উদ্ভিদ
plant

জীবজগতের প্লান্টি রাজ্যের সকল প্রজাতির সাধারণ নাম। এদের অধিকাংশই সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে শর্করা-জাতীয় খাদ্য তৈরি করতে পারে এবং চলাচল করতে পারে না।  

উদ্ভিদের শ্রেণিবিভাজন ও তার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
প্রাচীনকাল থেকে বিজ্ঞানীরা পর্যবেক্ষণের দ্বারা উদ্ভিদের শ্রেণিবিভাজন করার চেষ্টা করেছেন। বিভিন্ন সময়ে শ্রেণিবিভাজনে নানাবিধ পরিবর্তন ঘটেছে। নিচে এর কালানুক্রমিক বিবর্তনের ধারা তুলে ধরা হলো। উদ্ভিদবিজ্ঞানের জনক বলা হয় গ্রিক বিজ্ঞানী থিয়োফ্রাস্টাস (খ্রিষ্টপূর্ব ৩৭০-২৮৫ অব্দ)-কে। তিনি তাঁর De Historia Plantarum নামক গ্রন্থে মোট ৪৮০টি উদ্ভিদ পর্যবেক্ষণ করে, উদ্ভিদজগৎকে মোট চারটি ভাগে ভাগ করেছিলেন।
বিজ্ঞানী থিয়োফ্রাস্টাস মৃত্যুর পর সুদীর্ঘকাল কেউ এ বিষয়ে গবেষণা করে নি। তাই এই যুগকে বলা হয়ে থাকে অন্ধকার যুগ। জার্মানিতে ছাপাখানা আবিষ্কারের পর কয়েকজন বিজ্ঞানী ঔষধি উদ্ভিদের ছবি ও বর্ণনাসহ কিছু বই প্রকাশ করেন। এদের মধ্যে অটো ব্রুনফেলস (১৪৬৪-১৫৫৩), লিউনার্দ ফুকস (১৫০১-১৫৬৬) ও টার্নার (১৫৩০-১৫৫৮)  উল্লেখযোগ্য।

বিজ্ঞানী অটো ব্রুনফেলস সমগ্র উদ্ভিদজগতকে দুইটি ভাগে বিভক্ত করে। এগুলো হলো- অপুষ্পক উদ্ভিদ ও.সপুষ্পক উদ্ভিদ। এর কিছুকাল পরে ইতালীয় বিজ্ঞানী আদ্রে সিসালপিনো ১৫৮৩ খ্রিষ্টাব্দে
De Planties নামক একটি বই প্রকাশ করেন। এখানে তিনি থিয়োফ্রাস্টাস শ্রেণিবিন্যাসের নিয়মানুসারে প্রায় ১৫০০ উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাস করেন। জ্যা বাউহিন (১৫৪১-১৬৩১) নামক একজন ডাক্তার তার Historia plantarum Universalis বইটি প্রকাশ করেন। এটিকে ১৬৫০ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর মৃত্যুর পর তিন খণ্ডে প্রকাশিত হয়। সুইস বিজ্ঞানী গ্যাসপার বাউহিন (১৫৬০) Pinax Theatri Botanici নামক এইকটি বই লেখেন। গ্যাসপার সম্পর্কে আদ্রে সিসালপিনোর ভাই ছিলেন। এই বইতেই প্রথম দ্বিপদ নামকরণের ব্যবহার দেখা যায়।

ফরাসী বিজ্ঞানী যোসেফ পিটন ডি টুর্নেফোর্ট (১৬৫৬-১৭০৮), ১৭০০ খ্রিষ্টাব্দে
Institutiones Rei Herbariae নামক একটি পুস্তক প্রকাশ করেন। এই গ্রন্থে তিনি উদ্ভিদের ৭০০টি গণের ৯০০০ হাজার প্রজাতি নিয়ে আলোচনা করেন।   Acer, Betula, Persicaria, Polygonum,Fagus, Lathyrus, Salix, Verbena, Populus ইত্যাদি নাম তিনিই প্রদান করেন। তাই তাকে গণসমূহের আধুনিক ধারণার পথিকৃৎ বলা হয়। ব্রিটিশ বিজ্ঞানী জন রে তার Historia Plantarum বইতে উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাসের পদ্ধতি তুলে ধরেন। তিনিই সর্বপ্রথম বীজপত্রের পার্থক্য দেখান। তিনি একবীজপত্রীকে Monocotyledones ‌এবং দ্বিবীজপত্রীকে Dicotyledones নাম দেন।

এরপর বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস (১৭০৭-১৭৭৮), ১৭৫৩ খ্রিষ্টাব্দে
Species Plantarum নামক একটি বই লেখেন। উল্লেখ্য তিনি তখন সুইডেন উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ছিলেন। তাঁর গবেষণার মাধ্যমেই উদ্ভিদ বিজ্ঞানের নবযুগের সূচনা হয়। তাঁর রচিত Species Plantarum বইটি উদ্ভিদবিজ্ঞানে এরব নতুন সম্ভাবনার সূত্রপাত ঘটায়। তিনি তাঁর এই বইটিতে দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতিটি প্রকাশিত কারেন। এ বইতে প্রায় ৭৩০০ উদ্ভিদের ব্রণনা ও শ্রেণিবিন্যাস দেয়া আছে। তাঁর এই কাজের জন্য তাকে উদ্ভিদের শ্রেণিবিভাজনের জনক বলা হয়। তিনি তাঁর বইতে উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাসে পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবকের বৈশিষ্টের উপর গুরুত্ব দেন। এ কারণে তার শ্রেণিবিন্যাসকে Sexual System of Plant Classification বলা হয়। উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাসে তার এই অবদানের জন্য অষ্টাদশ শতাব্দীকে লিনিয়াসের যুগ বলা হয়। লিনিয়াসের পর ফরাসী বিজ্ঞানী মাইকেল অ্যাডানসন (১৭২৭-১৮০৬) প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাস নিয়ে গবেষণা করেন। আধুনিক বর্গ ও গোত্রের সাথে সাথে ট্যাক্সার সৃষ্টিতেও তার অবদান আছে।

বেন্থাম হুকার প্রণীত শ্রেণীবিন্যাস
জর্জ বেন্থাম (১৮০০-১৮৮৪) ও যোসেফ ড্যালটন হুকার (১৮১৭-১৯১১)  একত্রে প্রায় ৪০ বছর লন্ডন শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত কিউ উদ্যানে গবেষণা করেন। তাঁরা ১৮৬২-১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দে
Genera Plantarum  নামক বইতে এ.ডি.পি ক্যান্ডল-এর শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি পরিমার্জন করে উদ্ভিদের প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাস দেখান। বইটি তিনটি খণ্ডে প্রকাশিত হয়। বেন্থাম-হুকারকৃত শ্রেণিবিন্যাসকে প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাস নামে অভিহিত করা হয়। বেন্থাম ও হুকার সমগ্র উদ্ভিদজগৎকে দুটি উপজগতে ভাগ করেছেন। এই ভাগ দুটি হলো—
১. অপুষ্পক উদ্ভিদ (Cryptogamia): যে সকল উদ্ভিদের ফুল হয় না। এরা রেণুর মাধ্যমে বংশবিস্তার করে থাকে। এদের আবার তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। এই ভাগগুলো হলো—সমাঙ্গবর্গ, মসবর্গও ফার্ণবর্গ ।  
১.১. সমাঙ্গবর্গ উদ্ভিদ(Thallophyta) : এই গাছগুলো স্যাঁতস্যাঁতে স্থানে দেখা যায়। এরা জলজ, অর্ধজলজ পরিবেশে বসবাস করে। এদের ভ্রূণ সৃষ্টি হয় না। দেহে কোন পরিবহন কোষ নেই। এদের দেহ মূল, কাণ্ড, পাতায় বিভক্ত করা যায় না। এদের অঙ্গজ, যৌন ও অযৌন প্রজনন হয়। সমাঙ্গবর্গের প্রজাতি সংখ্যা প্রায় ১,১০,০০০। ক্লোরোফিলের উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে এদের দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:  শৈবাল ও ছত্রাক।
১.১.১. শৈবাল: শৈবালে ক্লোরোফিল থাকে এবং এরা সবুজ। তাই এরা স্বভোজী, অর্থাৎ নিজের খাদ্য নিজেই তৈরি করতে পারে। এদের সূর্যালোকের উপস্থিতির প্রয়োজন পড়ে। এদের সঞ্চিত খাদ্য শ্বেতসার ও কোষপ্রাচীর সেলুলোজ নির্মিত। যেমন :  স্পাইরোগাইরা।

১.১.২. ছত্রাক: ছত্রাক সবুজ নয়। এদের দেহে ক্লোরোফিল অনুপস্থিত। এরা পরভোজী ও পরজীবী হয়ে জীবন ধারণ করে। এদের সূর্যালোক দরকার হয় না। এদের সঞ্চিত খাদ্য গ্লাইকোজেন। কোষপ্রাচীর কাইটিন নির্মিত। যেমন: পেনিসিলিয়াম।

১.২. মসবর্গ (Bryophyta):  এই জাতীয় উদ্ভিদের দেহ কাণ্ড ও পাতায় বিভক্ত করা যায়। মূলের পরিবর্তে এককোষী রোম নির্মিত রাইজোম পাওয়া যায়। দেহে পরিবহনতন্ত্র নেই, জননাঙ্গ বহুকোষী, ভ্রূণ উৎপন্ন হয়। দেহ বন্ধ্যা কোষ দ্বারা আবৃত। এদের প্রজাতি সংখ্যা প্রায় ২৩০০০। যেমন: Riccia fluitans

১.৩. ফার্ণবর্গ (Pteridophyta): এই জাতীয় উদ্ভিদের দেহ মূল, কাণ্ড, পাতায় বিভক্ত। এরা বহুকোষী ভ্রূণ উৎপন্ন করে, জননাঙ্গ বন্ধ্যা কোষে আবৃত। জীবনচক্রে জনুক্রম দেখা যাব এবং পরিবহনতন্ত্র আছে। এদের প্রজাতি সংখ্যা প্রায় ১০,০০০। যেমন : Pteris vittata।  

২. সপুষ্পক Phanerogamia  উদ্ভিদ:  সপুষ্পক উদ্ভিদে ফুল হয়। এরা বীজের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে। এদের আবার দুই ভাগে ভিভক্ত করা হয়েছে। যথা: নগ্নবীজী ও আবৃতবীজী     

২.১. নগ্নবীজী উদ্ভিদ: এদের আসলে ফুল হয় না, তবে বীজ উৎপন্ন করে। এদের ফল হয় না, কারণ, গর্ভাশয় নেই। বীজ নগ্ন থাকে। এরা আদিম উদ্ভিদ। এদের প্রজাতি সংখ্যা প্রায় ৭০০। যেমন: সাইকাস উদ্ভিদ।

২.২. আবৃতবীজী উদ্ভিদ: এদের ফুল, ফল ও বীজ হয়। বীজগুলো ফলের ভেতর থাকে। বীজপত্রের ভিত্তিতে এদের দুই শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যথা: একবীজপত্রী ও দ্বিবীজপত্রী      

২.২.১. একবীজপত্রী উদ্ভিদ : একবীজপত্রী উদ্ভিদের ফলের বীজপত্র একটি থাকে। এদের মূল গুচ্ছমূল। পাতা সমান্তরাল শিরাবিন্যাস। ফুল ট্রাইমেরাস ও কাণ্ডের পরিবহনতন্ত্র ক্যাম্বিয়ামবিহীন। এদের প্রজাতি সংখ্যা ১৮,৫১৬। যেমন : ধান, গম, আঁখ, কলা, নারিকেল ইত্যাদি।

২.২.২. দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ: এই জাতীয় উদ্ভিদের বীজপত্র দুটি থাকে। এদের প্রধান মূলতন্ত্র থাকে। পাতা জালিকাকার শিরাবিন্যাস, ফুল টেট্রা বা পেন্টামেরাস। কাণ্ডে পরিবহনতন্ত্র বৃত্তাকারে সাজানো ক্যাম্বিয়ামযুক্ত। এদের প্রজাতি সংখ্যা প্রায় ৭৮,২১৫। যেমন : আম, কাঁঠাল, লিচু। ফুলের পাঁপড়ির ভিত্তিতে দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ তিন প্রকার। যথা : পলিপেটাল, গ্যামোপেটালি, মনোক্লামাইডি।        

 ২.২.১. পলিপেটালি: এদের ফুলে পাঁপড়ি থাকে এবং এগুলো পরস্পর পৃথক থাকে। যেমন : কৃষ্ণচূড়া, রাই সরিষা।

২.২.২. গ্যামোপেটালি: এদের পুষ্পে পাঁপড়ি আছে এবং এরা যুক্ত। যেমন : ধুতুরা।

২.২.৩. মনোক্লামাইডি: এদের পাঁপড়ি নেই। যেমন : কাঁঠাল, ঝাউ।

অপরদিকে আরেক ফরাসী বিজ্ঞানী অ্যান্টনি লরেন্ট ডি জুসিয়ে Genera Plantarum নামক বই প্রকাশ করেন ১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দে। তাঁর বইতে উদ্ভিদের পুংকেশর ও স্ত্রীকেশরের উপর ভিত্তি করে শ্রেণিবিন্যাস করা হয়। একই ধারায় বিজ্ঞানী রবার্ট ব্রাউন তার Prodromus Florae Novac Hollanddiein বইতে পুষ্পের গঠন প্রকৃতির ভিত্তিতে শ্রেণিবিন্যাস দেখান। তিনিই প্রথম সপুষ্পক উদ্ভিদ থেকে নগ্নবীজী উদ্ভিদ আলাদা করে দেখান। জেনেভায় জন্মগ্রহনকারী বিজ্ঞানী অগাস্টিন পাইরেমাস ডি ক্যান্ডল (১৭৭৮-১৮৪১) উদ্ভিদবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেন। ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি তার প্রথম পুস্তক Theorie elementaire la botanique প্রকাশ করেন। তার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ হল Prodomus Systematis Neturais Regni Vegetabilis. এই পুস্তকটির প্রথম ৭টি খণ্ড তিনি নিজেই প্রকাশ করেন। এরপর তাঁর পুত্র এ্যালফোনসে ডি ক্যান্ডল এবং কয়েকজন বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরবর্তী ১০টি খণ্ড প্রকাশিত ও সম্পাদিত হয়। এতে তিনি সে সমস্ত পরিচিত বীজের উৎপাদন সম্বন্ধে বর্ণনা দেন। একইভাবে বিজ্ঞানী জর্জ বেন্থাম ও জে. ডি. হুকার মোট তিনটি খণ্ডে Genera Plantarum নামক একটি বই প্রকাশ করেন। ওই বইতে তাঁরা ব্যাপক সাড়াজাগানো শ্রেণিবিন্যাস উপস্থাপন করেন। এটি ছিল সর্বশেষ প্রাচীন প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাস। বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের মতবাদ প্রকাশের পর শ্রেণিবিন্যাসে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়। এই চিন্তাধারার প্রতিফলন ঘটিয়ে জাতিজনি শ্রেণিবিন্যাসের প্রবর্তন করেন জার্মান বিজ্ঞানী আউগুস্ট উলহেম আইখলার (১৮৩৯-১৮৮৭)। এরপর আধুনিক জাতিজনি শ্রেণিবিন্যাস সম্পর্কে জার্মান বিজ্ঞানী এডলফ এঙ্গলার ও কার্ল এ. ই. প্রান্টল তাঁদের গ্রন্থ মোট ২০টি খণ্ডে প্রকাশ করে ব্যাপক সাড়া জাগান। এতে ব্যাকটেরিয়া থেকে শুরু করে আবৃতবীজী উদ্ভিদ পর্যন্ত প্রায় সকল উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাস দেখানো হয়েছে। একই ধারায় ১৯১৫ সালে প্রথম আমেরিকান বিজ্ঞানী সি. ই. বেসি যে শ্রেণিবিন্যাস প্রকাশ করেন যেটি The Phylogenetic Taxonomy of Flowering plants শিরোনামে প্রকাশ করা হয়। এতে তিনি বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদের গোষ্ঠীতে উৎপত্তি ও তাদের বৈচিত্রপূর্ণ বিবর্তন তুলে ধরা হয়। বিজ্ঞানী জন হাচিনসন, রাশিয়ান বিজ্ঞানী আরমেন তাখতাজান ও আমেরিকা বিজ্ঞানী আর্থার ক্রনকুইস্ট পরবর্তীতে গবেষণা করে আধুনিক রূপ দান করেন। শ্রেণিবিন্যাসের প্রকারভেদ কালক্রমে উদ্ভিদের শ্রেণিবিভাজনে নানাবিধ পরিবর্তন ঘটেছে। এই সব শ্রেণিবিভাজনকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। এগুলো হলো—

১. কৃত্রিম শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি: একটি বা কয়েকটিমাত্র বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে উদ্ভিদের যে শ্রেণিবিন্যাস করা হয় তাকে কৃত্রিম শ্রেণিবিন্যাস বলা হয়। লিনিয়াস ও থিওফ্রাস্টাস কর্তৃক সৃষ্ট শ্রেণিবিন্যাস হল কৃত্রিম শ্রেণিবিন্যাস। এ ধরনের শ্রেণিবিন্যাসে অনেক কাছাকাছি বৈশিষ্ট্যের উদ্ভিদগুলো অন্য দিকে চলে যায়।

২. প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি: উদ্ভিদের অঙ্গসংস্থানিক বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে যে শ্রেণিবিন্যাস করা হয় তাকে প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাস বলে। উদ্ভিদের পুষ্পচরিত্র, ভ্রূণের অন্তর্গঠন, ভ্রূণচরিত্র প্রভৃতির উপর ভিত্তি করে এ ধরনের শ্রেণিবিন্যাস করা হয়। এ ধরনের শ্রেণিবিন্যাসে উদ্ভিদগুলোর মধ্যে বিবর্তন বা উৎপত্তিগত সম্পর্ক না-ও থাকতে পারে। ল্যামার্ক, অ্যাডানসন, ডি.ক্যান্ডল, বেনথাম হুকার প্রভৃতি শ্রেণিবিন্যাস প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাসের অন্তর্ভুক্ত।

৩. জাতিজনি শ্রেণিবিন্যাস: এই শ্রেণিবিন্যাসে উদ্ভিদের উৎপত্তি ও বিবর্তন এর বিষয়কে বেশী গুরুত্ব দেয়া হয়। এই শ্রেণিবিন্যাস অধিকতর যৌক্তিক হলেও তা সর্বদা উপযোগী নয়। হাচিনসন, বেসি, তাখতাযান, ক্রনকুইস্ট প্রভৃতি জাতিজনি শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি। প্রত্যেক জাতিজনি শ্রেণিবিন্যাস প্রাকৃতিক হলেও প্রত্যেক প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাসই জাতিজনি নয়।


উদ্ভিদের ব্যবহারিক শ্রেণিবিভাজন:
মানুষের ব্যবহারের প্রকৃতি অনুসারে এই বিভাজন করা হয়। এই ভাগগুলো হলো-