সূত্র :
-
পশ্চিম বাংলার পাখি । প্রণবেশ সান্যাল, বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী। আনন্দ পাবলিশার্স লিমিটেড মে ১৯৯৭।
|
কোঁচ বক
Indian Pond
Heron,
Paddybird
আর্ডেইডায়ি
গোত্রের
একটি বক জাতীয় পাখি। ভারতবর্ষ এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চলে এই বক দেখা যায়। বিশেষ করে, ভারত,
বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কায় এই বক প্রচুর দেখা যায়।
ছবি : রেজাউল রাহী |
এদের আকার অনেকটা দেশী মুরগীর মতো। অন্যান্য বকের তুলনায় এদের গলা বেশ খাটো। বসে থাকার সময় এদের গায়ের রঙ লালচে বা মেটে দেখায়। এদের পিঠে এবং বুকে খয়েরি রঙের লম্বা দাগ রয়েছে। পাখার প্রান্তভাগে সাদা পালক থাকে। উড়ে যাওয়ার সময় এদের সাদা পালকে ঢাকা পাখা প্রকাশিত হয় এবং তখন এদেরকে সাদা বর্ণের মনে হয়। প্রজনন ঋতুতে পুরষ বকের পিঠে গাঢ় বাদামী রঙের ছোপ লক্ষ্য করা যায়।
এদেরকে সাধারণত ছোটো ছোটো জলাশয়ের কাছাকাছি চুপচাপ বসে থাকতে দেখা যায়। এছাড়া অল্প পানি আছে এমন মাঠে বসে থাকে। এরা মূলত এই ভাবে বসে থাকে খাবারের জন্য। এরা ছোটো ছোটো মাছ, শামুক, ব্যাঙ খায়।
এরা মূলত সারা বছর একাকী থাকে। কখনো কখনো অনেক কোঁচ বক একত্রে দেখা গেলেও এর দলের ভিতরেও একাকীই থাকে। কিন্তু প্রজনন ঋতুতে এরা জোড়া বাধে এবং উঁচু গাছের উপর বাসা তৈরি করে। এদের প্রজননের সময় বর্ষাকাল। স্ত্রী পাখি এক সাথে ৩-৫টি ডিম পাড়ে। ১৮ থেকে ২৪ দিন ডিমে তা দেওয়ার পর ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। এরা বাচ্চাদেরকে মূলত ছোটো মাছ খাওয়ায়।
বাংলাদেশে গ্রামাঞ্চলে আগে বন্দুক দিয়ে বা ফাঁদ পেতে এই পাখি শিকার করতো। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সাঁওতালদের বক প্রিয় খাদ্য। জলাশয় কমে যাওয়ার কারণেও এই বকের খাদ্যাভাব ঘটেছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে এই বকের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে।
সূত্র :
পশ্চিম বাংলার পাখি । প্রণবেশ সান্যাল, বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী। আনন্দ পাবলিশার্স লিমিটেড মে ১৯৯৭।