১৩৮০ (১৩.৭৯৮ ±০.০৩৭০০) খ্রিষ্টপূর্বাব্দ।
বিগব্যাং সংঘটিত হয়
০ থেকে ১০-৪৩ সেকেণ্ড পর: এই সময়কে বলা হয়
প্লাঙ্ক-অন্তঃযুগ (Planck epoch)।
এই সময়
প্রাকৃতিক বল সমূহ একীভূত ছিল। বিজ্ঞানীরা এই বলের নামকরণ করেছেন অতি
বৃহৎ বলে (super force)।
১০-৪৩ থেকে ১০-৩৬ সেকেণ্ড পর: এই সময়কে
বলা হয় বৃহৎ একীকরণ অন্তঃযুগ (Grand
unification epoch)। এই সময়
ইলেক্ট্রো-নিউক্লিয়ার বল ও
মহাকর্ষীয় বলএর পৃথকভাবে আত্মপ্রকাশ।
কোয়ার্ককণা (আপ এবং ডাউন) এবং বলবাহী কণা
লেপ্টনের দুটি কণা এবং এদের
প্রতিকণার সৃষ্ট এবং পারস্পরিক সংঘর্ষে এরা ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
১০-৩৬ থেকে ১০-৩২ সেকেণ্ড পর: এই সময়কে বলা হয় প্রসারণ অন্তঃযুগ
(inflationary epoch)।
মহাবিশ্বের দ্রুত সম্প্রসারণ শুরু হয়েছিল।
১০-৩২ থেকে ১০-১২ সেকেণ্ড পর:
বিদ্যুৎচুম্বকীয়-দুর্বলের উদ্ভব। এছাড়া উৎতপ্ত
কোয়ার্ক-গ্লুয়োন
কণা এবং ডব্লিউ এবং জেড বোসন কণা এবং
হিগ্স বোসন কণার উদ্ভব।
১০০০ সেকেন্ডথেকে ৩৮o,০০০
বৎসরের ভিতরে: প্রচুর
ফোটন কণার উদ্ভব।
১৩৬৫ কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দের ভিতরে:
নক্ষত্র সৃষ্টি প্রক্রিয়া শুরু। প্রামাণ্য দুটি নক্ষত্র হলো-
BD +17°
3248 নামক নক্ষত্রের বয়স ধরা প্রায়
১৩৮০ কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দে। প্রকৃত পক্ষে এই
নক্ষত্রসৃষ্টি হয়েছিল বিগব্যাং সংঘটিত
হওয়ার প্রায় ৩.৮০ লক্ষ কোটি থেকে ১৫ কোটি বৎসরের ভিতরে।
HD 140283 নামক
নক্ষত্রেরজন্ম হয়েছিল
বিগব্যাং সংঘটিত হওয়ার প্রায় ৩.৮০ লক্ষ কোটি থেকে ১৫ কোটি বৎসরের
ভিতরে।
১.হেডিন কাল:
৪৬০ কোটি বৎসর থেকে ৪০০ কোটি বৎসর।
২.
আর্কিয়ান কাল:
৪০০
কোটি বৎসর থেকে ২৫০ কোটি
বৎসর
৩. প্রোটেরোজোইক কাল:
২৫০ কোটি
বৎসর থেকে ৫৪.৫ কোটি বৎসর।
৪৬০-৪৫০ খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দ:পৃথিবীর সাথে মঙ্গল
গ্রহের আকারের
থেইয়া নামক
গ্রহের সংঘর্ষে পৃথিবীর একমাত্র গ্রহ
চাঁদের সৃষ্টি হয়েছিল।
৪৫০-৪৪০
কোটি
খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দ:
তরল পৃথিবীর
নানা পদার্থের ক্রিয়া-প্রতিক্রয়ায় সৃষ্টি হয়েছিল, নানা ধরনের রাসায়নিক
পদার্থ। পরবর্তী সময়ে এ সকল পদার্থ খনিজ ও রূপান্তরিত শিলা গঠনে বিশেষ
ভূমিকা রেখেছিল।
৪১৫-৪১০ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দ:
পৃথিবীর গুরুমণ্ডল তৈরি হয়েছিল।
৪১০-৪০০
কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দ:
আদিমআগ্নেয়শিলা(Igneous
rock)
এবং রূপান্তরিত শিলা
তৈরি হয়েছিল।
এছাড়া এই সময়ে সৃষ্ট ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূখণ্ডগুলো
সুদৃঢ় ভিত্তির উপর সংযোজিত হয়ে
ক্র্যাটন(Craton)
তৈরির প্রক্রিয়া সংঘটিত হয়েছিল। এই সময়ের ভিতরে আদি জৈবযৌগ তৈরি হয়েছিল। এর
ভিতরে ছিল এ্যামিনো এ্যাসিড, ডিপেপটাইড,
পেপটাইড হিসেবে
গ্লাইস্লিগ্লাসিন।
৪০০-২৫০ কোটি
খ্রিষ্টপূর্বাব্দ (আর্কিয়ান
কাল,
৪০০
কোটি বৎসর থেকে ২৫০ কোটি
বৎসর)
৪০০-৩৯৬ কোটি
খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দ: এই সময়ে শুরুর দিকে পৃথিবীর
তাপমাত্রা ছিল বর্তমান পৃথিবীর তাপমাত্রার প্রায় তিনগুণ। এই সময় ব্যাপক
অগ্ন্যুৎপাত এই তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছিল।
৩৯৬-৩৯৫ কোটি কোটি
খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দ: এই সময়ে
কানাডিয়ান
ঢাল-ভূখণ্ড (Canadian
Shield)
-সহ আরও কিছু ঢাল তৈরির প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষ হয়েছিল। পৃথিবী বেশ
দ্রুত শীতল হওয়ার প্রক্রিয়ায় ছিল। এই সূত্রে আকাশে মেঘে সৃষ্টির প্রক্রিয়া
শুরু হয়েছিল।
৩৯৫-৩৯২ কোটি কোটি
খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দ: কোটি পূর্বাব্দের
দিকে পৃথিবী অনেকটা শীতল হয়ে পড়েছিল। এতদিনের উত্তপ্ত পৃথিবীর গ্যাসীয় অংশ
আকাশে ঘন মেঘের সৃষ্টি করেছিল। এবং শেষ পর্যন্ত মহাবর্ষণ শুরু হয়েছিল।
৩৯৩ কোটি খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দের ভিতরে মহাদেশীয় ঢাল-ভূখণ্ডগুলো কিছুটা
সুস্থির এবং সুদৃঢ় দশায় পৌঁছেছিল।
৩৯২-৩৮৫ কোটি
খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দ:ই সময় প্রচুর ভারি
উল্কাখণ্ডের পতন ঘটেছিল। ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা পেয়েছিল। আবার একই সাময় প্রবল বৃষ্টিও ছিল।
ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা একটি অস্থির দশায় পৌঁছেছিল।
এর দ্বারা অগভীর এবং ভাসমান স্থলভূমিতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল।
এই সময় গ্রিনল্যান্ডের ফসফেটসমৃদ্ধ খনিজ পদার্থের সৃষ্টি হয়েছিল।এছাড়া ক্ষুদ্র ক্র্যাটনগুলো যুক্ত হয়ে মহাকাশীয়
ক্র্যাটন এবং মহাকাশীয় ঢাল-ভূখণ্ড (Shield)
তৈরির প্রক্রিয়া চলছিল।
৩৮৫ -৩৮০ কোটি
খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দ: এই সময়ের ভিতরে
সৃষ্টি হয়েছিল বৃহত্তর রাশিয়া ইউক্রেইন ঢাল-ভূখণ্ড
(Ukrainian
Shield)
এবং ভোরোনেঝ মাসিফ (Voronezh
Massif ) অঞ্চল।
৩৮০-৩৭০ কোটি
খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দ: ৩৮০ কোটি
খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দে ছোটো ছোটো
ক্র্যাটন ও ঢাল-ভূখণ্ড মিলিত হয়ে প্রথম মহাদেশীয় ক্র্যাটনের উদ্ভব হয়েছিল।
এই সময় গ্রানাইড ব্লক তৈরি হয়েছিল। এই সময় ইউক্রেইন ঢাল-ভূখণ্ড এবং ভোরোনেঝ
মাসিফ সংযুক্ত অবস্থায়
পূর্ব ইউরোপীয় ক্র্যাটনের আদি রূপ লাভ করে। এছাড়া পশ্চিম
গ্রিনল্যাণ্ডের আদি পাললিক শিলা উৎপন্ন এবং ভাল্বারা মহা-মহাদেশের কাপ্ভাল
ক্র্যাটন উৎপন্ন হয়েছিল এই সময়।
৩৭০-৩৬০ কোটি
খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দ: নানা ধরনের
ক্র্যাটন এবং বড় বড় ঢালের সমন্বয়ে বৃহৎভুখণ্ড সৃষ্টির প্রক্রিয়া শুরু
হয়েছিল। এরই মধ্য দিয়ে মহাসাগর তৈরির প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়েছিল। পৃথিবীর
প্রথম মহাদেশ 'ভাল্বারা' আত্মপ্রকাশ করেছিল এই সময়ে।
৩৬০-৩০০ কোটি
খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দ:
৩৪৬ কোটি পূর্বাব্দের
দিকে জিম্বাবুয়ে ক্র্যাটনের প্রধান দুটি অংশ টোক্উই
(Tokwe)
এবং রেডেস্ডেল (Rhodesdale)
প্রাচীন প্রস্তর পাথুরে ভূখণ্ড তৈরি হয়েছিল।
৩৩০ কোটি পূর্বাব্দে টোক্উই
(Tokwe)
এবং রেডেস্ডেল (Rhodesdale)
সুস্থির দশায় পৌঁছেছিল। এই পাথুরে অঞ্চল একত্রিত হয়ে পরে জিম্বাবুয়ে ক্র্যাটনের
সৃষ্টি করে। এই সূত্রে ৩৩০ কোটি পূর্বাব্দকে এই ক্র্যাটনের সুস্থিরকালও ধরা হয়।
৩২০ কোটি পূর্বাব্দে
প্যালেয়োআর্কিয়ান যুগশেষ হয়। এর পর শুরু হয়
মেসোআর্কিয়ান যুগ (৩২০ কোটি থেকে ২৮০ কোটি পূর্বাব্দ)। এই
যুগের শুরুতে উর মহাদেশের প্রাথমিক গঠন সম্পন্ন হয় এবং ধীরে ধীরে মহাকাশীয় অবয়ব
ধারণের পথে অগ্রসর হয়।
৩১০ কোটি
পূর্বাব্দে ভাল্বার একটি পরম আকার লাভ করেছিল। কিন্তু এরপর থেকে এর বড় বড় ভূখণ্ড
বিচ্ছিন্ন হতে থাকে। বিশেষ করে
বাল্টিক ঢাল-ভূখণ্ড কোলা সাগরের নিচে ডুবে যায়।
৩০০ কোটি অব্দের দিকে শেষ পর্যন্ত ভাল্বারা ভেঙে যেতে থাকে।
২৮০ কোটি পূর্বাব্দের ভিতরে এই ভাঙন
চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। আর এই বিভাজনের সূত্রে ২৭০
কোটি পূর্বাব্দেআর্কিয়ান
