|
আর্থ্রোপোডা
Arthropoda
প্রাণিজগতের একটি অমেরুদণ্ডী পর্ব।
গ্রিক
arthro (যুক্ত)
এবং pods
(পদ)
শব্দ থেকে Arthropoda
শব্দটি গৃহীত হয়েছে। মূলত এদের
দেহকাণ্ড থেকে জোড়া জোড়া পা নির্গত হয়ে থাকে। এই কারণে একে জোড়াপদী বা আর্থ্রোপোডা
নামে অভিহিত করা হয়েছে। ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দে এর নামকরণ করেছিলেন বিজ্ঞানী
Lar।
বাইরের
আঘাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এদের দেহের বাইরে খোলস থাকে। একে বলা হয় বহিঃকঙ্কাল।
দেহকাণ্ড খণ্ডিত অবস্থায় দেখা যায়। দেহখণ্ডের সন্ধিস্থলে দেহের উভয় পার্শ্বে পা
যুক্ত থাকে। ফলে সন্ধীপদী প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই পর্বের অন্তর্গত
প্রাণীগুলির দেহ দ্বিপার্শ্বীয়ভাবে প্রতিসম।
দেহের বৈশিষ্ট্য
কাইটিন নামক আবরণ দ্বারা দেহ আবৃত থাকে। সম্পূর্ণ জীবনকালে এদের বাইরের এই খোলস পরিত্যক্ত করে এবং নতুন খোলস তৈরি হয়।
এদের দেহের দেহখণ্ড বাহ্যিকভাবে খণ্ডিত অবস্থায় দেখা যায়।
এদের দেহে হিমোসিল নামক প্রকৃত সিলোম বা গহ্বর আছে। এর ভিতরে যে তরল পদার্থ থাকে তা রক্তের কাজ করে।
এদের সম্পূর্ণ পৌষ্টিকতন্ত্র রয়েছে। এই তন্ত্র মুখছিদ্র থেকে পায়ুছিদ্র পর্যন্ত বিস্তৃত।
দেহের পৃষ্ঠদেশে হৃৎপিণ্ড রয়েছে এবং রক্ত সংবহনতন্ত্র রয়েছে।
এদের দেহে বুক গিল (book gill), বুক লাঙ (book lung) বা শ্বাসনালী ইত্যাদি শ্বসন অঙ্গের কাজ করে।
ম্যালপিজিয়ান নালিকা, সবুজ গ্রন্থি, কক্সাল গ্রন্থি ইত্যাদি রেচন অঙ্গের কাজ করে।
এদের স্নায়ুতন্ত্র- মস্তিষ্ক ও একজোড়া নিরেট স্নায়ুরজ্জু, বক্ষ ও উদর গ্যাংগ্লিয়া নিয়ে গঠিত হয়।
প্রজাতিভেদে এদের মাথার দুই পাশে পুঞ্জাক্ষি বা সরলাক্ষী হয়ে থাকে।
ক্রমবিবর্তনের ধারা
ক্যাম্ব্রিয়ান অধিযুগের
৫৪
কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে
প্যানার্থ্রোপোডা
থাকের আদিম প্রজাতিগুলোর দেহে ভূমিতে চলার উপযোগী পায়ের উদ্ভব হয়েছিল। এই সূত্রে ভূমিতে
হেঁটে চলাচলের উপযোগী প্রজাতিসমূহের বিকাশ ঘটেছিল। ৫৪-৫০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে
এই থাকটি তিনটি ভাগে বিভাজিত হয়ে গিয়েছিল। এই ভাগগুলো হলো-
ট্যাক্টোপোডা
থাক,
ওনিকোফোরা পর্ব ও
লোবোপোডিয়া পর্ব।
এর ভিতরে ট্যাক্টোপোডা থাকের
উদ্ভব হয়েছিল ৫৪-৫৩
কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে। এই সময়ে
ট্যাক্টোপোডা
থাকটি ২টি
দুটি পর্বে বিভাজিত হয়েছিল। এই পর্ব দুটি হলো-টার্ডিগ্রাডা
পর্ব
এবং
আর্থ্রোপোডা।
পরবর্তী ৫৩ থেকে ৪১.৯২ কোটি
খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে
আর্থ্রোপোডা পর্বটি কয়েকটি
উপপর্বে বিভাজিত হয়ে গিয়েছিল। এই উপপর্বগুলো হলো-
ট্রাইলোবিটোমোর্ফা উপপর্ব,
আর্কোনোমোর্ফা
উপপর্ব,
চেলিসেরাটা উপপর্ব্ব,
প্যানক্রুস্টাসিয়া
থাক ও
মাইরিয়াপোডা
উপপর্ব।
সূত্র: