|
সিটাসিয়া ক্ষুদ্রবর্গের আদিম প্রজাতিগুলো আধাজলচর প্রজাতিসমূহের কাছাকাছি দশায় ছিল।
প্রায় ৫.৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে এরা এশিয়া-সংলগ্ন আদিম ভারতভূমিতে বসবাস
করতো। এদেরকে আদি সিটাসিয়া ক্ষুদ্রবর্গের
আর্কিয়োসটি
উপ-ক্ষুদ্র বর্গের প্রজাত
হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
৫.৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে এশিয়া থেকে ভারতীয় ভূখণ্ড পৃথক হওয়া শুরু হলে,
ভারতীয় ভূখণ্ডের অগভীর জলরাশি বিশাল সমুদ্রের অংশে পরিণত হতে থাকে। এর ফলে এই অগভীর
জলের প্রাণীদের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। এদের অনেক প্রজাতি নতুন পরিবেশে বিলুপ্ত হয়ে
যায়। এর ভিতরে
আর্কিয়োসটি
উপ-ক্ষুদ্রবর্গের প্রজাতিগুলো ২.৩ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত অস্তিত্ব বজায়
রাখতে পারলেও শেষ পর্যন্ত বিলুপ্ত হয়ে যায়।
৫.৩ থেকে ২.৮ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের প্রায় ৩০টি প্রজাতি অভিযোজনের মাধ্যমে
পুরোপুরি গভীর সাগরের প্রাণীতে পরিণত হয়েছিল। এদেরকে
সিটাসিয়া ক্ষুদ্রবর্গের
দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রজাতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
৩.৭৮ থেকে ৩.৩৯ কোটি
খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে
সিটাসিয়া ক্ষুদ্রবর্গের প্রজাতিগুলোর
মুখের গড়ন এবং দাঁতের গড়ন পাল্টে গিয়েছিল। এর ফলে এদের খাদ্যগ্রহণের প্রক্রিয়াও
পাল্টে গিয়েছিল। এই সূত্রে
সিটাসিয়া
ক্ষুদ্রবর্গের প্রজাতিসমূহ দুটি উপ-ক্ষুদ্রবর্গে বিভাজিত হয়ে গিয়েছিল। এই
উপ-ক্ষুদ্রবর্গ হলো-
ওডোন্টোসেটি ও
মাইস্টোসেটি।
সিটাসিয়া
আদি ক্ষুদ্রবর্গের প্রজাতিগুলোর ছিল শিকারী। এরা বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক প্রাণী
শিকার করতো। এদের একাংশের দাঁতের গড়ন পাল্টে গিয়ে খাদ্যগ্রহণ কপাটি প্রক্রিয়ার
আশ্রয় নিয়েছিল। এই প্রক্রিয়ায়
সিটাসিয়া'রা
প্রথমে খাদ্যসমৃদ্ধ বিপুল পরিমাণ সামুদ্রিক জল মুখের ভিতরে টেনে নিত। এরপর চোয়াল
বন্ধ করে, মুখের ভিতরের জল বাইরের দিকে ঠেলে দিত। এর ফলে চোয়ালের দাঁতের ফাঁক গলে
জল বেরিয়ে যেতো এবং খাদ্যসমূহ মুখের ভিতরে আটকে যেতো। এক্ষেত্রে উপরের উভয় চোয়ালের
দাঁতের বিন্যাস ছিল চিরুনির মতো। উভয় চোয়ালের দাঁত যখন পরস্পরের সাথে আবদ্ধ হতো,
তখন একটি মজবুত ছাঁকুনি তৈরি হতো। দাঁতের এরূপ বিন্যাসকে বলা বলিন
(baleen)। দাঁতের
এই বিশেষ বিন্যাসযুক্ত প্রজাতিগুলোকে বলা হয়-মাইস্টোসেটি।
৩.৭৮ থেকে ৩.৩৯ কোটি
খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এরা শিকারী প্রজাতিগুলো থেকে পৃথক হয়ে গিয়েছিল। মূল ধারার এই
বিশেষ প্রজাতিগুলোকে
ওডোন্টোসেটি
উপ-ক্ষুদ্রবর্গে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এদের রয়েছে শিকারের উপযোগী তীক্ষ্ণ ও
মজবুত দাঁত। এরা এই দাঁতের সাহায্যে সামুদ্রিক মৎস্যাদি শিকার করে থাকে।
সূত্র:
https://en.wikipedia.org/wiki/Cetruminantia