মোয়েরিথেরিয়াম
Moeritherium

স্তন্যপায়ী প্রাণীর প্রোবোস্‌সিডিয়া বর্গের একটি গণ। ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে এর নামকরণ করেছিলেন  চার্ল্স উইলিয়াম এন্ড্রুস। এন্ড্রুস মিশরের 'আল ফাইয়াম' অঞ্চলের 'কাসর এল সাঘা' ভূসংঘটন স্তরে এই গণের প্রথম একটি জীবাশ্ম পেয়েছিলেন।

স্তন্যপায়ী শ্রেণির প্রাণীর টেথিথেরিয়া  থাকের মূলধারা থেকে
সেলান্ডিয়ান আমলের ৬ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে প্রোবোস্‌সিডিয়া বর্গের প্রজাতিসমূহের উদ্ভব হয়েছিল। ক্রমবিবর্তনের ধারায় এই বর্গের প্রাণুকূলের নিচের দাঁত বর্ধিত হয়ে স্বল্প দৈর্ঘ্যের গজদন্তে পরিণত হয়েছিল। এদের পা স্তম্ভের আকার ধারণ করেছিল। পায়ের পাতায় পাঁচটি আঙুল থাকলেও পুরু গোলাকার পেশির দ্বারা প্যাডের সৃষ্টি করেছিল। এছাড়া নাসিকার ক্রমবর্ধমান দশায় শুঁড় তৈরি হয়েছিল। খাদ্যের বিচারেও এরা পুরোপুরি তৃণভোজী হয়ে উঠেছিল। গণের আবির্ভাব হয়েছিল।

আদিকালের
প্রোবোস্‌সিডিয়া বর্গের সকল প্রজাতিই আফ্রিকায় বাস করতো। ইয়োসিন অন্তঃযুগ (৫.৬-৩.৩৯ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ) এই বর্গ থেকে হাতির অনুরূপ মোয়েরিথেরিয়াম গণের প্রজাতিকুলের আবির্ভাব হয়েছিল। তবে এই গণ থেকে সরাসরি হাতির উদ্ভব হয় নি। মূলত এরা ছিল প্রোবোস্‌সিডিয়া বর্গ থেকে উদ্ভুত স্বতন্ত্র ধারার প্রাণী। ধারণা করা হয় ৩.৭-৩.৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে এই গণের সকল প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যায়।

জীবাশ্ম প্রাপ্তির সূত্রে এই গণের এখন পর্যন্ত যে সকল প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে, সেগুলো হলো- 

জাপানে সংরক্ষিত মোয়েরিথেরিয়াম -এর কঙ্কাল

 

 

 

 

 

 

 

 

মোয়েরিথেরিয়াম গণের প্রজাতিগুলো দেখতে ছিল অনেকটা শুকরের মতো। এদের কাঁধ বরাবর উচ্চতা ছিল ৭০ সেন্টিমিটার (২.৩ ফুট) এবং ওজন ছিল ২৩৫ কিলোগ্রাম।

শিল্পী হেনরিখ হার্দার-এর তুলিতে মোয়েরিথেরিয়াম

সম্ভবত এরা জলাশয়ের নরম উদ্ভিদ আহার করতো। এদের হাতির মতো এদের প্রলম্বিত শুঁড় ছিল না। তবে এদের উপরের ঠোঁট ও নাসিকা একত্রে দীর্ঘ অঙ্গ হিসেবে বিকশিত হয়েছিল। এর কর্তন দাঁত থেকে স্বল্প দৈর্ঘ্যের গজদন্ত বের হতো। তবে এই দন্ত ভূমি অভিমুখে প্রসারিত ছিল। একালের হাতির চেয়ে এদের গজদন্ত বেশ ছোট ছিল।

তবে এদের পায়ের গড়ন ছিল একালের হাতির মতো স্তম্ভাকার এবং আকারে ছোটো। পায়ের পাতার গড়নও গোলাকার হয়ে উঠেছিল। লেজ অবপেক্ষাকৃত বড় ছিল। এবং লেজের মাথা গুচ্ছবদ্ধ লোম ছিল। কানের পাতা ছিল একালের হাতির চেয়ে বেশ ছোটো। সব মিলিয়ে এদের দেহের গড়ন হয়ে উঠছিল টাপির-এর মতো। শিল্পী হেনরিখ হার্দার-এর তুলিতে


সূত্র: