Kingdom:
Animalia |
নীলকণ্ঠ
বৈজ্ঞানিক নাম: Coracias benghalensis(Linnaeus, 1758)।
Coraciidae গোত্রের একটি পাখি। এই পাখি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এশিয়ায় দেখা যায়। মধ্যপ্রাচ্যের ইরাক, ভারত-উপমহাদেশ এবং ইন্দোচীনে এই পাখি প্রচুর দেখা যায়। বাংলাদেশের সর্বত্রই এই পাখি দেখা যায়।
এদের কণ্ঠস্বর অত্যন্ত তীক্ষ্ণ। বিশেষ করে ঝগড়ার সময় এই স্বর তীব্রতর হয়। রাতের বেলায় এদের চিৎকার প্রায় এক কিলোমিটার দূর থেকে শোনা যায়। এই কারণে অনেকে একে চেঁচানি পাখি বলে। তবে সৌন্দর্যের জন্য এই পাখিকে সকলেই পছন্দ করে।
লম্বায় প্রায় ২৬-২৭ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। বক্ষের রঙ বাদামী। মাথার উপরের অংশ নীল। আবার শরীরের নিচের দিকটা নীল। শরীরের চেয়ে মাথা একটু বড় এবং ঘাড় খাটো। ডানার উপরিভাগ গাঢ় নীল। ডানার প্রান্তভাগ নীলচে সবুজ। গলার নিচ থেকে বুক এবং ঘাড় বরাবর সাদাটে রেখা রয়েছে। লেজও অপেক্ষাকৃত বড়। লেজের প্রান্তভাগ নীলচে। পায়ে তীক্ষ্ণ শক্ত বাঁকানো নখ আছে।
এরা নানা ধরণের কীটপতঙ্গ, ব্যাঙ, সাপের বাচ্চা, কাঁকড়া বিছা, টিকটিকি, গিরগিটি
ইত্যাদি আহার করে। কৃষির জন্য ক্ষতিকারক কীট খেয়ে এরা ফসলের উপকার করে।
এদের প্রজননকাল গ্রীষ্ম। তাল, খেজুর বা নারকেল
গাছের কোঠরে এরা বাসা তৈরি করে। এ ছাড়া অন্য পাখির বাসা দখল করার প্রবণতা আছে।
প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরে বাসা তৈরির জায়গা নির্বাচন করে। নির্বাচিত জায়গায় বাসা তৈরি
করতে ২-৩ দিন ব্যায় করে। স্ত্রী পাখিকে আকর্ষণ করার জন্য পুরুষ পাখি নানা ধরনের
কসরৎ করে। পুরুষ পাখি স্ত্রী পাখির সামনে শূন্যে ডিগবাজি খায়, নানা রকম শব্দ করে।
স্ত্রী পাখি ৪-৫টি ডিম পাড়ে। ডিমের রঙ চকচকে সাদা এবং আকারে প্রায় গোল।
স্ত্রী-পুরুষ পাখি পালাক্রমে ডিমে তা দেয়। প্রায় ১৮-১৯ দিন তা দেওয়ার পর বাচ্চা ডিম
থেকে বেরিয়ে আসে। প্রায় ৩০-৪০ দিন এরা বাবা-মার তত্ত্বাবধানে বড় হয়ে উঠে। এই সময়
এরা শত্রুর হাত থেকে বাচ্চাদের রক্ষা করার জন্য কড়া পাহাড়া দেয়। বাচ্চাগুলো বেশ
চঞ্চল প্রকৃতির হয় এবং প্রায় সর্বক্ষণ চেঁচামেচি করে। উড়া শেখার পর এর বাচ্চারা
স্বাধীনভাবে জীবনযাপন শুরু করে।
সূত্র :