্য
পদ :
বিশেষ্য
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা {হিন্দু
দেবতা |
হিন্দু
দৈবসত্তা |
দৈবসত্তা |
অতিপ্রাকৃতিক সত্তা |
অতিপ্রাকৃতিক বিশ্বাস |
বিশ্বাস |
প্রজ্ঞা |
জ্ঞান |
অভিজ্ঞা |
মনস্তাত্ত্বিক ঘটনা |
বিমূর্তন
|
বিমূর্ত সত্তা |
সত্তা | }
১.১.
হিন্দু বৈদিক দেবতা।
রাতের আকাশকে আবৃত করে রাখা দেবতাকে আর্যরা 'বরুণ' নামে পূজা করতো।
উল্লেখ্য বরুণ অর্থ আবৃত ।
আ র্যরা
আকাশকে একটি বিশাল সমুদ্র হিসাবে বিবেচনা করতেন ।
আ বার
আকাশ ও সমুদ্রের মিলনস্থানকে বরুণের অবস্থান হিসাবে বিবেচনা করতেন ।
গ্রিক পৌরাণিক কাহিনিতে
আকাশব্যাপী অন্ধকারময় বিশাল
সত্তা
ছিলেন
ইউরেনাস ।
আর্যদের বরুণ ছিল তেমনি। আকাশ জলীয় সত্তা হিসেবে বিশ্বাস করার সূত্রে- আর্যদের কাছে
বরুণ সমুদ্র বা জলের দেবতা হিসেবে পূজ্য হয়ে উঠেছিলেন।
ইরানীয় আর্যরা এই দেবতাকে বরণ হিসেবে পূজা করতেন।
বেদে বরুণকে সহস্রলোচন নামে চিহ্নিত করা হয়েছে ।
বেদে আলোর দেবতা মিত্র ও জলের দেবতা বরুণ একত্রে মিত্রাবরুণ নামে পূজিত হতে দেখা
যায় ।
একেও যমের মত পাপপূণ্যের বিচারক হিসাবে বিবেচনা করা হত ।
বরুণের ক্ষেত্র থেকে সূর্যের উদয় হয় বলে- সূর্যকে বরুণের চক্ষু বিবেচনা করা হত ।
এর গায়ের রঙ ছিল জলবিন্দুর মতো সাদা এবং গৌর মৃগের মত বলবান ।
১.২. কালক্রমে আর্যরা একে
আদিত্যে
দের
স্থানে বসিয়েছিলেন।
ঋগ্বেদ এর মতে
আদিত্যদের
একজন।
ঋগ্বেদের
২য় মণ্ডলের ২৭ সূক্তে ছয়জন আদিত্যের নাম পাওয়া যায়। এঁরা হলেন
মিত্র,
অর্যমা,
ভগ, বরুণ,
দক্ষ এবং
অংশ
কশ্যপ
-এর ঔরসে
অদিতি'র গর্ভে এঁর জন্ম হয়েছিল ।
দ্বাদশমূর্তি রূপে সূর্য দ্বাদশ
আদিত্য-এ
বিভাজিত
।
১.৩.
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে ―
ইনি লোকপাল,
দশদিকের
অধিকর্তা ও জলের দেবতা ।
ইনি বারুণী নামে সমুদ্র থেকে উত্থিত সুরা পান করতেন ।
মহাভারতের মতে ―
ইনি কর্দম ঋষির পুত্র ।
জলের দেবতা
হিসাবে ইনি অব্জিদেব ,
অম্বুপ ,
অম্বুপতি ,
অম্ভঃপতি
ও
অর্ণবমন্দির নামে
পরিচিত। পক্ষান্তরে
অদিতির পুত্র
হিসাবে ― ইনি অদিতিজ ,
অদিতিতনয় ,
অদিতিনন্দন ,
অদিতিপুত্র
অদিতিসূত
নামে অভিহিত হয়ে থাকেন।
কথিত আছে একই
সময় মিত্র ও বরুণ
ঊর্বশী
কে দেখে কামনায় অধীর হয়ে একটি কুণ্ডে বীর্যপাত করেন।
এই কুণ্ড থেকে প্রথমে
অগস্ত্য ও পরে
বশিষ্ঠ মুনির জন্ম হয়।
খাণ্ডববন দহনের সময় বরুণ
অর্জুনকে চন্দ্র প্রদত্ত গাণ্ডীব ধনু,
দুটি
অক্ষয় তূণীর ও কপিধ্বজ রথ দান করেন ।
একই সময় ইনি কৃষ্ণকে একটি চক্র ও কৌমদকী নামক গদা উপহার হিসাবে প্রদান করেন ।
বরুণ চন্দ্রের কন্যা ও উতথ্যের স্ত্রী ভদ্রাকে হরণ করেন ।
বিশেষভাবে অনুরোধ করার পরও ভদ্রাকে ফিরিয়ে না দেওয়াতে উতথ্য সমুদ্রের সমস্ত পানি
পান করা শুরু করেন ।
ফলে বরুণ অত্যন্ত ভীত হয়ে,
ভদ্রাকে উতথ্যের
কাছে ফিরিয়ে দেন।