প্লেইস্টোসিন
অন্তঃযুগের প্রথম আমল। এই আমলের শুরু হয়েছিল ২৫ লক্ষ ৮০ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে
এবং শেষ হয়েছিল ১৮ লক্ষ ৬ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে। ইতালির দক্ষিণ সিসিলির গেলা শহরের
নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছ।
এই আমলের
২৫.৮ লক্ষ
খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে,
'কোয়াটার্নারি
বরফযুগ' শুরু হয়েছিল।
প্রাথমিক পর্যায়ে এই বরফযুগের
প্রভাবে উত্তর গোলার্ধের মেরু সংলগ্ন এলাকার জলস্থল বরফ ঢেকে গিয়েছিল।
এই আমলের ২০.৬ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের
পরে বেশকিছু
হিমযুগ
ও আন্তঃ হিমযুগ সংঘটিত হয়েছিল।
এই আমলের
শেষভাগে অর্থাৎ খ্রিষ্টপূর্ব ১৮ লক্ষ ৬ হাজার অব্দের ভিতরে বরফের আগ্রাসন বিষুব অঞ্চল
পর্যন্ত পৌঁছেছিল। এর ফলে এই সময়ে উত্তর মহাসাগর বিশাল
বরফ-প্রান্তরে পরিণত হয়। এর ফলে
এই সময়ে উত্তর মহাসাগর বিশাল বরফ-প্রান্তরে পরিণত হয়। পরবর্তী
ক্যালাব্রিয়ান আমলের
শেষে অর্থাৎ ৭ লক্ষ ৮১ হাজার অব্দের
ভিতরে শৈত-প্রবাহের সূত্রে এ্যান্টার্ক্টিকা মহাদেশে এবং
গ্রিনল্যান্ডে পুরু বরফস্তরের সৃষ্টি হয়েছিল। উল্লেখ্য এখনো এই বরফস্তর বিদ্যমান
আছে। আয়োনিয়ান
আমলে (৭.৮১- ১.২৬ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ) ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা
এবং সমগ্র সাইবেরিয়া অঞ্চলে ব্যাপক শৈত প্রবাহ বিদ্যমান ছিল। এই অবস্থাকে
কোয়াটার্নারি বরফযুগের প্রথম ধাপ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
বরফযুগের বিবর্তিত উল্লেখযোগ্য প্রজাতিসমূহ
ম্যামোথ:
বরফযুগের প্রভাবে
অভিযোজন প্রক্রিয়া
এলিফ্যান্টিডি
গোত্রের হাতি জাতীয় প্রজাতির
দেহে ঘন
এবং দীর্ঘ লোমের আবির্ভাব ঘটেছিল। এই সূত্রে সৃষ্টি হয়েছিল লোমশ হাতি বা ম্যামোথ।
ম্যামোথরা
ইউরোপ এবং মধ্য
এশিয়ায় বাস করতো।
প্রথম দিকে এরা বাস করতো হাল্কা জঙ্গলে। সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে, এদের একটি অংশ
ইউরেশিয়ার তৃণাঞ্চলে চলে এসেছিল। এদের ভিতরে এই
আমলের শুরু দিকে আবির্ভুত হয়েছিল
কলাম্বিয়ান ম্যামোথ (Mammuthus
columbi)
। আর
৭-৪ লক্ষ
খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে উদ্ভব হয়েছিল
Mammuthus primigenius
নামক লোমোশ ম্যামোথ।
গণ্ডার:
রাইনোইসেরোটিডায়ি
নামক গোত্রের উদ্ভব হয়েছিল
ইয়োসিন অন্তঃযুগে
(৫.৬-৩.৩৯ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)। এই গোত্র থেকে পরবর্তী
সময়ে গণ্ডার জাতীয় প্রাণীর বিভিন্ন গণের উদ্ভব হয়েছিল।
উল্লেখ্য এই গণের আদিম গণ
Dicerorhinus-এর আবির্ভাব
হয়েছিল
৫৩.৩৩-২৫.৮
লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে।
এই গোত্রের আদি প্রজাতি
(Coelodonta thibetana
বা
Coelodonta tologoijensis)
৩৭
লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে। এদের সাধারণ নাম
লোমশ গণ্ডার। এই গোত্রের যে সকল প্রজাতি এই আমলে উদ্ভব
হয়েছিল, সেগুলো হলো-
অবশিষ্ট যে সকল গণের আবির্ভাব এই আমলে হয়েছিল, সেগুলো হলো-
হোমো হ্যাবিলিসদের
ক্রমবিকাশ
KNF ER 1470
১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের অগাষ্ট মাসে,কেনিয়ার তুর্কানা ভূ-অঞ্চলের কুবি ফোরা থেকে বার্নাড এনজেনেও
(Bernard Ngeneo)
এই প্রজাতির জীবাশ্ম আবিষ্কার করেন। এর নমুনা সংখ্যা
KNM ER 1470
।
আগের আমলের ২৬ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকেপূর্ব আফ্রিকায়
হোমো হ্যাবিলিস
নামক প্রজাতির আবির্ভাব ঘটেছিল। এদের হাতে পত্তন ঘটেছিল
ওল্ডুভিয়ান সভ্যতার। এরা নিম্ন প্রস্তরযুগের পাথুরে
অস্ত্র-শস্ত্র ব্যবহারে অভ্যস্থ হয়ে উঠেছিল। খ্রিষ্টপূর্ব ১৭ লক্ষ অব্দ পর্যন্ত এরা
এই ধারাকে বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছিল। বন্যপ্রাণীর ভিতরে এদের প্রধান শত্রু ছিল
সেকালের শিকারী
হায়না
(Chasmaporthetes nitidula), লেপার্ড, সাবার-টুথ, কুমির।
এদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এরা
তাদের অস্ত্রগুলোকে উন্নতর করেছিল।
হোমো ইরেক্টাসদের
(Homo erectus)
'কোয়াটার্নারি বরফযুগ'
২৫.৮ থেকে ২০ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে আফ্রিকার পরিবেশ শীতল দশায় পৌঁছেছিল।
এই পরিবেশে
হোমো হ্যাবিলিস এবং
হোমো ইরেক্টাসদের
ঊর্ধতন কোনো সাধারণ প্রজাতি অভিযোজনের সূত্রে ২০ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে
হোমো
ইরেক্টাস
স্বতন্ত্র প্রজাতি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। ৫০ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে এদের
এর সকল উপপ্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
হোমো
গণের এই প্রজাতি প্রথম দুই পায়ে ভর করে মাটির উপর সটান দাঁড়াতে
সক্ষম হয়ে উঠেছিল। এছাড়া এরা
সৃজনশীল ক্ষমতার দ্বারা নিজের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে নিজেদের প্রয়োজনীয় জীবনধারণের উপকরণ প্রকৃতি থেকে
সংগ্রহ করতে পারতো এবং উপাদনসমূহ থেকে নানাবিধ উপকরণ
তৈরি করতে পারতো। তবে সৃজনশীল
ক্ষমতার বিচারে এরা আধুনিক মানুষের সমকক্ষ ছিল না।
এরা দুই পায়ে ভর করে মাটিতে চলাফেরা করতে
পারতো। এছাড়া গাছে গাছে দোল খেয়ে চলার মতও ক্ষমতা ছিল। মানুষের মতই এদের উচ্চতার হেরফের ছিল।
এদের মস্তিষ্ক
অস্ট্রালোপিথেকাসদের চেয়ে বড় ছিল। সটান মাটির উপর দাঁড়াতে বা চলাফেরা করার বিশেষ গুণের কারণে এরা চলাফেরায়
স্বচ্ছন্দ গতি পেয়েছিল। এই বিশেষ গুণের কারণেই এরা হাতে, মাথায় ভারি বস্তু বহন করতে সক্ষম হয়েছিল।
এছাড়া মস্তিষ্কের ও দেহের কাঠামোগত পরিবর্তনের দিক দিয়ে এরা অনেকটাই আধুনিক মানুষের মতো হয়ে উঠেছিল।
হোমো হ্যাবিলিস মতোও নিম্নপ্রস্তর-যুগ বিকাশে এরা ভূমিকা
রেখেছিল। প্রায় ১৭ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে এই প্রজাতিটিই
আফ্রিকার বিভিন্ন
অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল। এদের একটি শাখা ইউরেশিয়ায় প্রবেশ করে। পরে এই শাখাটি
বিভাজিত হয়ে একটি শাখা ইউরোপের ককেশাশ অঞ্চলে থেকে যায়। অবশিষ্ট অংশের একটি দল
প্রথমে চীনে প্রবেশ করে। পরে এর একটি দল ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপাঞ্চলে চলে
যায়। বিশাল অঞ্চল জুড়ে এই প্রজাতিটি ছড়িয়ে পড়ার কারণে, বিভিন্ন স্থানে এই
প্রজাতিটির বিবর্তিত হয়েছিল ভিন্ন ভিন্ন ধারায়। এসকল প্রজাতির জীবাশ্মগুলোকে
বিভিন্ন সময়ে নানা ভাবে এবং নানা নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেমন-
জাভা মানব,
সোলো মানব,
পিকিং মানব
ইত্যাদি।
হোমো রুডোলফেনসিস (Homo rudolfensis)
প্রায় ২৪ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে আবির্ভূত হয়েছিল এবং ১৯ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে এরা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
এরা পূর্ব আফ্রিকার কেনিয়ার উত্তরাঞ্চলে বসবাস করতো। সম্ভবত এর বাইরে তাঞ্জানিয়া এবং মালউই-এর উত্তরাঞ্চল পর্যন্ত
ছড়িয়ে পড়েছিল।
১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে রিচার্ড লিকির নেতৃত্বে পরিচালিত একটি দল
কেনিয়ার তুর্কানা ভূ-অঞ্চলের রুডলফ হ্রদের তীরে এই প্রজাতির নতুন জীবাশ্ম পান। রুশ বিজ্ঞানী
(V. P. Alexeev)
এই প্রজাতির নামকরণ করেছিলেন
Pithecanthropus rudolfensis
।
পরে এর গণের নাম পাল্টে রাখা হয় ।
ফলে এর বর্তমানে এই প্রজাতিটির নাম রাখা হয়েছে
Homo rudolfensis
।
হোমো এর্গাস্টার
(Homo ergaster)
:
প্রায় ১৯ লক্ষ বৎসর পূর্বে এদের উদ্ভব হয়েছিল দক্ষিণ এবং পূর্ব আফ্রিকাতে এবং
এই প্রজাতি প্রায় ১৪ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে এরা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে।
১৯৭১
খ্রিষ্টাব্দে কেনিয়ার কুবি ফোরা অঞ্চলে এর চোয়ালের জীবাশ্ম আবিষ্কার করেন রিচার্ড
লিকি
(Richard Leakey)।
১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে
Colin Groves
এবং
Vratislav Mazák
একে একটি পৃথক প্রজাতি হিসাবে গণ্য করার প্রস্তাব রাখেন। গ্রিক
ergaster
অর্থ শ্রমিক।
এদের জীবাশ্মের কাছে কিছু পাথুরের যন্ত্রের সন্ধান পাওয়া যাওয়ার কারণে,
কর্মঠ মানুষ অর্থে
এই নামের প্রস্তাব করা হয়েছিল।
KNM ER3733 |
১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে কেনিয়ার কুবি ফোরা অঞ্চলে এর জীবাশ্ম
আবিষ্কার করেন বার্নাড এনজেনেও। এর নমুনা সংখ্যা
KNM ER 3733।
এর বয়স নিরূপণ করা হয়েছে ১৭ লক্ষ ৫০ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। ধারণা করা হয়,
এটি একটি পরিণত
নারীর খুলি।
১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে কেনিয়ার কুবি ফোরা অঞ্চলে এর অপর একটি জীবাশ্ম আবিষ্কার করেন রিচার্ড লিকি
(Richard Leakey)।
এর নমুনা সংখ্যা
3883 এর বয়স নিরূপণ করা হয়েছে ১৫ লক্ষ
খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।
প্রথম দিকে একে
হোমো ইরেক্টাস-এর
খুলি মনে করা হয়েছিল। কিন্তু পরে এই ধারণা বাতিল করে হোমো এর্গাস্টার-এর
খুলি হিসাবেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
১৯৮৪
খ্রিষ্টাব্দের ২২শে অগাস্ট কেনিয়ার পশ্চিম
তুর্কানা
(West Turkana)
অঞ্চল থেকে বিজ্ঞানী কামোয়া কিমেউ
(Kamoya Kimeu)
একটি প্রায় পূর্ণাঙ্গ জীবাশ্ম আবিষ্কার করেন। এর নমুনা সংখ্যা
Homo ergaster 15000
।
এর বয়স নিরূপণ করা হয়েছে ১৬ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। এটি ছিল একটি ৯-১২ বৎসরের একটি বালকের
কঙ্কাল। এর বাম উরু ও হাতের উর্ধাংশের অস্থি ছিল না। এই অপরিণত বালকের কঙ্কালের
আকার ছিল আধুনিক শিম্পাঞ্জির মতো। এর মৃত্যুর সময় উচ্চতা ছিল মাত্র ৫ ফুট।
ধারণা করা হয় পরিণত বয়সে এর উচ্চতা প্রায় ৬ ফুট পরিমিত হতো।
এরা মাটির উপর দুই পায়ে সটান দাঁড়াতে পারতো। তাই প্রথম দিকে কোনো কোনো বিজ্ঞানী একে
হোমো ইরেক্টাস-এর
উপ-প্রজাতি হিসাবে বিবেচনা করেছিলেন। বর্তমানে একে একটি পৃথক প্রজাতি হিসাবেই
স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। হোমো গণের আগের প্রজাতিগুলো অপেক্ষা এদের বুদ্ধি ছিল
বেশি। এদের মাথার খুলির মাপ ছিল ৭০০-৮৫০ সিসি।
মস্তিষ্কের সম্মুখভাগে ছিল ছোটো চক্ষু-গহ্বর। এই গহ্বরের উপরে ছিল বাঁকানো
ভ্রূ-রেখা।
ধারণা করা হয় এদের গড় উচ্চতা ছিল ১.৯ মিটার।
তুলনামূলকভাবে এদের পা দেহের উপরের অংশের চেয়ে বড় ছিল।
এদের নিতম্বের হাড়ের গড়ন দেখে মনে হয়- এরা দীর্ঘপথ
হাঁটতে বা দৌড়াতে পারতো। এদের হাতের ও পায়ের গড়ন ছিল আধুনিক মানুষের মতো।
আত্মরক্ষা এবং শিকারের জন্য এরা পাথুরে কুঠার ব্যবহার করতো। কারো কারো মতে
এরা আগুন ব্যবহার করতেও শিখেছিল। এই কারণে,
এদেরকে সরাসরি মানুষের পূর্ব-পুরুষ হিসাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকেন।
এছাড়া কথা বলার উপযোগী স্বরতন্ত্র
এবং বাগ্-প্রত্যঙ্গের বিকাশ
হয়েছিল। এরা শিকারের জন্য নিক্ষেপণযোগ্য বর্শা ব্যবহার করতো।
মূলত এদের সাথে
হোমো ইরেক্টাসের
অনেক মিল থাকলেও- ধারণা করা এরা পূর্ববর্তী কোনো অজ্ঞাত প্রজাতি থেকে বিবর্তিত হয়ে আত্মপ্রকাশ
করেছিল। আদিতে এরা আফ্রিকার কেনিয়া অঞ্চলে বসবাস করতো। পরে এদের দু একটি দল- মিশর
পেরিয়ে এশিয়া অঞ্চলে প্রবেশ করেছিল।
প্রায় ২৬ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে পাথরকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার আদিম কৌশল উদ্ভাবিত হয়েছিল
প্রক্রিয়া রপ্ত করেছিল
হোমো
হ্যাবিলিসরা।
ওল্ডুভিয়ান সভ্যতার বিচারে
এদের সৃষ্ট যন্ত্রপাতি 'ওল্ডুয়ান' নামে পরিচিত। সম্ভবত এরই ধারাবাহিকতায় হোমো এর্গাস্টারা পাথুরে অস্ত্রপাতির উন্নতি করেছিল,
নিজেদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে। এদের তৈরি করা হাতিয়ার আকার ছিল অনেকটা নাসপাতির মতো। বিজ্ঞানীরা এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যর
হাতিয়ারের নামকরণ করেছেন 'আশুলিয়ান হাতিয়ার বা
আশুলিয়ান যন্ত্রপাতি। তবে এই ক্রমবিবর্তন ঘটেছিল পরবর্তী
ক্যালাব্রিয়ান
আমলে
(১৮.৬-৭.৮১ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)।
হোমো গটেনজেনসিস (Homo gautengensis
)
হোমো
গণের প্রজাতি। প্রায় ১৯ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে পূর্ব ও দক্ষিণ আফ্রিকাতে আবিরর্ভূত হয়েছিল এবং ৬
লক্ষ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে এরা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
২০১০ খ্রিষ্টাব্দে
Dr Darren Curnoe
-এর নামককরণ করেন হোমো গটেনজেনসিস। বর্তমানে হোমো গণের আদি প্রজাতি হিসাবে
হোমো গটেনজেনসিস-কে
স্বীকৃতি দেন। উল্লেখ্য এই জীবাশ্মটি দক্ষিণ
আফ্রিকার জোহানসবার্গের নিকটবর্তী স্টের্কফন্টেইন গুহায় পাওয়া গিয়েছিল। এটি ছিল
মাথার খুলির অংশবিশেষ।
এছাড়া
ছিল কিছু চোয়ালের টুকরো, দাঁত এবং কিছু অস্থি।
উদ্ভিদজাত খাদ্য খাওয়ার
উপযোগী বেশ বড় বড় দাঁত ছিল। আধুনিক মানুষের চেয়ে এদের খুলি ছিল বেশ ছোট।
ধারণা করা হয়- এরা হাতিয়ার হিসাবে পাথর ব্যবহার করতে পারতো এবং আগুন ব্যবহার করতে
শিখেছিল। এদের দৈর্ঘ্য ছিল ৩ ফুট এবং ওজন ছিল ১১০ পাউন্ড (৫০ কিলোগ্রাম)। এরা মাটিতে দুই
পায়ে হাঁটতো, তবে অধিকাংশ সময় এরা গাছে বসবাস করতো।
এই অন্তঃযুগের শেষে শুরু হয়েছিল ক্যালাব্রিয়ান আমল।
সূত্র: