প্যাঁচা, পেঁচা বা পেচক।
স্ট্রিগিফোর্মেস
বর্গের এক প্রকার নিশাচর শিকারী পাখির সাধারণ
নাম। এই বর্গের প্রায় ২০০টি প্রজাতি টিকে আছে। কুমেরু, গ্রিনল্যান্ড এবং কিছু
নিঃসঙ্গ দ্বীপ ছাড়া পৃথিবীর সব স্থানেই প্যাঁচা দেখা যায়। বাংলাদেশে ১৭টি প্রজাতির
(মতান্তরে ১৫টি প্রজাতি) প্যাঁচা দেখা যায়। এর ভিতর ২৫টি স্থায়ী এবং ২টি পরিযায়ী।
এরা মূলত নিশাচর এবং একাকী থাকতে পছন্দ করে।
সাধারণ গাছের কোটরে, পাহাড়ের গর্তে বা পুরোনো পরিত্যক্ত বাড়িতে বাস করে।
|
লক্ষ্মী প্যাঁচা |
প্যাঁচার মাথা বড়, মুখমণ্ডল চ্যাপ্টা এবং
মাথার সম্মুখদিকে চোখ। প্যাঁচার চোখের চারিদিকে সাধারণত বৃত্তাকারে পালক সাজানো
থাকে। একে মুখচক্র বলা হয়। এদের অক্ষিগোলক সামনের দিকে অগ্রসর থাকায় এরা দ্বিনেত্র
দৃষ্টির অধিকারী। তবে দূরের বস্তু পরিষ্কার দেখতে পেলেও খুব কাছের বস্তু ভালো দেখতে
পায় না। এই কারণে এরা শিকার ধরার পর, আহার করার সময় চঞ্চু এবং নখরে অবস্থিত বিশেষ
এক ধরনের পালক দ্বারা অনুভব করে।
প্যাঁচা তার মাথাকে একদিকে ১৩৫ ডিগ্রী কোণে ঘোরাতে পারে। তাই দুই দিক মিলে এদের
দৃষ্টিসীমা ২৭০ ডিগ্রী। এর ফলে এরা নিজের কাঁধের উপর দিয়ে পেছনে দেখতে পায়।
প্যাঁচার শ্রবণশক্তি অত্যন্ত প্রখর। শুধু
শব্দকে অনুসরণ করে ঘন অন্ধকারে শিকার ধরতে পারে। সামান্য মাথা ঘুরালে প্যাঁচা
ইঁদুরের শষ্যদানা চিবানোর মতো মৃদু শব্দ শুনতে পায়। মাথার গড়নের কারণে দুই কানে
সামান্য আগে বা পরে শোনে। এছাড় প্যাঁচার মুখচক্র শিকারের সামান্য চলাফেরার শব্দকে
শুনতে সহায়তা করে। কোনো কোনো প্রজাতির প্যাঁচার মুখচক্র অসমভাবে সাজানো থাকে।
বেশীরভাগ প্যাঁচা ছোট ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী যেমন ইঁদুর এবং কীটপতঙ্গ শিকার করে,
তবে কিছু প্রজাতি মাছও ধরে। প্যাঁচা উপর থেকে ছোঁ মেরে শিকার ধরতে অভ্যস্ত। শিকার
করা ও শিকার ধরে রাখতে এরা বাঁকানো ঠোঁট বা চঞ্চু এবং নখর ব্যবহার করে।
প্যাঁচার মোট ছয়টি গোত্রের ভিতর চারটি গোত্রের
প্রজাতি জীবাশ্ম হিসেবে পাওয়া গেছে। এই গোত্রগুলো হলো
‒
Ogygoptyngidae,
Palaeoglaucidae, Protostrigidae
এবং
Sophiornithidae। আর জীবিত
২টি গোত্রের
প্রজাতি রয়েছে।
বাংলা দেশের প্যাঁচাগুলোর
ডাক ও গড়ন অনুসারে নানা রকম নামে ডাকা হয়। যেমন‒
সূত্র :