|
বিলুপ্ত ম্যামুথুস (Mammuthus), গণের অন্তর্গত বিলুপ্ত প্রজাতিসমূহের সাধারণ নাম ম্যামোথ।
উল্লেখ্য, ১৮২৮
খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ প্রাণী বিজ্ঞানী জোশুয়া ব্রুক্স
(Joshua Brookes) এই ম্যামুথুস গণটির নামকরণ
করেছিলেন।
ম্যামোথকে
সাধারণভাবে বুঝানো হয়ে থাকে- লোমযুক্ত 'লোমশ হাতি' হিসেবে।
প্রকৃতপক্ষে সাইবেরিয়ান এবং উত্তর আমেরিকার ছাড়া অঞ্চলের ম্যামোথ ম্যামোথ ছাড়া অন্য
ম্যমোথ গায়ে লোমশ ছিল না।
এদের
সাধারণ দৈহিক রূপ বর্ণনায় বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়- লম্বা এবং বাঁকানো গজদন্ত
এবং শরীরের লম্বা ও ঘণ পশম।
দেহকাণ্ড, পা, লেজ ইত্যাদির দিক থেকে ম্যামোথের সাথে বর্তমানকালের
হাতির
খুব একটা পার্থক্য নেই।
১৭৯৯ খ্রিষ্টাব্দে জার্মান বিজ্ঞানী জোহন ফ্রেড্রিখ ব্লুমেনব্যাক প্রথম ম্যামোথ
সম্পর্কে আলোকপাত করেন। ইউরোপে প্রাপ্ত তখন তিনি এর নাম দিয়েছিলেন
Elephas primigenius।
পরে অবশ্য একে ম্যামুথুস গণের অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন।
ক্রমবিবর্তনের ধারায় ম্যামোথ
ট্রায়াসিক অধিযুগেরর ২২ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দে
স্তন্যপায়ী
শ্রেণির
থেরিফর্ম্স্
উপশ্রেণির
প্রাণিকুল থেকে হোলোথেরিয়া
থাকের উদ্ভব হয়েছিল।
এরপর এই থাক থেকে
২১.৬৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দে উৎপন্ন হয়েছিল
ট্রেকনোথেরিয়া
থাক।
১৬.৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এই থাক থেকে উৎপন্ন হয়েছিল
ক্ল্যাডোথেরিয়া
থাকের
প্রাণিকুল। একই সময়ে
ক্ল্যাডোথেরিয়া থাকের আদি প্রাণিকুল থেকে উদ্ভব হয়েছিল
জাথেরিয়া
থাক ও
ড্রাইয়োলেসটোইডিয়া ঊর্ধবর্গের প্রাণিকুল। এই
জাথেরিয়া
থাক থেকে ১৬ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দে
(জুরাসিক
অধিযুগ) উৎপন্ন হয়েছিল
থেরিয়া থাকের প্রাণিকুল।
প্রায় একই সময়ে
থেরিয়া
থাক থেকে উদ্ভব হয়েছিল ইউথেরিয়া থাকের
প্রাণিকুল। এই থাকের সর্ব প্রাচীন নমুনা স্তন্যপায়ী পাওয়া গেছে চীনে। এই প্রাণীটি এই
থাকের
জুরামিয়া গণের একটি প্রজাতি। এর বৈজ্ঞানিক নাম-
Juramaia sinensis।
ইউথেরিয়া থাক থেকে
প্যালেয়োসিন যুগে (৬.৬-৫.৬
কোটি
খ্রিষ্টপূর্বাব্দ) শুরুর দিকে অমরাযুক্ত
(Placentalia)
স্তন্যপায়ী প্রাণির আবির্ভাব ঘটে। জীববিজ্ঞানীরা এই জাতীয় স্তন্যপায়ীদের
প্লাসেন্টালিয়া
ক্ষুদ্রশ্রেণি হিসেবে অভিহিত করেছেন। এই ক্ষুদ্রশ্রেণি
৬.৬-৬.৫
কোটি
খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে দুটি বিভাজিত হয়ে যায়। এই ভাগ দুটি হলো-
আট্লান্টোজেনাটা ও বোরেয়োইউথেরিয়া।
৬.৫ কোটি খ্রিষ্টাব্দের দিকে আট্লান্টোজেনাটা থাকের
মূল ধারা থেকে
আফ্রোথেরিয়া
ঊর্ধবর্গের প্রজাতিসমূহের উদ্ভব হয়। অবশিষ্ট প্রজাতিগুলোকে জীববিজ্ঞানীরা
এক্সাফ্রোপ্লাসেন্টালিয়া নামে অভিহিত করে থাকেন।
আফ্রোথেরিয়া ঊর্ধবর্গের অধিকাংশের প্রজাতির প্রধান আবাস ছিল
আফ্রিকার মাদাগাস্কার অঞ্চল।
এদের অধিকাংশই আকারে ছোট ছিল। বেশিরভাগ প্রজাতি স্থলচর ছিল, তবে কিছু প্রজাতি জলচরও
ছিল। এদের দাঁত ছিল ক্ষুদ্রাকার, নাকের সম্মুখভাগ বর্ধিত ছিল। তবে কানের আকার
অপেক্ষাকৃত বড় ছিল। অন্যদিকে শরীরের তুলনায় চোখের আকার ছিল বেশ ছোট। এদের হাতে পায়ে
ছিল পাঁচটি আঙুল। এদের অধিকাংশ প্রজাতি পোকমাকড় খেতো। আবার কিছু প্রজাতি পোকামাকড়ের
পাশাপাশি লতাপাতাও খেতো।
প্রায় ৬ কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দের দিকে এই
ঊর্ধবর্গ দুটি থাকে ভাগ হয়ে যায়। এই থাক দুটি হলো-
আফ্রোইনসেক্টিফিলা ও
পিনুঙ্গুলাটা।
আবার ৬
কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে
মূল ধারার
টেথিথেরিয়া থাক থেকে
প্রোবোস্সিডিয়া বর্গের প্রজাতিসমূহের উদ্ভব
হয়েছিল। ক্রমবিবর্তনের ধারায় এই বর্গের প্রাণিকুলের নিচের দাঁত বর্ধিত হয়ে
গজদন্তে পরিণত হয়েছিল। এদের পা স্তম্ভের আকার ধারণ করেছিল। পায়ের পাতায় পাঁচটি
আঙুল থাকলেও পুরু গোলাকার পেশির দ্বারা প্যাডের সৃষ্টি করেছিল। এছাড়া নাসিকার
ক্রমবর্ধমান দশায় শুঁড় তৈরি হয়েছিল। খাদ্যের বিচারেও এরা পুরোপুরি তৃণভোজী হয়ে
উঠেছিল। এরাই ছিল বর্তমান কালের
হাতির আদিম-পুরুষ।
আদিকালের
প্রোবোস্সিডিয়া বর্গের সকল প্রজাতিই আফ্রিকায় বাস
করতো। ধারণা করা হয়
মিয়োসিন অন্তঃযুগ (২.৩০৩-৫.৩৩৩ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)-এর শেষের দিকে এরা
এশিয়া, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ছড়িয়ে পড়েছিল। কালের বিবর্তনে এই বর্গ থেকে উদ্ভব
হয়েছিল অন্যান্য প্রজাতি। এখন পর্যন্ত এদের যেসকল জ্ঞাতিগোষ্ঠীর পরিচয় পাওয়া
গেছে, সেগুলো হলো- এরিথেরিয়াম গণ, মোয়েরিথেরিডি গোত্র, প্লেইসিয়েলিফ্যান্টিফর্মস অধবর্গ
ও এলিফ্যান্টিফর্ম্স্ অধবর্গ। এলিফ্যান্টিফর্ম্স্ অধঃবর্গের
দুটি প্রজাতি বর্তমানে আফ্রিকা ও এশিয়াতে পাওয়া যায়। বাকি সকল সকল প্রজাতি বিলুপ্ত
হয়ে গেছে। এই অধিবর্গ যে সকল প্রাণিকুলের বিকাশ ঘটেছিল, সেগুলো হলো-
প্যালিয়োমাস্টোডোন্টিডি গোত্র,
ফিয়োমিয়া গোত্র, হেমিমাস্টোডোন্টিডি গোত্র
এবং এলিফ্যান্টিমোর্ফা।
ওলিগোসিন
অন্তঃযুগ (৩.৩৯-২.৩০৩ কোটি
খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)-এর শেষের দিকে
এলিফ্যান্টিফর্ম্স্
অধবর্গ থেকে উদ্ভব হয়েছিল এলিফ্যান্টিমোর্ফা থাকের
প্রাণীকুল। এই থাক থেকে ২.৮৪ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে মামুটিডা থাকের
প্রাণিকুল পৃথক হয়ে গিয়েছিল। এই বিশেষ থাকের প্রজাতিগুলো
প্রিবোরিয়াল আমল (১১,৭০০-৯০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)-এ বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে।
এলিফ্যান্টিফর্ম্স্
অধবর্গ থেকে ২.৩ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দে
এলিফ্যান্টিডা থাকের প্রজাতির উদ্ভব
হয়েছিল। আর এই থাক থেকে উদ্ভব হয়েছিল চারটি ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের প্রাণীকুল। এগুলো হলো-
কোয়েরোলোফোডোন্টিডি গোত্র,
এমেবেলোডোন্টিডি গোত্র, গোমোফোথেরিডি গোত্র এবং
এলিফ্যান্টোইডিয়া ঊর্ধ্ব-গোত্রের প্রাণিকুল। এর ভিতরে
এলিফ্যান্টোইডিয়া
ঊর্ধ্ব-গোত্রের প্রাণিকুল ছাড়া বাকি গোত্রের প্রজাতিসমূহ বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে।
এলিফ্যান্টোইডিয়া ঊর্ধ্ব-গোত্রের থেকে উদ্ভব হয়েছিল
তিনটি গোত্রের প্রাণিকুল। এগুলো হলো- এ্যানানসিডি গোত্র, স্টেগোডোন্টিডি গোত্র এবং
এলিফ্যান্টিডি গোত্র।
আবির্ভাবের সময়
প্লিয়োসিন অন্তঃযুগ
(৫৩.৩৩-২.৫৮ লক্ষ
খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)
এলিফ্যান্টিডি গোত্রের
প্রাণিকুলের প্রজাতিগুলো থেকে উদ্ভব হয়েছিল পাঁচটি গণের প্রজাতিসমূহ। এই পাঁচটি গণ
হলো- এলফাস, লোক্সোডোন্টা, প্যালিয়োক্সোডোন, পিরামেলেফাস এবং ম্যামুথুস।
উল্লেখ্য ম্যামুথুস গণের প্রজাতিকুল এশিয়ান
হাতি তথা এলফাস গণের নিকটজ্ঞাতি। [দেখুন: এলফাস, লোক্সোডোন্টা (হাতি)
]
প্লিয়োসিন অন্তঃযুগের
৫০
লক্ষ
খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে ম্যামুথুস গণের আবির্ভাব হয়েছিল
এবং খ্রিষ্টপূর্ব ৩ হাজার ৭ শত অব্দের দিকে এই গণের সকল প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
প্রজাতিসমূহের সাধারণ নাম ম্যামোথ। এদের বিচরণ ক্ষেত্রে ছিল- এশিয়া, আফ্রিকা এবং উত্তর
আমেরিকাতে। এখন পর্যন্ত এই গণের যে সকল প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে, তাদের
পরিচয় তুলে ধরা হলো-
M. subplanifrons |
Mammuthus creticus |
Mammuthus creticus:
এই
প্রজাতিটির জীবাশ্ম প্রথম পাওয়া গিয়েছিল ক্রিট দ্বীপে। মামুথুস গণের সবচেয়ে ছোট
আকারের প্রজাতি। এর আকার এবং প্রাপ্তি স্থানের বিচারে
এর সাধারণ
নাম দেওয়া হয়েছে ক্রেটান বামন ম্যামোথ (Cretan dwarf
mammoth)।
১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে এই প্রজাতিটির নামকরণ করেছিলেন বাতে।
কোয়াটার্নারি বরফযুগের প্রভাবে
প্লেইস্টোসিন অন্তঃযুগে ভূমধ্যসাগরের জলের উচ্চতা কমে গিয়েছিল
এবং সাগরের বুকে
ছোটো ছোট দ্বীপ জেগে উঠেছিল। সেই সাথে এসব দ্বীপের মধ্যে চলাচলের মতো পথও তৈরি হয়েছিল।
এই পথ ধরে এরা ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপাঞ্চলে
চলে এসেছিল। এই দ্বীপাঞ্চলে বসবাসকারী ম্যামোথগুলো থেকে উদ্ভব হয়েছিল
Mammuthus creticus
প্রজাতির ম্যামোথ।
ধারণা করা হয়,
প্রায় ৮ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে এদের আবর্ভাব হয়েছিল। যদিও এই সময় চলছিল
কোয়াটার্নারি বরফযুগ।
ক্যালাব্রিয়ান আমলের
শেষে অর্থাৎ
৭ লক্ষ ৮১ হাজার অব্দের ভিতরে শৈত-প্রবাহের সূত্রে এ্যান্টার্ক্টিকা
মহাদেশে এবং গ্রিনল্যান্ডে পুরু বরফস্তরের সৃষ্টি হয়েছিল। এই শীতল পরিবেশে তখনও
এদের শরীর লোমশ হয়ে উঠে নি। সম্ভবত প্রবল শৈত প্রবাহের সূত্রে এদের বিলুপ্তি
ঘটে। জীবাশ্ম অনুসরণে ধারণ করা হয়
এদের কাঁধের কাছে উচ্চতা ছিল ১ মিটার এবং ওজন ছিল
মাত্র ১৮০ কেজি। দীর্ঘ বাঁকানো গজদন্ত ছিল।
Mammuthus trogontherii |
প্লেইস্টোসিন অন্তঃযুগের
৬ লক্ষ
খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে এই ম্যামোথ একালের ইউরেশিয়া অঞ্চলে বসবাস করতো।
কোয়াটার্নারি বরফযুগের প্রভাবে সাইবেরিয়া অঞ্চলের
ম্যামোথের গায়ে ঘন লোমের সৃষ্টি হয়েছিল। এদের অধিকাংশ জীবাশ্ম পাওয়া গেছে
সাইবেরিয়াতে। ধারণা করা হয়,
৪ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে
পূর্ব এশিয়ায় এই ম্যামোথ থেকে উদ্ভব হয়েছিল লোমশ ম্যামোথ (Mammuthus primigenius)।
সম্ভবত ১ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে সাইবেরিয়া থেকে
বেরিং প্রণালী পার হয়ে, এদের একটি অংশ উত্তর আমেরিকায় পৌঁছেছিল।
এদের চোয়াল
Mammuthus meridionalis-এর
চেয়ে অপেক্ষাকৃত ছোট ছিল। এই প্রজাতির পুরষ ম্যামোথদের কাঁধের কাছে উচ্চতা ছিল
প্রায় ৪.৯ মিটার (১৬ ফুট)। স্ত্রী ম্যামোথদের উচ্চতা এর চেয়ে কিছুটা কম হতো।
তবে গজদন্ত পুরষ ম্যামোথের চেয়ে একটি বেশি বাঁকা হতো।
Mammuthus columbi |
১ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে সাইবেরিয়া অঞ্চলের (Mammuthus primigenius)
এবং স্টপে ম্যামোথ
(Mammuthus trogontherii)
একটি বড় অংশ বেরিং প্রণালী পার হয়ে উত্তর আমেরিকায় পৌঁছেছিল। ধারণা করা হয়,
স্টেপ ম্যামোথ ক্রমবিবর্তনের ধারায় কলম্বিয়ান ম্যামোথের উদ্ভব হয়েছিল।
এরা বাস করতো উত্তর আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের
দক্ষিণাঞ্চল থেকে মধ্য আমেরিকার কোস্টারিকা
পর্যন্ত বিশাল এলাকা জুড়ে। ১৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে
কোয়াটার্নারি বরফযুগের
অন্তিম দশায়, উত্তর আমেরিকা
বেশ উষ্ণ আবহাওয়ার সৃষ্টি হয়েছিল। এই সময় এদের দেহের ঘন লোম অনেকটা হাল্কা হয়ে
গিয়েছিল। ক্রমে ক্রমে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে,
হোলোসিন অন্তঃযুগের
১১ হাজার ৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে
বিলুপ্ত হয়ে যায়।
কাঁধের কাছে এদের উচ্চতা ছিল ১২-১৩ ফুট আর ওজন ছিল ১০ টন। এদের পৃষ্টদেশ
সামান্য ঢালু ছিল। মাথার উপরিভাগে একটি চূড়া ছিল। গজদন্ত দীর্ঘ বাঁকানো এবং এর অগ্রভাগ
ঊর্ধমুখী ছিল। এদের গজদন্ত প্রায় ১৬ ফুট লম্বা ছিল।
ম্যামোথদের প্রধান শত্রু ছিল। ইউরেশিয়ারে ম্যামোথদের প্রাকৃতিক প্রতিকুলতা ছাড়াও প্রধান শত্রু ছিল নিয়ানডার্থাল এবং মানুষ (হোমো স্যাপিয়েন্স)। উভয় প্রজাতিই দলবদ্ধভাবে এদের শিকার করতো মাংসের জন্য। এছাড়া এদের শীত নিবারণের জন্য লোম ব্যবহার করতো। এদের অস্থি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতো। বিশেষ করে এদের দাঁত মূলবান শক্ত পদার্থ হিসেবে নানা কাজে ব্যবহৃত হত। ৪০ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে হোমো নিয়ানডার্থালরা দীর্ঘ বাঁকানো দাঁত দিয়ে বাঁশি তৈরি করেছিল। ইউরোপের বিভিন্ন গুহাচিত্রে ম্যামোথদের উপস্থিতি রয়েছে। অর্থাৎ ম্যামোথরা সেকালের হোমো গণের সংস্কৃতির অংশ হয়ে গিয়েছিল।