|
৬.৫ কোটি খ্রিষ্টাব্দের দিকে আট্লান্টোজেনাটা থাকের
মূল ধারা থেকে
আফ্রোথেরিয়া
ঊর্ধবর্গের প্রজাতিসমূহের উদ্ভব হয়। অবশিষ্ট প্রজাতিগুলোকে জীববিজ্ঞানীরা
এক্সাফ্রোপ্লাসেন্টালিয়া নামে অভিহিত করে থাকেন।
আফ্রোথেরিয়া ঊর্ধবর্গের অধিকাংশের প্রজাতির প্রধান আবাস ছিল আফ্রিকার মাদাগস্কার অঞ্চল।
এদের অধিকাংশই আকারে ছোট ছিল। বেশিরভাগ প্রজাতি স্থলচর ছিল, তবে কিছু প্রজাতি জলচরও
ছিল। এদের দাঁত ছিল ক্ষুদ্রাকার, নাকের সম্মুখভাগ বর্ধিত ছিল। তবে কানের আকার
অপেক্ষাকৃত বড় ছিল। অন্যদিকে শরীরের তুলনায় চোখের আকার ছিল বেশ ছোট। এদের হাতে পায়ে
ছিল পাঁচটি আঙুল। এদের অধিকাংশ প্রজাতি পোকমাকড় খেতো। আবার কিছু প্রজাতি পোকামাকড়ের
পাশাপাশি লতাপাতাও খেতো।
প্রায় ৬ কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দের দিকে এই
ঊর্ধবর্গ দুটি থাকে ভাগ হয়ে যায়। এই থাক দুটি হলো-
আফ্রোইনসেক্টিফিলা ও
পিনুঙ্গুলাটা।
আবার ৬
কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে
টেথিথেরিয়া থাক থেকে
প্রোবোস্সিডিয়া বর্গের প্রজাতিসমূহের উদ্ভব
হয়েছিল। ক্রমবিবর্তনের ধারায় এই বর্গের প্রাণিকুলের নিচের দাঁত বর্ধিত হয়ে
গজদন্তে পরিণত হয়েছিল। এদের পা স্তম্ভের আকার ধারণ করেছিল। পায়ের পাতায় পাঁচটি
আঙুল থাকলেও পুরু গোলাকার পেশির দ্বারা প্যাডের সৃষ্টি করেছিল। এছাড়া নাসিকার
ক্রমবর্ধমান দশায় শুঁড় তৈরি হয়েছিল। খাদ্যের বিচারেও এরা পুরোপুরি তৃণভোজী হয়ে
উঠেছিল। এরাই ছিল বর্তমান কালের
হাতির আদিম-পুরুষ।
আদিকালের
প্রোবোস্সিডিয়া বর্গের সকল প্রজাতিই আফ্রিকায় বাস
করতো। ধারণা করা হয়
মিয়োসিন অন্তঃযুগ (২.৩০৩-৫.৩৩৩ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)-এর শেষের দিকে এরা
এশিয়া, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ছড়িয়ে পড়েছিল। কালের বিবর্তনে এই বর্গ থেকে উদ্ভব
হয়েছিল অন্যান্য প্রজাতি। এখন পর্যন্ত এদের যেসকল জ্ঞাতিগোষ্ঠীর পরিচয় পাওয়া
গেছে, সেগুলো হলো-
এলিফ্যান্টিফর্মস অধবর্গ
মিয়োসিন অন্তঃযুগ (২.৩০৩ কোটি-৫৩.৩৩ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)-এর শেষের দিকে এলিফ্যান্টিফর্মস অধবর্গের এই তিনটি ধারাই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এর বাইরে মূলধারায় থেকে গিয়েছিল এলিফ্যান্টিমোর্ফা থাকের প্রাণীকুল। এদের মিয়োসিন অন্তঃযুগের শেষের দিকে এদের উদ্ভব হয়েছিল। এরাই ছিল আধুনিক হাতির উত্তরপুরুষ।