|
অক
Auk
আল্সিডাই
গোত্রে অন্তর্গত উত্তর আটলান্টিক ও প্রশান্ত
মহাসাগরের সাঁতারু ও ডুবুরি পাখি বিশেষ।
সাধারণভাবে
আল্সিডাই
গোত্রের প্রজাতিসমূহের অন্তর্গত আলকিনি ও ফ্রাটেরকুলিনি উপগোত্রের প্রজাতিসমূহকে সাধারণভাবে অক পাখি নামে অভিহিত করা হয়।
ক্রমবিবর্তনের ধারা
এভিস
(পক্ষী) শ্রেণির অন্তর্গত
কারাড্রায়িফোর্মেস বর্গের উদ্ভব হয়েছিল ৬.৯ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের
দিকে। আর ৩.৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের থেকে
লারি উপবর্গের উদ্ভব হয়েছিল।
প্রায় একই সময়ে এই উপবর্গ থেকে উদ্ভব হয়েছিল প্যান-আল্সিডাই থাকের। এই থাক
থেকে উদ্ভব হয়েছিল আল্সিডাই গোত্রের প্রজাতিসমূহ এবং এর দুটি উপগোত্র আলকিনি
ও ফ্রাটেরকুলিনি, উদ্ভব হয়েছিল ৩ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে।
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
এদের পিঠের দিকটা কালো
এবং বুক পেটের রঙ সাদা। এরা অত্যন্ত দক্ষ সাঁতারু।
ডাঙাতে এরা বাসা বেঁধে বসবাস
করলেও এরা তাদের জীবনের বেশিরভাগ সময় পানিতেই কাটায়। এদের
ভিতর বড় জাতের অক উড়তে পারতো না।
বর্তমানে এই প্রজাতিটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এছাড়া অন্যান্য
জাতের অক উড়তে পারে।
অাকার এবং অন্যান্য কিছু বৈশিষ্ট্যের বিচারে বিচারে এই পাখিকে দুটি গণের প্রজাতি
হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এরা হলো-
১.
বড় অক (Great auk):
এরা ধূসর অক (garefowl)
নামেও
পরিচিত ছিল। এরা
Pinguinus
গণের অন্তর্ভুক্ত ১৭৫৮ খ্রিষ্টাব্দে
লিনিয়াস
এই প্রজাতিটির নামকরণ করেছিলেন
Pinguinus impennis
।
|
ন্যাশনাল হিস্টোরি লাইব্রেরি, লন্ডন |
এদের আকৃতি
ছিল প্রায় রাজহাঁসের মতো। এরা উড়তে পারতো
না। এর ফলে সহজেই শিকারীরা শিকার করতে পারে। বিশেষ
করে পালক ও তেলের জন্য শিকারীরা এই পাখিকে ব্যাপকভাবে হত্যা করেছে।
এর ফলে ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে এই প্রজাতিটি
বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আগে এদের দেখা যেতো-
কানাডা, গ্রিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড এবং গ্রেট ব্রিটেনে।
এদের উচ্চতা ছিল ৭৫-৮৫ সেমি এবং ওজন ছিল প্রায় ৫ কেজি। এদের পিঠের দিকটা ছিল
কালো এবং বুকের দিকের রঙ ছিল সাদা। এদের পায়ের পাতা ছিল হাঁসের মতো।
২. ক্ষুদ্র অক (Razorbill
Auk): ১৭৫৮
খ্রিষ্টাব্দে লিনিয়াস
এই প্রজাতিটির নামকরণ করেছিলেন। এদেরকে
Alca
গণের
অন্তর্ভুক্ত প্রজাতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এর প্রজাতিগত নাম
Alca torda
।
এদের দৈর্ঘ্য ৩৮-৪৩ সেন্টিমিটারি। এদের দেহের
পিঠের দিক কালো এবং পেটের দিক
সাদা। এরা আকাশে উড়তে পারে এবং পানিতে সাঁতার কাটতে
পারে। এদের প্রধান
খাদ্য সামুদ্রিক ছোটো ছোটো মাছ ও বিভিন্ন ধরনের শামুক জাতীয় প্রাণী।
এদের বেশিরভাগ সময় দেখা যায় উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের
উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপে। গ্রীষ্মকালে এরা
সাইবেরিয়া, নিউফাউল্যান্ড অঞ্চলে চলে যায়। কিন্তু শীতকালে
এরা ইউরেশিয়ার অপেক্ষাকৃত কম শীতাঞ্চলে চলে আসে। গ্রীষ্মকালে
এদের প্রজনন মৌসুম শুরু হয়। এরা এক সাথে একটি বা দুটি ডিম পাড়ে।