অস্ট্রালোপিথেকাস বাহ্রেলঘাজালি
Australopithecus bahrelghazali

অস্ট্রালোপিথেকাস গণের একটি প্রজাতি। ৩৬ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এই প্রজাতির আবির্ভাব হয়েছিল। ৩০ লক্ষ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে প্রাণীগুলো এরা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।

১৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জানুয়ারি মধ্য আফ্রিকার চাদের
Bahr el Ghazal নামক প্রাচীন নদীতটে, এর জীবাশ্ম আবিষ্কার করেছিলেন মাইকেল ব্রুনেট (Michel Brunet)। উল্লেখ্য এই অঞ্চলটি পূর্ব-আফ্রিকার রিফ উপত্যাকার ২৫০০ কিলোমিটার পশ্চিমে। উত্তর-মধ্য আফ্রিকা তথা আফ্রিকার এত পশ্চিমাঞ্চলে এর আগে কোনো অস্ট্রেলোপিথেকাস গণের জীবাশ্ম পাওয়া যায় নাই। উল্লেখ্য এই প্রজাতিটির চোয়ালসহ কিছু দাঁত পাওয়া গেছে মাত্র। এই জীবাশ্মটির প্রত্নতাত্ত্বিক নাম KT12/H1। পরে এই সূত্রে উপত্যাকার নামকরণ করা হয়েছে KT12 বেরিলিয়াম-ভিত্তিক পরীক্ষায় এই জীবাশ্মের সময় নিরূপণ করা হয়েছে ৩৬ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।
 

KT12/H1

১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি ,আসে একই স্থানে আবিষ্কৃত হয়েছিল এর দ্বিতীয় জীবাশ্ম KT12/H2। এটি ছিল উপরের সারির পেষকদন্ত। এই বছরের ১৬ই জানুয়ারি আবিষ্কার হয়েছিল জীবাশ্ম KT13-96-H1।এই জীবাশ্মটি ছিল বাম দিকের চোয়ালের চর্বণ অংশের।

২০০০ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ই জুলাই, দুটি পেষক দাঁত-সহ একটি ভাঙা চোয়াল। আবিষ্কৃত এই জীবাশ্মটির নামকরণ করা হয়েছে 
KT40। 

এ সকল নমুনা থেকে এই প্রজাতির বিবরণ যথাযথভাবে নিরুপণ করা সম্ভব নয়। বিজ্ঞানীরা
অস্ট্রেলোপিথেকাস গণের অন্যান্য প্রজাতির জীবাশ্মের সাথে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে, এর একটি আনুমানিক দৈহিক বিবরণ উপস্থাপন করেছেন। এই বিরবণ থেকে জানা যায়, এদের মস্তিষ্কের মাপ ছিল ৪০০-৫০০ সিসি। এদের আকার ছিল একালের শিম্পাঞ্জি'র মতো।

বিজ্ঞানীদের বিবরণ অনুসারে সৃষ্ট অস্ট্রালোপিথেকাস বাহ্রেলঘাজালি'র চিত্ররূপ

এদের জীবনযাপনের রীতি সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায় নি। সম্ভবত অস্ট্রেলোপিথেকাস গণের অন্যান্য প্রজাতির মতই এদের আচরণ ছিল। সম্ভবত এরা শিকারের জন্য পাথর ব্যবহার করতে পারতো। কিন্তু পাথর থেকে কোনো অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম ছিল কিনা সে সম্পর্কে জানা যায় নি।

অস্ট্রেলোপিথেকাস গণের অন্যান্য প্রজাতির মতই এর দলবদ্ধভাবে বসবাস করতো। হয়তো দলবদ্ধভাবে পশু শিকার করতো। এদের খাদ্য তালিকায় মাংস এবং উদ্ভিদ উভয়ই ছিল। 


সূত্র: