|
১৯৮৪ সালে এই জীবাশ্মগুলো মেরামত করার প্রস্তাব করেন Bill Kimbel, Tim White এবং Don Johanson। প্রথম দিকে এরা বেছে নিয়েছিলেন ১৯৭৯ সালে আবিষ্কৃত জীবাশ্মগুলোকে। এই জীবাশ্মগুলোর মেরামত করার পর, এই প্রজাতির আরও কিছু জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়। এই জীবাশ্মগুলোর বিচারে পুরানো জীবাশ্মগুলোর প্রকৃতি কিছুটা পাল্টানোর প্রয়োজন পরে। এই কারণে ১৯৮৮ সালে Bill Kimbel এবং Tim White এগুলোর পুনসংস্কারের প্রস্তাব দেন। পরে এই প্রস্তাব অনুসারে জীবাশ্মগুলোর সংস্কার করা হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ১২টি নমুনা মেরামত করা হয়েছে।
AL 333-45-1 |
AL 333-45-2 |
সংস্কারকৃত জীবাশ্মের নমুনা |
Homo
sapiens
এর উপরের
চোয়াল
Australopithecus
afarensis
এর দাঁতের সারি
গরিলার চোয়াল
উপরের চোয়াল
Australopithecus afarensis
-এর
AL 129-1a/b
নমুনা
: Johanson’s Knee
Australopithecus afarensis
-এর
AL 129-1a/b
নমুনা
: Johanson’s Knee
এরা ছিল দ্বিপদী এবং
মাথার গড়ন ছিল অনেকটা মানুষের মতই। তাই বিজ্ঞানীরা প্রথমদিকে
এদেরকে মানুষের পূর্ব-পুরুষ হিসাবে বিবেচনা করেছিলেন।
পরে এই ধারণা বাতিল করে দেওয়া হয়।
প্রথমত এদের মাথার খুলির মাপ ছিল মাত্র ৪৮০-৪৩০ সিসি।
তার অর্থই হলো,
এদের যথেষ্ঠ বুদ্ধি ছিল না।
এছাড়া এদের দাঁত, চোয়াল পরীক্ষা করে দেখা গেলো এদের সাথে
এপদের মিলটাই বেশি।
মূলত মানুষের চোয়াল একটু ছড়ানো উপবৃত্ত ধরনের।
উভয় সারির দাঁতের মাঝখানে জায়গাও তুলনামূলকভাবে বেশি।
সেই তুলনায় এপ্দের দাঁতের সারি অনেকটা সমান্তরাল।
পক্ষান্তরে
Australopithecus afarensis
-এর
দাঁতের সারি প্রায় সমান্তরাল এবং মুখের ভিতর জায়গা মানুষের চেয়ে কম।
নিচের তিনটি তুলনামূলক চিত্রে প্রদর্শিত গরিলার চোয়ালের দাঁতর সারি
লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, গরিলার চোয়াল সমান্তরাল এবং অপেক্ষাকৃত
কম প্রশস্ত।
কিন্তু এর নিচের মানুষের চোয়ালের চিত্রটি লক্ষ্য করলে দেখা যায়,
দাঁতের বিন্যাস ও প্রশস্ততার বিচারে
মানুষের চোয়ালের সাথে গরিলার চোয়ালের পার্থক্য অনেক বেশি।
আবার
Australopithecus afarensis
-এর
চোয়ালের সাথে মানুষের চোয়ালের পার্থক্য অনেক হলেও দাঁতের বিন্যাসের দিক থেকে অনেকটাই
কাছাকাছি।
উল্লেখ্য উপরে আধুনিক মানুষের (Homo
sapiens)
উপরের চোয়াল ও দাঁতের যে চিত্রটি দেওয়া হয়েছে,
তা বর্তমানকালের মানুষ নয়।
এই নমুনা নেওয়া হয়েছে প্রাচীন মানুষের জীবাশ্ম থেকে।
এর নমুনা সংখ্যা
C/PA-101।
এই জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়েছিল চীনের চোউকোউশিয়েন (Choukoutien)
অঞ্চলে।
উপরের এই তুলনামূলক আলোচনা থেকে অনুমান করতে পারি যে,
Australopithecus afarensis
রা ছিল এপ ধরনের প্রাণী।
ইথিওপিয়ার হাডার অঞ্চল থেকে,
১৯৭৩
খ্রিষ্টাব্দে
জানুসন্ধি আবিষ্কার করেন
Don Johanson
এবং M. Taieb।
Johanson
-এর নামানুসারের নামকরণ করা হয়েছে-
Johanson’s Knee।
এর বয়স ধরা হয়েছে ৩৪ লক্ষ বৎসর
Australopithecus afarensis -এর AL 200-1 নমুনা : ১৯৭৪-৭৫ সালে ইথিওপিয়ার হাডার অঞ্চল থেকে D. Johanson এবং M. Taieb এই জীবাশ্ম আবিষ্কার করেন। ধারণা করা হয়, এই জীবাশ্মের বয়স ৩০,০০,০০০ থেকে ৩২,০০,০০ বৎসর
।
Australopithecus afarensis
-এর
AL 200-1 |
Australopithecus afarensis
-এর
AL
200-1 |
|
|
Australopithecus afarensis-এর AL 288 নমুনা : Lucy |
Australopithecus afarensis-এর
AL 288
নমুনা :
Lucy।
১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে ইথিওপিয়ার হাডার অঞ্চল থেকে
D. Johanson
এবং
M. Taiebএই
জীবাশ্ম আবিষ্কার করেন।
এটি
ছিল
প্রায় ২৫ বৎসর বয়সী তরুণীর জীবাশ্ম।
বিজ্ঞানীরা এর নামকরণ করেছেন লুসি
(Lucy)।
প্রায় ৩২ লক্ষ
খ্রিষ্টাব্দে
লুসি জীবিত ছিল।
এই জীবাশ্মটির প্রায় ৪০% পাওয়া গেছে।
এর পেলভিস,
উরুর অস্থি,
পায়ের নিম্ন অস্থি অনুসারে বিবেচনা করা হয় এই প্রজাতিটি ছিল দ্বিপদী।
এর উচ্চতা ছিল ১০৭ সেন্টিমিটার (৩ ফুট ৬ ইঞ্চি) এবং ওজন ছিল ২৮ কেজি (৬২ পাউন্ড)।
উল্লেখ্য,
মানুষের হাতের দৈর্ঘ্য পায়ের চেয়ে কম হয়ে
থাকে।
পক্ষান্তরে শিম্পাঞ্জির
হাত পায়ের চেয়ে বড় হয়ে থাকে।
কিন্তু লুসির হাত ও পায়ের দৈর্ঘ্য ছিল অনেকটা কাছাকাছি।
এই কারণে ধারণা করা মুসকিল যে,
সমতলভূমিতে চলার সময় এরা সম্পূর্ণই
দুই পায়ের উপর ভর করে
হাঁটতো,
নাকি চলার সময় কিছুটা হাতের সাহায্যও
নিতো।
তবে দীর্ঘ হাতের গঠনে দেখে মনে হয়,
এরা
গাছে গাছে স্বচ্ছন্দে চলাফেরা করতে পারতো।
আবার সমতলভূমিতেও দ্রুত গতিতে চলাফেরা করতে পারতো।
Australopithecus afarensis-এর AL 233 |
Australopithecus afarensis-এর
AL 233
নমুনা।
১৯৭৪ সালে ইথিওপিয়ার হাডার অঞ্চল থেকে
D. Johanson
এবং
এর সহকর্মীরা এই জীবাশ্ম আবিষ্কার করেন।
এই প্রজাতির বিভিন্ন সদস্যদের প্রায় ১৩টি জীবাশ্ম পাওয়া গেছে।
সেই কারণে ধারণা করা হয়,
একটি পুরো পরিবারের সদস্যদেরই বিভিন্ন
অংশ পাওয়া গেছে।
অনুমান করা হয় এরা ৩২ লক্ষ বৎসর আগে জীবিত ছিল।
Australopithecus afarensis-এর AL 400-1A নমুনা |
Australopithecus afarensis-এর AL 400-1A নমুনা।
নমুনা KT12/H1 |
Australopithecus afarensis-এর
AL 444(-2)
নমুনা
১৯৯১ সালে ইথিওপিয়ার হার্ডার অঞ্চল থেকে Bill Kimbel
এবং
Yoel Rakএই
প্রজাতির একটি জীবাশ্ম আবিষ্কার করেন।
এর বয়স নিরুপণ করা হয়েছে প্রায় ৩০ লক্ষ বৎসর। উপরের
সকল নমুনাগুলোই ইথিওপিয়ার হাডার অঞ্চল থেকে আবিষ্কৃত হয়েছে।
কিন্তু এই অঞ্চলের বাইরে আরও কিছু অঞ্চলে এর জীবাশ্ম পাওয়া গেছে।
যেমন-
কেনিয়ার কুবি ফোরা
(Koobi Fora)
অঞ্চলে এর
প্রাপ্ত মাথার খুলি,
চোয়াল ও দাঁতের জীবাশ্ম (নমুনা :
KNM-ER 2602)
পাওয়া গেছে।
তাঞ্জানিয়ার লিটোলি
(Laetoli)
অঞ্চলে পাওয়া গেছে একাধিক জীবাশ্ম।
এর নমুনাগুলো হলো-
Garusi 1, LH 2, LH 3, LH 4, LH 5, LH 6।
১৯৭৪
খ্রিষ্টপূর্বাব্দে তাঞ্জানিয়ার লিটোলি অঞ্চল থেকে
M. Mubuila (w/ Mary Leakey) এই প্রজাতির একটি
নমুনা আবিষ্কার করেন। এটি ছিল দাঁতসহ চোয়ালের অংশবিশেষ। দক্ষিণ আফ্রিকার
মাকাপান্সগাট অঞ্চল থেকে এর কিছু হাতের ও চোয়ালের অস্থি পাওয়া গেছে। এদের নমুনা
সংখ্যা হলো-MAK-VP- 1/1, MAK-VP-1/3 এবং MAK-VP-1/12।