কাল-এর
নিয়ো-আর্কিয়ান যুগে,
নতুন মহা-মহাদেশ
কেনোরল্যান্ড
-এর সৃষ্টি হয়েছিল।
৩৮০ কোটি বছর
আগে ভূস্তরে লৌহ-অধঃক্ষেপ জমা হতে থাকে।
৩৬০ কোটি বৎসর আগে পৃথিবীর ভূভাগ একত্রিত হয়ে একটি বিশাল ভূখণ্ড
তৈরি করেছিল। ৩১০ কোটি বৎসর আগ এই ভূখণ্ডটি একটি পূর্ণাঙ্গ
রূপ লাভ করেছিল। বিজ্ঞানীরাএই মহা-মহাদেশের নামকরণ করেছেন
ভাল্বারা (Vaalbara)।
৩০০
কোটি বৎসর আগে এমনি আরও একটি মহা-মহাদেশের সৃষ্টি হয়েছিল। বিজ্ঞানীরা এর
নাম দিয়েছেন
উর।
২৭০
কোটি বৎসর নতুন
মহা-মহাদেশ কেনোরল্যান্ড(Kenorland)-এর
সৃষ্টি হয়েছিল।
২৫০ কোটি বৎসর আগে সাগরে পানির উপরিভাগে বিপুল পরিমাণ
ব্যাক্টেরিয়ার স্তর জমতে থাকে। এই ব্যাক্টেরিয়াগুলোর জীবাশ্ম
আবিষ্কৃত হওয়ার পর বিজ্ঞানীরা এই যুগের প্রাণের অস্তিত্বের প্রত্যক্ষ
প্রমাণ উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। এই জীবাশ্মগুলোকে
bacteria microfossils
হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
২৫০
কোটি বৎসর আগে
নতুন মহা-মহাদেশ কেনোরল্যান্ড (Kenorland)একটি নতুন অবয়ব নিয়ে উপস্থিত
হয়েছিল।
১৮০ কোটি বৎসরের দিকে এই মহা-মহাদেশটি পুনর্বিন্যাসিত
হয়ে নতুন রূপ লাভ করে। এই
মহাদেশের নামকরণ করা হয়েছে—
কলাম্বিয়া মহা-মহাদেশ (Columbia
supercontinent)।
২৪০
কোটি বৎসরের ভিতরে
সাগরজলে
সায়ানোব্যাক্টেরিয়া(cyanobacteria)ছেয়ে গিয়েছিল।
এই সময়ে পৃথিবীর তাপমাত্রা
এতটাই কমে যায় যে, সারা পৃথিবী জুড়ে শৈতপ্রবাহ শুরু হয় এবং শেষ পর্যন্ত পৃথিবীর
জলভূমি জমে যায় এবং ব্যাপক তুষারপাতে পৃথিবীর স্থলভূমি বরফে ঢেকে যায়। ফলে
পৃথিবীতে প্রথমবারের মতো বরফযুগের আবির্ভাব ঘটে। একে বলা হয় হুরোনিয়ান বরফযুগ (Huronianglaciation)।
২১০ কোটি বৎসর আগে
এই বরফযুগের সমাপ্তি ঘটে।
২৫০-১৬০
কোটি বৎসর আগে পানিতেসু-প্রাণকেন্দ্রিক
কোষ(Eukaryotic
cell)
যুক্ত আদি উদ্ভিদ ও প্রাণীর উদ্ভব হয়েছিল।
এই সময়
গ্রাইপানিয়া
(Grypania
spiralis)
নাম শৈবালের উদ্ভব হয়েছিল।
ধারণা করা হয় এই যুগেই নিউকিলয়াসযুক্ত শৈবাল ও প্রোটোজোয়া পর্বের
প্রাণীসমূহের আর্বিভাব ঘটেছিল।
৫৪
কোটি ২০ লক্ষ বৎসর আগে এই কালের প্রথম যে যুগকে চিহ্নিত করা হয়, তা হলো
প্যালোজোয়িক
(Paleozoic)
যুগ। শেষ হয়েছিল ৪৮
কোটি ৮০ লক্ষ বৎসর আগে। এই
যুগের শুরুতে
রোডিনা মহা-মহাদেশ
অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। এই মহা-মহাদেশটি
প্রাথমকিভাবে তিনটি ভাগে বিভাজিত হয়েছিল। এই ভাগ তিনটি হলো —প্রোটো
লাউরাসিয়া (Proto-Laurasia),
প্রোটো-গণ্ডোওয়ানা (Proto-Gondwana)
এবং ক্ষুদ্রাকার কঙ্গো ক্রেটন। প্রোটো লাউরাসিয়া দক্ষিণ মেরুর দিকে ঘুরে যায়।
পক্ষান্তরে এর উল্টোদিকে ঘুরে প্রোটো-গণ্ডোওয়ানা। ৬০
কোটি বৎসর আগে কঙ্গো
ক্রেটন এই দুটি মহা-মহাদেশের মধ্যস্থলে চলে আসে। সব মিলিয়ে তৈরি হয় একটি বৃহৎ
মহা-মহাদেশ। একে বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন
প্যান্নোশিয়া (Pannotia)।
৫৩ কোটি বৎসর আগে
প্রথম শক্ত খোলসযুক্ত প্রাণীর আবির্ভাব ঘটে। এই সময় আর্থোপোডা পর্বের
ট্রাইলোবিটা (Trilobita)
নামক প্রাণীর আবির্ভাব ঘটে ৫২
কোটি ৬০ লক্ষ বৎসর আগে। এছাড়া
মোলাস্কা পর্বের প্রাণীর আবির্ভাব ঘটে এই অধিযুগে।
৫০
কোটি ৪০ লক্ষ বৎসর আগে নবগঠিত মহা-মহাদেশ ভেঙে যায় এবং এর ভূখণ্ডগুলো নতুনভাবে
সজ্জিত হয়ে চারটি প্রধান মহা-মহাদেশে পরিণত হয়। এই মহাদেশগুলো হলো লাউরেনশিয়া (Laurentia),
বাল্টিকা (Baltica),
সাইবেরিয়া (Siberia)
এবং গণ্ডোওয়ানা (Gondwana)।
৪৮ কোটি বৎসর আগে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের
আধিক্যের ফলে, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল অত্যন্ত উত্তপ্ত ছিল। কিন্তু পরবর্তী ২ কোটি
বৎসরের ভিতরে উদ্ভিদর ব্যাপক বিকাশের ফলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ অনেক কমে
যায়। ফলে পুরো পৃথিবী জুড়ে শৈত প্রবাহ শুরু হয়খ এই সূত্রে
৪৬
কোটি বৎসর আগেএ্যান্ডিয়ান-সাহারান বরফযুগ (Andean-Saharan)
এই বরফ যুগের সূচনা হয়। এই বরফযুগের শেষ হয়েছিল ৪৩ কোটি বৎসর পূর্বে। অর্থাৎ এই
অধিযুগটির পুরোটাই বরফযুগের ভিতর অতিবাহিত হয়েছিল। তবে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি
পড়েছিল মেরু অঞ্চলে। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের কারণে বহু প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে
গিয়েছিল। তবে মস বর্গের উদ্ভিদের আবির্ভাব ঘটেছিল এই অধিযুগে। এছাড়া আদিম হাঙর
ও চোয়ালযুক্ত মাছের আবির্ভাবও এই যুগে ঘটেছিল।
৪১
কোটি ৮০ লক্ষ বৎসর আগে ভূখণ্ডগুলো (৫০ কোটি ৪০
লক্ষ বৎসর আগে ভেঙে যাওয়া মহা-মহাদেশের খণ্ডসমূহ) যে অস্থায়ী
রূপ লাভ করেছিল, তারই একটি দশার নাম ওল্ডেরিয়া বলা হয়। এই
সময়ে পৃথিবী বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। সাগরের পানিতে
প্রবালকীটের জন্ম হয়েছিল। এবং সেই সূত্রে সাগর তলে প্রবাল-প্রাচীর তৈরির
প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। এছাড়া অস্থিময় মাছের উদ্ভব হয়েছিল এই অধিযুগে। এই সময়ের
বিশাল আকারের আর্থ্রোপোডার উদ্ভব হয়েছিল। বিশেষ করে সাগর বৃশ্চিক
Eurypterid
-এ সাগরের রাজা হয়ে হয়ে
উঠেছিল। এদের আকার ছিল ৬-৭ ফুট। এই অধিযুগে
৪১ কোটি ৮০ লক্ষ বৎসর আগে
সারকোপটেরিজাই জাতীয়
কিছু প্রাণী সাগরে জলে বসবাস করতো।
ধারণা করা হয়,
কোন কোন অঞ্চলে
পানি কমে যাওয়ায় ও তাপমাত্রার পরিবর্তনের কারণে ভার্টিব্রেটা উপপর্বের কিছু
প্রাণী ডাঙার দিকে উঠে আসা শুরু করে। ফলে পানিতে বসবাসকারী প্রাণীর পাখনা ক্রমে
ক্রমে পা-এ রূপান্তরিত হয়। এর ফলে এদের দেহের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে।
আদিকালের সেই চার পেয়ে প্রাণিগুলোকে
সাধারণভাবে বলা হয়
টেট্রাপোড (Tetrapod)।
৩৮
কোটি বৎসর আগে ওল্ডেরিয়া মহা-মহাদেশ বিভাজিত হয়ে যায় এবং নতুনভাবে সজ্জিত হতে
থাকে। এরই ভিতর ৩৬ কোটি বৎসর
আগে কারু বরফযুগের
সূচনা ঘটে।৩১ কোটি ৮০
লক্ষ বৎসর থেকে ২৯ কোটি ৯০ লক্ষ বৎসর আগে সংঘটিত আন্ত-বরফযুগটিকে বলা হয়
পেনসিলভেনিয়ান আন্ত-বরফ
যুগ। এই সময়
অষ্ট্রেলিয়া থেকে ভারতবর্ষ পর্যন্ত বরফে ঢাকা পড়ে গিয়েছিল। তবে এ্যান্টর্কটিকা
পর্যন্ত এই বরফস্তর সম্প্রসারিত হয়েছিল কিনা তার নমুনা পাওয়া যায় না।
৩০
কোটি বৎসর আগের
বরফ-শীতল পৃথিবীতে
জন্ম নিয়েছিল
ইউরোমেরিকা নামক একটি মহাদেশ। একই সময় আরও একটি বড় মহা-মহাদেশ তৈরি হয়েছিল।
বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন
প্যাঙ্গিয়া। এই মহা-মহাদেশটির স্থায়ীত্বের পুরো সময়টুকুই কারু বরফযুগের
অধীনে ছিল।
প্যাঙ্গিয়া তৈরির সময় বিশালাকারের বিভিন্ন ভূখণ্ড যুক্ত হয় এবং এই ভূখণ্ড
যুক্ত হওয়ার সময় বিশালাকার সব পর্বতমালার সৃষ্টি হয়েছিল।
২৪ কোটি ৫০ লক্ষ বৎসর
আগে
ইক্থায়োসর
(Ichthyosaur)
নামক
সামুদ্রিক প্রাণীর বর্গের প্রাণীকূলের আবির্ভাব ঘটেছিল। এদের
থেকে ডলফিন এবং তিমি জাতীয় জলচর প্রাণীর আবির্ভাব ঘটেছিল আরও পরে।
২৩ কোটি বৎসর আগে
প্রথম ডাইনোসরের আবির্ভাব ঘটেছিল। ৬
কোটি ৪০ লক্ষ বৎসর পূর্বকাল শেষে এদের অধিকাংশ প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
২২কোটি ৫০ লক্ষ বৎসরের দিকে স্তন্যপায়ী
প্রাণীর আবির্ভাব ঘটে। এই সময়ে কিছু উড়ন্ত সৃরীসৃপ (pterosaurs)
-এর আবির্ভাবও ঘটে। এই সময় কিছু কিছু স্থল-সরীসৃপ পুনরায় জলচর
হয়ে উঠে।
২০ কোটি বৎসর
প্যাঙ্গিয়ামহা-মহাদেশটি ভেঙ্গে নতুন রূপ লাভ করেছিল। এর
উত্তরাংশকে লাওরেশিয়াএবং
দক্ষিণাংশকে বলা হয় গোণ্ডোয়ানা।
এই সময় Pareiasauridae
গোত্রের আদি ডাইনোসরের উদ্ভব ঘটেছিল। এদের ভিতরে উল্লেখযোগ্য ডাইনোসর ছিল-
এ্যন্থোডোন।
১৬ কোটি বৎসর আগে চতুষ্পদী মেরুদণ্ডী
প্রাণী
টেট্রাপোড থেকে
পাখির
উদ্ভব ঘটেছিল।
৭ কোটি বৎসর আগে ইন্দো-অস্ট্রেলীয় প্লেট প্রতি বৎসর ১৫ সেন্টিমিটার বেগে
ইউরেশীয় প্লেটের দিকে অগ্রসর হয়েছিল। এই সময়
ইউথেরিয়া
থাকের
স্তন্যপায়ী এবং
প্রথম
গর্ভফুলযুক্ত
স্তন্যপায়ী
প্রাণীর আবির্ভাব ঘটেছিল।
৫কোটি বৎসর আগে এই প্লেট দ্রুত টেথিস সাগরে অতি নিকটে চলে আসে। ফলে সাগরতল
সঙ্কুচিত হয়ে নানারকম উঁচু-নিচু অবস্থায় পৌঁছায়। সেই সাথে অসংখ্য অগ্ন্যুৎপাত
ঘটে। এরই সূত্রে
হিমালয়
পর্বতমালার উত্থান ঘটতে থাকে।
৪ কোটি ৩০ লক্ষ বৎসর আগে ইন্দো-অস্ট্রেলিয়ীয় প্লেট বিভাজিত হয়ে ভারতীয় এবং
অস্ট্রেলীয় প্লেটে বিভক্ত হয়ে যায়।