স্বরান্ত ক্রিয়ামূল-ভিত্তিক গণ
স্বরান্ত ক্রিয়ামূল (
Vowel
Ended Verb Root)
-ভিত্তিক
গণের ক্রিয়ামূলের শেষে স্বরবর্ণ থাকবে। যেমন−
১.১. অ-অন্ত:
ক,
ন,
ব,
র,
ল,
স,
হ
১.২. আকারান্ত: খা, চা, ধা, পা, যা, করা, খাওয়া ইত্যাদি।
১.৩.
ইকারান্ত: দি, নি। এই সকল ক্রিয়ামূলের ই-কার
১.৪. উকারান্ত: ছুঁ, থু, ধু, দু, শু
এইসকল ক্রিয়ামূলের সাথে যখন ক্রিয়া-বিভক্তি
যুক্ত হয়, তখন কাল, পুরুষ এবং সাধু-চলিতের বিচারে কিছু বানান পার্থক্যের সৃষ্টি হয়।
যেমন- 'ল' ক্রিয়ামূলজাত শব্দের চলিত রীতি প্রচলিত নয়। অর্থাৎ
বাংলাতে, লচ্ছি, লচ্ছিলাম, লচ্ছেছি ইত্যাদি হয় না। কিন্তু সাধু রীতিতে-
লইতেছি, লইয়াছি ইত্যাদি হয়। আবার হ ধাতুজাত ক্রিয়াপদে দেখা যায় - এর সাধু ও চলিত
রূপের সকল ক্রিয়াপদ রয়েছে। এই সকল বিচারে যেভাবে উপরের তালিকার
বর্ধিত রূপ পাওয়া যাবে। নিচে স্বরান্ত ক্রিয়ামূলের গণ এবং গণের অন্তর্গত ক্রিয়াপদের
তালিকা দেওয়া হলো—
- অ-অন্ত:
ক,
ক্ষ্,
খ,
গ,
ন,
ব,
ম,
র,
ল,
স,
হ
- অসম্পূর্ণ: ক্রিয়াপদ নির্ধারক আদর্শ সারণী'র
সকল ঘর পূরণ করে না।
- ন-আদি গণ
(না-বোধক কিছু ক্রিয়াপদ তৈরি হয়): ন
- ল-আদি গণ (সাধুরূপ
পাওয়া যায়):
ল
-
ক-আদি গণ:
(সাধুরূপ হয় না) ক,
ব,
র,
স
- অসম্পূর্ণ-সম্পূরক:
এই জাতীয়
ক্রিয়ামূল
ক্রিয়াপদ নির্ধারক আদর্শ সারণী'র
সকল ঘর পূরণ করে না। কিন্তু অপূর্ণ ঘরগুলো অন্য
ক্রিয়ামূলজাত ক্রিয়াপদ দ্বারা পূরণ হয়। যেমন−গ।
- সম্পূর্ণ:
ক্রিয়াপদ নির্ধারক আদর্শ সারণী'র
সকল ঘর পূরণ করে।
- আকারান্ত:
এই জাতীয় ক্রিয়ামূলের উচ্চারণ আকারান্ত হয়। যেমন−
খা, চা,
ধা,
না,
পা,
বা,
যা, করা, খাওয়া
ইত্যাদি।
- অসম্পূর্ণ:
ক্রিয়াপদ নির্ধারক আদর্শ সারণী'র
সকল ঘর পূরণ করে না। যেমন−
আ,
যা
- অসম্পূর্ণ-অপূরক: এই জাতীয় ক্রিয়ামূল
ক্রিয়াপদ নির্ধারক আদর্শ সারণী'র
সকল ঘর পূরণ করে না। আবার অপূর্ণ ঘরগুলো অন্য
ক্রিয়ামূলজাত ক্রিয়াপদ দ্বারা পূরণ হয় না। যেমন−
আ।
- অসম্পূর্ণ-সম্পূরক:
এই জাতীয়
ক্রিয়ামূল
ক্রিয়াপদ নির্ধারক আদর্শ সারণী'র
সকল ঘর পূরণ করে না। কিন্তু অপূর্ণ ঘরগুলো অন্য
