|
তিমির ক্রমবিবর্তনের
ধারা
হৃয়াসিয়ান অধিযুগে (২৩০-২০০.৫
কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)
হুরোনিয়ান বরফযুগের
শেষ হয়। ২১০ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে আদি জীবকণিকাগুলোর একটি অংশ বিবর্তিত
হয়ে
সু-প্রাণকেন্দ্রীয় কোষ-যুক্ত
জীবে পরিণত হয়। উল্লেখ্য, বিজ্ঞানীরা এই আদি জীবকুলকে
ইউক্যারিয়েটা
জীবস্বক্ষেত্র হিসেবে অভিহিত করে থাকেন।
এই ইউক্যারিয়েটা জীবস্বক্ষেত্রের প্রাণী ক্রমবিবর্তনের ধারা অনুসরণে ২২.৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে ম্যামালিয়া (স্তন্যপায়ী) শ্রেণির উদ্ভব হয়েছিল। আর ৬.৬ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দে থাক থেক স্তন্যপায়ী অমরাযুক্ত প্লাসেন্টালিয়া ক্ষুদ্রশ্রেণির স্তন্যপায়ী প্রাণির আবির্ভাব ঘটেছিল।
এর প্রায় ৫.৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে প্লাসেন্টালিয়া ক্ষুদ্রশ্রেণি থেকে স্থলচর আর্টিয়োডাক্টাইলা বর্গকে উদ্ভব হয়েছিল। এই বিবর্তনের মাধ্যমে তিমি ও ডলফিন জাতীয় প্রজাতির সূত্রপাত হয়েছিল। এই বর্গর থেকে পরবর্তী সময়ে ক্রমবিবর্তনের ধারায় আর্টিয়োফাবুলা থাক ও সেন্ট্রুমিনান্টিয়া থাকের উদ্ভব হয়। সমুদ্র সংলগ্ন অগভীর জলাশয় এবং ডাঙাতে বিচরণে অভ্যস্থ হয়ে উঠেছিল। এর ভিতর দিয়ে সেন্ট্রুমিনান্টিয়া থাকের স্থলচর এবং আধা জলচর প্রজাতিসমূহের উদ্ভব হয়েছিল। ৫.৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের শেষের দিকে সেন্ট্রুমিনান্টিয়া থাক থেকে হুইপ্পোমোর্ফা উপবর্গের প্রজাতিসমূহের উদ্ভব হয়েছিল। এই উপবর্গের প্রজাতিসমূহের একাংশ পূর্ণ জলচর প্রজাতিতে পরিণত হয়। এই সূত্রে উপবর্গটি দুটি ভাগে বিভাজিত হয়ে গিয়েছিল। এই ভাগ দুটি হলো-
সিটাসিয়া ক্ষুদ্রবর্গের আদিম প্রজাতিগুলো আধাজলচর প্রজাতিসমূহের কাছাকাছি দশায় ছিল।
প্রায় ৫.৫ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে এরা এশিয়া-সংলগ্ন আদিম ভারতভূমিতে বসবাস
করতো।
৫.৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে এশিয়া থেকে ভারতীয় ভূখণ্ড পৃথক হওয়া শুরু হলে,
ভারতীয় ভূখণ্ডের অগভীর জলরাশি বিশাল সমুদ্রের অংশে পরিণত হতে থাকে। এর ফলে এই অগভীর
জলের প্রাণীদের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। এদের অনেক প্রজাতি নতুন পরিবেশে বিলুপ্ত হয়ে
যায়। ৪.৯ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে কিছু প্রজাতি পুরোপুরি জলচর হয়ে
উঠেছিল। এদের
ভিতরে
আর্কিয়োসটি
উপ-ক্ষুদ্রবর্গের প্রজাতিগুলোকে বিবেচনা করা হয়। অবশ্য এরা ২.৩ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত অস্তিত্ব বজায়
রাখতে পারলেও শেষ পর্যন্ত বিলুপ্ত হয়ে যায়।
৫.৩ থেকে ২.৮ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের প্রায় ৩০টি প্রজাতি অভিযোজনের মাধ্যমে
পুরোপুরি গভীর সাগরের প্রাণীতে পরিণত হয়েছিল। এদেরকে
সিটাসিয়া ক্ষুদ্রবর্গের
দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রজাতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এরা সমুদ্রে চলাচল এবং যোগাযোগের
জন্য ধ্বনি সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিল। একই সাথে জলে চলাচলের জন্য পদাঙ্গগুলো পাখনায়
পরিবর্তিত হয়েছিল, আর জলের ভিতরে দিক ঠিক রাখার জন্য সৃষ্টি হয়েছিল পাখনা সদৃশ্য
ছড়ানো লেজ।
আর্কিয়োসটিদের
ছিল শিকারের উপযোগী শক্তিশালী চোয়াল ও দাঁত। কিন্তু
সিটাসিয়া ক্ষুদ্রবর্গের
দ্বিতীয় পর্যায়ের সকল প্রজাতির দাঁতের গড়ন একই রকম রইলো না।
মূলত ৩.৭৮ থেকে ৩.৩৯ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে সিটাসিয়া ক্ষুদ্রবর্গের প্রজাতিগুলোর মুখের গড়ন এবং দাঁতের গড়ন পাল্টে গিয়েছিল। এর ফলে এদের খাদ্যগ্রহণের প্রক্রিয়াও পাল্টে গিয়েছিল। এই সূত্রে সিটাসিয়া ক্ষুদ্রবর্গের প্রজাতিসমূহ দুটি উপ-ক্ষুদ্রবর্গে বিভাজিত হয়ে গিয়েছিল। এই উপ-ক্ষুদ্রবর্গ হলো- ওডোন্টোসেটি ও মাইস্টোসেটি।
সিটাসিয়া
আদি ক্ষুদ্রবর্গের প্রজাতিগুলোর ছিল শিকারী। এরা বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক প্রাণী
শিকার করতো। এদের একাংশের দাঁতের গড়ন পাল্টে গিয়ে খাদ্যগ্রহণ কপাটি প্রক্রিয়ার
আশ্রয় নিয়েছিল। এই প্রক্রিয়ায়
সিটাসিয়া'রা
প্রথমে খাদ্যসমৃদ্ধ বিপুল পরিমাণ সামুদ্রিক জল মুখের ভিতরে টেনে নিত। এরপর চোয়াল
বন্ধ করে, মুখের ভিতরের জল বাইরের দিকে ঠেলে দিত। এর ফলে চোয়ালের দাঁতের ফাঁক গলে
জল বেরিয়ে যেতো এবং খাদ্যসমূহ মুখের ভিতরে আটকে যেতো। এক্ষেত্রে উপরের উভয় চোয়ালের
দাঁতের বিন্যাস ছিল চিরুনির মতো। উভয় চোয়ালের দাঁত যখন পরস্পরের সাথে আবদ্ধ হতো,
তখন একটি মজবুত ছাঁকুনি তৈরি হতো। দাঁতের এরূপ বিন্যাসকে বলা বলিন (baleen)। দাঁতের
এই বিশেষ বিন্যাসযুক্ত প্রজাতিগুলোকে বলা হয়-মাইস্টোসেটি।
৩.৭৮ থেকে ৩.৩৯ কোটি
খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এরা শিকারী প্রজাতিগুলো থেকে পৃথক হয়ে গিয়েছিল। মূল ধারার এই
বিশেষ প্রজাতিগুলোকে
ওডোন্টোসেটি
উপ-ক্ষুদ্রবর্গে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এদের রয়েছে শিকারের উপযোগী তীক্ষ্ণ ও
মজবুত দাঁত। এরা এই দাঁতের সাহায্যে সামুদ্রিক মৎস্যাদি শিকার করে থাকে। এদের ভিতরে
রয়েছে ডলফিন, পোরপোইসেস এবং ব্যাকেট ও স্পার্ম তিমি।
মাইস্টোসেটি উপ ক্ষুদ্রবর্গ থেকে উদ্ভব হয়েছে
হয়েছে অধিকাংশ তিমি। উল্লেখ্য,
৩.৭৬ থেকে ১.৭ কোটি
খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে
মাইস্টোসেটি উপ ক্ষুদ্রবর্গ থেকে উদ্ভব হয়েছে- ৮টি গোত্রের
বিভাজিত হয়ে গিয়েছিল। এই গোত্রগুলো এর অধীনস্থ তিমির প্রজাতিগুলো হলো-
১. লানোসেডিটি (Llanocetidae)
- Llanocetus denticrenatus
- Mystacodon selenensis
২. ইটিয়োসেটিডি (Aetiocetidae)
- Aetiocetus গণ
- A. cotylalveus
- A. polydentatus
- A. tomitai
- A. weltoni
- Ashorocetus গণ
- A. eguchii
- Chonecetus গণ
- C. sookensis
- Fucaia গণ
- F. buelli
- F. goedertorum
- Morawanocetus গণ
- M. yabukii
- Salishicetus গণ
- Salishicetus meadi
৩. ইয়োমাইস্টিসেটিডি (Eomysticetidae)
- Eomysticetus গণ
- E. carolinensis
- E. whitmorei
- Matapanui গণ
- M. waihao
- Tohoraata গণ
- T. raekohao
T. waitakiensis- Tokarahia গণ
- T. kauaeroa
- T. lophocephalus
- Waharoa গণ
- Waharoa ruwhenua
- Yamatocetus গণ
- Y. canaliculatus
৪. বালিনোপ্টেরিডি (Balaenopteridae)
- Balaenoptera গণ
- Balaenoptera acutorostrata
- Balaenoptera bertae
- Balaenoptera bonaerensis
- Balaenoptera borealis
- Balaenoptera brydei
- Balaenoptera cephalus
- Balaenoptera colcloughi
- Balaenoptera davidsonii
- Balaenoptera edeni
- Balaenoptera musculus
- Balaenoptera omurai
- Balaenoptera physalus,
- Balaenoptera siberi
- Balaenoptera sursiplana
- Balaenoptera taiwanica
৫. মামালোডোন্টিডি (Mammalodontidae)
- Janjucetus গণ
- J. hunderi
- Mammalodon গণ
- M. colliveri
- M. hakataramea
৬. বালিনিডি (Balaenidae)
- Balaena গণ
- B. mysticetus
- Eubalaena গণ
- E. australis
- E. ianitrix Bisconti
- E. glacialis
- E. japonica
- E. shinshuensis
- Balaenella গণ
- B. brachyrhynchus
- Balaenula গণ
- Balaenula balaenopsis
- Balaenula astensis
- Balaenotus গণ
- B. insignis
- Idiocetus গণ
- I. guicciardinii
- Morenocetus
- M. parvus গণ
৭. সেটোথেরিডি (Cetotheriidae)
- Cephalotropis গণ
- C. coronatus
- Joumocetus গণ
- J. shimizui
- Caperea গণ
- C. marginata
- Cetotheriinae উপগোত্র
- Brandtocetus গণ
- Brandtocetus chongulek
- Cetotherium গণ
- C. crassangulum
- C. furlongi
- C. rathkii
- C. riabinini
- Ciuciulea গণ
- Ciuciulea davidi
- Eucetotherium গণ
- E. helmersonii
- Kurdalagonus গণ
- K. mchedlidzei
- Mithridatocetus গণ
- M. adygeicus
- M. eichwaldi
- M. mayeri
- Vampalus গণ
- V. sayasanicus
- Zygiocetus
- Zygiocetus nartorum
- Herpetocetinae উপগোত্র
- Herentalia গণ
- H. nigra
- Herpetocetusগণ
- H. scaldiensis
- H. transatlanticus
- H. bramblei
- H. morrowi
- Metopocetus গণ
- M. durinasus
- M. hunteri
- Nannocetus গণ
- N. eremus
- Piscobalaena গণ
- Piscobalaena nana
- Tranatocetus গণ
- Tranatocetus argillarius
৮. এসক্রিচ্টিসিডি (Eschrichtiidae)
- Eschrichtioides গণ
- E. gastaldii
- Eschrichtius গণ
- E. robustus
- E. akishimaensis
- Archaeschrichtius গণ
- Gricetoides
সূত্র:
https://en.wikipedia.org/wiki/Cetacea