ক্রিয়ামূলজাত ক্রিয়াপদ দ্বারা পূরণ হয়। যেমন−যা।
- সম্পূর্ণ:
-
খা-আদি গণ: এই সকল ক্রিয়ামূল থেকে উৎপন্ন
ক্রিয়াপদ,
পুরাঘটিত বর্তমান কালে- ক্রিয়াপদের আকার একারে পরিণত হয়।
যেমন:
খা>খেয়েছি।
এই গণের অধীনে রয়েছে দুটি ক্রিয়ামূল। এই ক্রিয়ামূল দুটি হলো−
খা,
পা।
-
ধা-আদি
গণ: এই
সকল ক্রিয়ামূল থেকে উৎপন্ন ক্রিয়াপদ, পুরাঘটিত বর্তমান, অতীত, ভবিষ্যৎ কালে- ক্রিয়াপদের আকার, একারে পরিণত
হয়।
যেমন: ধা>ধেয়েছে, ধা>ধেয়েছিল এবং ধা>ধেয়ে থাকবে।
একই সাথে- সাধারণ অতীত, নিত্যবৃত্ত অতীত ও সাধারণ ভবিষ্যৎকালে -এর রূপটি হয়- সাধুর মতো।
যেমন: সাধারণ অতীত :
ধাইল
নিত্যবৃত্ত অতীত: ধাইত, সাধারণ ভবিষ্যৎকাল:
ধাইবে, ধেয়েছে।
এই গণের অধীনে রয়েছে
৩টি ক্রিয়ামূল।
এগুলো হলো:
ধা,
না,
বা।
-
গা-আদি গণ:
যে সকল
ক্রিয়ামূল থেকে উৎপন্ন
সাধারণ অতীতকালে-
এবং নিত্যবৃত্ত অতীতকালে সাধু
রীতির মতো ক্রিয়াপদ পাওয়া যায়।
যেমন: গা>গাইলাম,
গেলাম হয় না [সাধারণ অতীত]
গা>গাইত, গেত হয় না [নিত্যবৃত্ত অতীত]
এই গণের ক্রিয়ামূলগুলো হলো−
গা,
চা,
ছা
- পূরক,
গ-যা-আদি গণ: এই গণের অধীনস্থ ক্রিয়ামূল এককভাবে
ক্রিয়াপদ নির্ধারক আদর্শ সারণী'র
সকল ঘর পূরণ করে না। এই কারণে এটি অসম্পূর্ণ গণ বলা
যেতে পারে। কিন্তু ক্রিয়াপদ নির্ধারক আদর্শ সারণী'র
সকল ঘর পূর্ণ হয়ে থাকে অন্য ক্রিয়ামূল দ্বারা।
যেমন−গ
এবং যা ক্রিয়ামূল। যা ক্রিয়ামূলের
অসম্পূর্ণ ক্রিয়ামূল পূরক-ক্রিয়ামূল হলো- গ।
লক্ষ্যণীয় বিষয় যে, ক্রিয়ার সকল কালে
Öগ্
ধাতুজাত সকল ক্রিয়াপদ বাংলাতে ব্যবহৃত হয় না।
এক্ষেত্রে
Öগ্
ক্রিয়ামূলজাত ক্রিয়াপদের শূন্যস্থান
Öযা
ক্রিয়ামূলজাত ক্রিয়াপদ দ্বারা পূরণ করা হয়।
বা এর উল্টোও বলা যায়। তাই এই দুটি ক্রিয়ামূল পরস্পরের
পূরক ধাতু হিসাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
গ-যা
ক্রিয়ামূল
- একাধিক বর্ণ-গঠিত ক্রিয়ামূল: এই জাতীয় ক্রিয়ামূল দুটি অঙ্গের হয়ে থাকে।
এই অঙ্গ দুটি হলো-
- কর্তা স্বয়ং-নিষ্পন্ন ক্রিয়ামূল: এই জাতীয় ক্রিয়ামূলজাত ক্রিয়াপদ কর্তা
নিজের দ্বারাই কাজ সম্পন্ন করে। যেমন-লাফা-ক্রিয়ামূল-জাত ক্রিয়ামূল। যখন
বাক্যটি হয়- আমি লাফাই। তখন বুঝা যায় কর্তা নিজেই লাফায়। এই জাতীয়
ক্রিয়ামূল থেকে উৎপন্ন ক্রিয়াপদের বিচারে, কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
- অসম্পূর্ণ: এই জাতীয় ক্রিয়ামূল ক্রিয়াপদ নির্ধারক আদর্শ সারণী'র
সকল ঘর পূরণ করে না। যেমন-আগা, এগা ইত্যাদি। এই
গণের ক্রিয়ামূলগুলোকে কোনো সুনির্দিষ্ট রীতির ছকে বাঁধা যায় না।
- সম্পূর্ণ: এই জাতীয় ক্রিয়ামূল ক্রিয়াপদ নির্ধারক আদর্শ সারণী'র
সকল ঘর পূরণ করে।
ক্রিয়াপদ নির্ধারক আদর্শ সারণী'র
সকল ঘর পূরণ করে না। কিন্তু দুটির সমন্বয়ে
সম্পূর্ণতা লাভ করে। ফলে এই দুটি ক্রিয়ামূল পরস্পরের বিচারে পূরক ক্রিয়ামূল
হিসেবে বিবেচিত হয়। আর উভয় মিলে পূরক গণ হিসেবে বিবেচিত হয়। দেখুন:
আগা-এগা।
- সম্পূর্ণ:
-
পূরক গণ: আগা-এগা:
এই গণের অন্তর্গত আগা এবং এগা'র সমন্বয়ে
ক্রিয়াপদ নির্ধারক আদর্শ সারণী'র
সকল ঘর পূরণ করে।
- প্রযোজক ক্রিয়ামূল: এই জাতীয় ক্রিয়ামূলজাত ক্রিয়াপদ দ্বারা- কর্তা নিজে কিছু করে না,
কিন্তু অন্যের কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে প্রযোজনা করে। যেমন- আমি ছাত্র পড়াই। এক্ষেত্রে ছাত্র পড়ে। 'আমি' নামক কর্তা পড়ানোর কাজটিকে
পরিচালনা করেন। এই জাতীয় ক্রিয়ামূলগুলি হলো-
কমা, করা, কশা, কষা, খাওয়া, নাচা, পড়া ইত্যাদি। ক্রিয়াপদ নির্ধারক আদর্শ সারণী
পূরণ, কেবল চলিত বা সাধু রূপের বিচারে এই জাতীয় ক্রিয়ামূলকে তিনটি ভাগে ভাগ
করা যায়। এই ভাগ তিনটি হলো-
- সম্পূর্ণ:
আঁকা-আদি গণ: এই রূপে ক্রিয়ামূল থেকে উৎপন্ন ক্রিয়াপদ,
'ক্রিয়াপদ নির্ধারক আদর্শ সারণী' পূরণ করে। এই জাতীয় ক্রিয়ামূলের তালিকা
নিচে তুলে ধরা হলো।
এই জাতীয় ক্রিয়ামূলজাত ক্রিয়াপদ দ্বারা- কর্তা নিজে কিছু করে না, কিন্তু
অন্যের কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে প্রযোজনা করে।
যেমন- আমি ছাত্র পড়াই। এক্ষেত্রে ছাত্র পড়ে। 'আমি' নামক কর্তা পড়ানোর কাজটিকে
পরিচালনা করেন। এই জাতীয় ক্রিয়ামূলগুলি হলো-
কমা, করা, কশা, কষা, খাওয়া, নাচা, পড়া ইত্যাদি।
- ইকারান্ত:
- উকারান্ত: