২৮ বৎসর অতিক্রান্ত বয়স
নজরুল ইসলামের ২৮ বৎসর অতিক্রান্ত বয়স শুরু হয়েছিল ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ (২৫ মে ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দ) থেকে। শেষ হয়েছিল ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৫ (বৃহস্পতিবার ২৪ মে ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দ)
২৫-৩১ মে ১৯২৭ (১১-১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৪) গ্রন্থটির শুরুতে ছিল কবিতাকারে লেখা দুটি চরণ। কার উদ্দেশ্যে
রচিত তার উল্লেখ নেই। ধারণা করা হয় এই চরণ দুটি ছিল শামাসুন নাহারের জন্য।
-আমার
এই লেখাগুলি এই মাসে পত্রিকায় প্রকাশিত রচনা
অক্টোবর ১৯২৭ (১৪ আশ্বিন-১৪ কার্তিক ১৩৩৪) এই অনুষ্ঠানে উমাপদ ভট্টাচার্য নজরুলের রচিত একটি
গান পরিবেশন করেন। গানটি হলো-
মার্চ ১৯২৮ (১৭ ফাল্গুন- ১৮ চৈত্র ১৩৩৪) উল্লেখিত শর্তে গ্রামোফোন কোম্পানি রাজি হলে- নজরুল ধীরেন্দ্রচন্দ্রকে তাঁর রচিত
গান শেখানো শুরু করেন। এই প্রশিক্ষণের সূত্রে প্রথম কে মল্লিকের কণ্ঠে এই বছরের
সেপ্টেম্বর মাসে এইচএমভি থেকে দুটি গান প্রকাশিত হয়েছিল। গান দুটি ছিল 'বাগিচায়
বুলবুলি তুই' এবং 'আমারে চোখ ইশারায় ডাক দিয়ে যায়। তবে নজরুল এই পত্রিকার জন্য
জাগরণ
নামে একটি কবিতা রচনা করেছিলেন। কবিতাটি পরে
সন্ধ্যা কাব্যগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
এই বছরের শুরু থেকেই নজরুল কৃষ্ণনগরে ছিলেন। তবে মার্চ মাসে
তিনি কৃষ্ণ থেকে বসবাসের জন্য কলকাতায় চলে এসেছিলেন। নজরুলে তাঁর ২৭ বৎসর
অতিক্রান্ত বয়সের শেষের দিকে গজল রচনায় বিশেষভাবে উৎসাহিত হয়ে উঠেছিলেন। ২৮ বৎসর
অতিক্রান্ত বয়সের শুরু থেকে সে উৎসাহে ভাটা পড়ে নি। এই বছরে প্রকাশিত হয়েছিল
নজরুলের একাধিক গ্রন্থ। সব মিলিয়ে নজরুলের ২৮ বৎসর অতিক্রান্ত বয়স হয়ে উঠেছিল
বৈচিত্র্যময়।
প্রসঙ্গ: কবিতা/গান। জামালউদ্দীন
জামাল উদ্দিন আফগানি (১৮৩৮/১৮৩৯-৯ মার্চ
১৮৯৭) ছিলেন ঊনবিংশ শতকের একজন ইসলামি আদর্শবাদী, ইসলামি আধুনিকতাবাদের অন্যতম জনক ও প্যান ইসলামিক ঐক্যের একজন প্রবক্তা।
তাঁর স্মরণে নজরুল 'জামালউদ্দীন' শিরোনামে একটি কবিতা রচনা করেছিলেন। নজরুল
ইনস্টিটিউট থেকে প্রকাশিত 'নজরুল সঙ্গীত সংগ্রহ'-এ এই কবিতাটি গান হিসেবে সংকলিত
হয়েছে। নজরুল-রচনাবলী
জন্মশরবর্ষ সংস্করণ নবম খণ্ডে (বাংলা একাডেমি ঢাকা। আশ্বিন ১৪২২/অক্টোবর
২০১৫। পৃষ্ঠা ৯৯) এটি 'অগ্রন্থিত কবিতা' অংশে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। মুদ্রিত
কবিতার নিচে লেখা আছে 'বুলবুল ১৩৩৪। বুলবুল পত্রিকার কোন সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল,
তার উল্লেখ নেই। তাই এই কবিতাটি কবির ২৭-২৮ বছরের রচনা হিসেবে উল্লেখ করা হলো।
সালাম,সালাম,জামালউদ্দীন [তথ্য]
২৮ বৎসর অতিক্রান্ত বয়সের শুরুর দিকে, কবি বেনজির আহমদ 'নওরোজ' নামক একটি মাসিক পত্রিকা
প্রকাশের উদ্যোগ নেন। এই পত্রিকার মুদ্রাকর ও প্রকাশক ছিলেন আফজাক-উল হক। পত্রিকাটির অফিস ছিল ৪৫-বি মেছুয়া বাজার স্ট্রিট।
এই পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগে নজরুল উৎসাহিত হয়ে পত্রিকার সম্পাদক-কে একটি স্বাগত
কথন পাঠিয়েছিলেন ২৭ মে (শুক্রবার ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৪)। এই কথনটি গণবাণী পত্রিকায়
প্রকাশিত হয়েছিল।
[নওরোজ সম্পাদক-কে লেখা
পত্র]
উল্লেখ্য, এই পত্রিকাটি প্রকাশের আগেই, নজরুল
মাসিক ১২৫ টাকা সম্মানীতে নওরোজ পত্রিকায় যোগদান করেন। সে সময় পত্রিকা কর্তৃপক্ষের
সাথে নজরুলের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি অনুসারে,
চুক্তি পর্বর্তী নজরুলের সকল রচনার উপর নওরোজের দাবি থাকবে বলে
স্বীকৃত হয়।
এই পত্রিকায় নজরুলের প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় '
নওরোজ'
শিরোনামে। এটি মূলত নওরোজ পত্রিকা নিয়ে রচিত।
জুন ১৯২৭ (১৮ জ্যৈষ্ঠ-১৫ আষাঢ় ১৩৩৪)
চুক্তি অনুসারে এই সময়ের নজরুলের সকল রচনা নওরোজ পত্রিকায় প্রকাশিত হতে থাকে। এই সূত্রে নজরুলের কুহেলিকা উপন্যাসের প্রথম পরিচ্ছেদ প্রকাশিত হয়েছিল পত্রিকাটির আষাঢ় ১৩৩৪ সংখ্যায়। তবে এই মাসে দুটি রচনা কল্লোল পত্রিকার আষাঢ় ১৩৩৪ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। এই মাসে যে সকল রচনা পত্রিকান্তরে প্রকাশিত হয়েছিল, সেগুলো হলো-
এই মাসে প্রকাশিত পূর্বে রচিত গান।
সম্ভবত জুন মাসের শেষের দিকে খাদেমুল ইসলাম নামক একটি সংগঠনের আমন্ত্রণে নজরুল
নোয়াখালি ভ্রমণ করেন। নজরুল রেলপথে কৃষ্ণনগর থেকে
নোয়াখালির সোনাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছানোর পর, সংগঠনের সদস্যরা একটি আট ঘোড়ার গাড়িতে
করে, তিন মাইল পথ শোভাযাত্রা-সহ খাদেমুল ইসলামের অফিসে আনা হয়। কবির আগমন উপলক্ষে
যাত্রাপথে প্রায় ডজন তোরণ তৈরি করা হয়েছিল। তোরণে লেখা ছিল- 'স্বাগতঃ ইসলামী
রেনেসাঁর অগ্রদূত', স্বাগত আমাদের প্রাণের কবি' ইত্যাদি।
কল্লোল পত্রিকার 'চৈত্র ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ (ফেব্রুয়ারি ১৯২৭
খ্রিষ্টাব্দ) সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। এই পত্রিকা থেকে গানটি সওগাত পত্রিকার
আষাঢ় ১৩৩৪ সংখ্যায় পুনঃপ্রকাশিত হয়েছিল।
বঙ্গবাণী পত্রিকার 'জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ' সংখ্যায় (মে, ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দ) গানটি প্রথম প্রকাশিত
হয়েছিল। স্বরলিপিকার ছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম।
নওরোজ পত্রিকার আষাঢ় ১৩৩৪ (জুন-জুলাই
১৯২৭) সংখ্যায় স্বরলিপি-সহ প্রকাশিত হয়েছিল।
নজরুলের পৌঁছানোর পরের দিন একটি আড়ম্ভরপূর্ণ অনুষ্ঠানে
নোয়াখালী বাসীর পক্ষ থেকে তাঁকে সম্বর্ধনা দেন
খাদেমুল ইসলাম। এই অনুষ্ঠানে কবির উদ্দেশ্যের রচিত মানপত্র
প্রদান করা হয়। ওই মানপত্রটি সংগঠনের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে পাঠ করেছিলেন- সংগঠনের
সম্পাদক মজিবুর রহমান মোক্তার। এই মানপত্রে কবিকে 'বিপ্লবের মন্ত্রদাতা দীক্ষাগুরু'
নামে সম্ভাষিত করা হয়েছিল। এরপর নজরুল তাঁর স্বরচিত 'ওঠ রে চাষী জগৎবাসী-সহ তিনটি
গান পরিবেশন করেন। শ্রোতাদের অনুরোধে তিনি এই গানটি দ্বিতীয়বার পরিবেশন করেছিলেন।
এর পরে আর একদিন নোয়াখালী বাসীর পক্ষ থেকে নোয়াখালি টাউন হলে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেছিলেন রায় বাহাদুর শুভময় দত্ত। এই অনুষ্ঠানের
উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন চট্টগ্রামের অস্ত্রাগার লুণ্ঠন মামলা-খ্যাত বিপ্লবী
লোকনাথ বল। অনুষ্ঠানে নজরুলের উদ্দৈশ্যে মানপত্র পাঠ করেছিলেন নোয়াখালী বারের
খ্যাতনামা উকিল মনোমোহন কাঞ্জিলাল। এই অনুষ্ঠানে কবিকে একটি সোনার দোয়াত-কলম উপহার
দেওয়া হয়েছিল। অনুষ্ঠান শেষে মনোমোহন কাঞ্জিলালের স্ত্রীর অনুরোধে তাঁদের বাসায় একটি
গানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানের জন্য তিন ফুট উঁচু একটি মঞ্চ তৈরি করা
হয়। এই অনুষ্ঠান দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে প্রায় হাজার চারেক দর্শক জমায়েত
হয়েছিল। অনুষ্ঠান রাত ১১টা পর্যন্ত চলেছিল।
এই সময় লক্ষ্মীপুরের জেলেরা একটি অনুষ্ঠানে নজরুলকে সংবর্ধনা করে। এরপর নোয়াখালীর
মুসলিম যুব সমিতির উদ্যোগে একটি নাটক মঞ্চস্থ হয়েছিল। এই নাটকের জন্য তিনি আবার
নোয়াখালীতে ফিরে এসেছিলেন। এই সময় হবীবুল্লা বাহারের টেলিগ্রাম পেয়ে নজরুল নোয়াখালী
থেকে আবার লক্ষ্মীপুর যান। সেখানে সন্ধ্যা বেলায় লক্ষ্মীপুর মডেল স্কুলের মাঠে
নজরুলকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সভায় কবিকে একটি রুপোর মালা ও বাটি উপহার দেওয়া হয়। এই
সভামঞ্চে নজরুল বক্তৃতা দেন। বক্তৃতা শেষে তিনি কৃষাণের গান, 'কাণ্ডারী হুঁশিয়ার',
'শিকল পরার গান' ইত্যাদি পরিবেশন করেন। এরপর নজরুল কৃষ্ণনগরে ফিরে আসেন।
জুলাই ১৯২৭ (১৬ আষাঢ়- ১৫ শ্রাবণ ১৩৩৪)
কৃষ্ণনগর থেকে নজরুল কলকাতা এসে ৪০ বি মেছুয়া বাজার স্ট্রিট নওরোজ অফিসে আসেন।
জুলাই মাসের ৭ তারিখে (বৃহস্পতিবার, ২২ আষাঢ় ১৩৩৪), সে সময়ের প্রখ্যাত নাট্যকার মন্মথ রায়কে একটি চিঠি
লেখেন। এই চিঠি থেকে জানা যায়- মন্মথ রায়ের রচিত নাটক পাঠ করে অত্যন্ত মুগ্ধ হন।
বিশেষ করে মন্মথ রায়ের রচিত 'সেমিরিমিস',
'ইলা', 'স্মৃতিছায়া' ইত্যাদি পাঠ করে তাঁর এই মুগ্ধতার সৃষ্টি হয়েছিল।
এই চিঠিতে তিনি মন্মথ রায়কে নওরোজে লেখা পাঠানোর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন।
[মন্মথ
রায়-কে লেখা
পত্র]
তাঁর বিভিন্ন গ্রন্থ প্রকাশের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এই সূত্রে জুলাই মাসে নজরুলের একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত
হয়েছিল বিভিন্ন পত্রিকায় বা গ্রন্থাকারে। এগুলো ছিল-
১৯২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ জুন (সোমবার ১২ আষাঢ় ১৩২৯ বঙ্গাব্দ) কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের
স্টুডেন্টস হলে সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের স্মরণে শোকসভার আয়োজন করা হয়। ওই সভার
সভাপতিত্ব করেছিলেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। শোকসভায় নজরুল সদ্য রচিত এই গানটি
পরিবেশন করেছিলেন।
গানটি
বিজলী
পত্রিকার 'শ্রাবণ ১৩২৯'
(জুলাই-আগষ্ট ১৯২২) সংখ্যায়
প্রকাশিত হয়েছিল। তখন এর শিরোনাম ছিল-'সত্যেন্দ্র-প্রয়াণ'।
মাসিক বসুমতী পত্রিকা'র 'শ্রাবণ ১৩২৯' সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। শিরোনাম '."সত্য"-প্রয়াণ-গীতি'।
শিরোনামের নিচে ছিল '(বাউলের সুর)। পৃষ্ঠা: ৫৩৮।
ফণি-মনসা
প্রথম সংস্করণ [শ্রাবণ ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ (জুলাই ১৯২৭)
সত্যেন্দ্র-প্রয়াণ-গীতি'
শিরোনামে অন্তর্ভুক্ত গানটির সাথে রচনার স্থান ও কাল
উল্লেখ আছে 'কলিকাতা, শ্রাবণ ১৩২৯'। সম্ভবত
ফণি-মনসায় তারিখটি ভুলক্রেমে 'শ্রাবণ ১৩২৯' মুদ্রিত হয়েছিল।
প্রথম অঙ্ক, প্রথম দৃশ্য। মেঘের বাদ্য ও নৃত্যের নৈপথ্যে পরিবেশিত গান
প্রথম অঙ্ক, প্রথম দৃশ্য। বৃষ্টিধারার গান।
প্রথম অঙ্ক, প্রথম দৃশ্য। বৃষ্টিধারার গান (নৃত্যসহ)।
প্রথম অঙ্ক, দ্বিতীয় দৃশ্য। যন্ত্র, ইট, কাঠ, পাথর, লোহা'র বন্দনাগীত
প্রথম অঙ্ক, দ্বিতীয় দৃশ্য। সৈন্যগণের গান
গ্রন্থটিতে মোট ৮টি প্রবন্ধ স্থান পেয়েছিল। এই প্রবন্ধগুলোর ৬টি ধূমকেতু, ১টি গণবাণী
পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। অবশিষ্ট ১টি রচিত হয়েছিল ১৩৩৩
বঙ্গাব্দের ৯ আশ্বিন তারিখে কৃষ্ণনগরে।
নিচে প্রবন্ধগুলোর প্রকাশ ও রচনার কালানুক্রম অনুসারে তুলে ধরা হলো।
আলোর
মতো জ্বলে ওঠো। ঊষার মতো ফোটো।
এই গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত কবিতা ও গানের কালানুক্রমিক তালিকা
তিমির চিরে জ্যোতির মতো প্রকাশ হয়ে ওঠো।
তামাকুমণ্ডি।
চট্টগ্রাম ৩০-৭-২৬।
গ্রন্থটি উৎসর্গ করা হয়েছিল হবীবুল্লাহ বাহার ও শামসুন নাহারকে। উৎসর্গ পত্রে
ছিল-
বাহার ও নাহারকে দিলাম-
কে তোমাদের ভালো?
'বাহার' আনো গুল্শানে গুল্, 'নাহার' আনো আলো।
'বাহার' এলে মাটির রসে ভিজিয়ে সবুজ প্রাণ,
'নাহার' এলে রাত্রি চিরে জ্যোতির অভিযান।
তোমরা দু'টি ফুলের দুলাল, আলোর দুলালী,
একটি বোঁটায় ফুটলি এসে,- নয়ন ভুলালি।
নামে নাগাল পাইনে তোদের নাগাল পেল বাণী,
তোদের মাঝে আকাশ ধরা করছে কানাকানি!
তামাকুমণ্ডি।
চট্টগ্রাম ৩১-৭-২৬।
শেষের পাঁচটি কবিতার রচনাকাল বা প্রকাশকাল সম্পর্কে জানা যায়
না। মূলত এই কবিতাগুলো সিন্ধু-হিন্দোল কাব্যগ্রন্থে প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত
হয়েছিল।
আগষ্ট ১৯২৭ (১৬ শ্রাবণ- ১৪ ভাদ্র ১৩৩৪)
কুহেলিকা'।
নওরোজ পত্রিকার সাথে চুক্তি অনুসারে
প্রকাশিত ধারাবাহিক উপন্যাস কুহেলিকা
র
পঞ্চম পরিচ্ছেদ।
এই মাসের শুরু থেকেই নজরুলের সদ্য প্রকাশিত গ্রন্থাদি বাজেয়াপ্ত করার পাঁয়তারা শুরু
হয়। এই মাসের ৫ তারিখে (শুক্রবার ২০ শ্রাবণ ১৩৩৪), পাবলিক প্রসিকিউটর তারকানাথ সাধু,
রুদ্র-মঙ্গল বাজেয়াপ্ত করার প্রস্তাব রাখেন। তবে তৎক্ষণাৎ সরকার কোনো সিদ্ধান্ত
প্রদান করেন।
৯ আগষ্ট (মঙ্গলবার, ২৪ শ্রাবণ ১৩৩৪) নলিনীকান্ত সরকারকে বাঁধনহারা পত্রোপন্যাস
উৎসর্গ করেন।
১২ আগষ্ট (শুক্রবার, ২৭ শ্রাবণ ১৩৩৪) পাবলিক প্রসিকিউটর ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের ডেপুটি কমিশনার
ফণী মনসা কাব্যগ্রন্থ্ বাজেয়াপ্ত করার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেন।
কিন্তু আইনি পরমার্শক শাখার অনুমোদন না পাওয়ায় গ্রন্থটি বাজেয়াপ্ত হয় নি।১৭
আগষ্ট (বুধবার, ৩২ শ্রাবণ ১৩৩৪), কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার
ফেয়ারওয়েদার, পাবলিক প্রসিকিউটর তারকানাথ সাধুর সুপারিশ অনুসারে নজরুলের রুদ্রমঙ্গল
কাব্যগ্রন্থ বাজেয়াপ্ত করার জন্য চিফ সেক্রেটারিকে পরামর্শ দেন। সে সময়ের
স্বরাষ্ট্র বিভাগের নির্দেশে স্পেশাল ব্রাঞ্চের ডেপুটি কমিশনার এমএইচ এইচ মিলস
তদন্ত প্রতিবেদনে জানান যে, নজরুল উক্ত গ্রন্থের প্রথম সংস্করণ ছাপিয়েছেন ১০০ কপি।
এই গ্রন্থ প্রকাশের পর সরকারে মনোভাব বুঝবার জন্য নজরুল এত অল্প সংখ্যক গ্রন্থ
ছাপিয়েছেন। তবে তিনি আরও ২০০ কপি ছাপাবেন।
এই দিন নজরুল একটি কবিতা রচনা করেন। এটি হলো-
এই মাসে প্রকাশিত
রচনা
সেপ্টেম্বর ১৯২৭ (১৫ ভাদ্র
-১৩ আশ্বিন ১৩৩৪)
২ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার ১৬ ভাদ্র ১৩৩৪) নজরুল একটি কবিতা রচনা করেন। কবিতাটি হলো-
৭ সেপ্টেম্বর (বুধবার ২১ ভাদ্র ১৩৩৪), বর্ধমানে 'অলবেঙ্গল ইয়ংমেন্দ মুসলিম কনফারেন্স'
অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে নজরুল আমন্ত্রিত হন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি এই
অনুষ্ঠানে যোগদান করতে পারেন নি।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের (জন্ম ১৫ সেপ্টেম্বর ১৮৭৬) ৫২তম জন্মদিন পালিত হয়েছিল
কৃষ্ণনগরে। এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে নজরুল রচনা করেছিলেন একটি কবিতা। এ ছাড়া তনি তাঁর সদ্য রচিত একটি গান পরিবেশন করেন।
কোন্ শরতে পূর্ণিমা চাঁদ আসিলে [গান-২১৭০]
[তথ্য]
গত মাসের ১৭
তারিখে (বুধবার, ৩২ শ্রাবণ ১৩৩৪), কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার
ফেয়ারওয়েদার, পাবলিক প্রসিকিউটর তারকানাথ সাধুর সুপারিশ অনুসারে নজরুলের রুদ্রমঙ্গল
কাব্যগ্রন্থ বাজেয়াপ্ত করার জন্য চিফ সেক্রেটারিকে পরামর্শ দেন। কিন্তু মাত্র
গ্রন্থটি ১০০ কপি ছাপা হওয়ায় গ্রন্থটি বাজেয়াপ্ত করা হয় নি। ২৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার,
৭ আশ্বিন ১৩৩৪) সরকার পক্ষ থেকে এই গ্রন্থ আর প্রকাশ না করার জন্য, নিষেধ করা হয়।
এই নিষেধাজ্ঞায় নজরুলকে জানানো হয় যে, পুনরায় গ্রন্থটি প্রকাশিত হলে, তা বাজেয়াপ্ত
করা হবে। নজরুল এই গ্রন্থটি প্রকাশের চেষ্টা থেকে বিরত থাকেন। ফলে গ্রন্থটি
আনুষ্ঠানিকভাবে বাজেয়াপ্ত হয় নি।
এ মাসে প্রকাশিত অন্যান্য নতুন রচনা
নজরুল-কৃত স্বরলিপি-সহ প্রকাশিত হয়েছিল।
নওরোজ পত্রিকার পাঁচটি সংখ্যা প্রকাশের পর পুলিশের বাধার কারণে বন্ধ হয়ে যায়।
ফলে নজরুলের সাথে নওরোজ পত্রিকার সকল চুক্তি বাতিল হয়ে যায়। এই সুযোগে সওগাত
পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিন নজরুলকে তাঁর পত্রিকায় যোগদানের আহ্বান করেন। নজরুল সম্মত হলে
সওগাত পত্রিকার কার্তিক ১৩৩৪ সংখ্যা থেকে চুক্তি কার্যকর হয়। এই চুক্তির মূল বিষয় ছিল-
এই চুক্তির মাধ্যমে নজরুল যেন দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে যান। মূলত আর্থিক
সঙ্কট মোচনের কারণেই নজরুল এই চুক্তি করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এই চুক্তির বাইরে
মোহাম্মদী পত্রিকার কার্তিক ১৩৩৪ সংখ্যায় নজরুলের একটি কবিতা প্রকাশিত হয়েছিল।
সম্ভবত এই চুক্তির আগেই কবিতাটি মোহাম্মদী পত্রিকায় প্রকাশের জন্য দিয়েছিলেন। এই
কবিতাটি হলো-
নভেম্বর ১৯২৭ (১৫ কার্তিক-১৪ অগ্রহায়ণ ১৩৩৪)৩৩৪)
১২ নভেম্বর (শনিবার ২৬
কার্তিক ১৩৩৪) কৃষ্ণনগর থেকে টাঙ্গাইলের করোটিয়া কলেজ
মুসলিম হোস্টেলের ঠিকানায়, কুড়িগ্রামের মাহফুজ রহমানের কাছে একটি চিঠি লেখেন। এই
সময় মাহফুজ রহমানের করোটিয়া কলেজের মুসলিম হোস্টেল থাকতেন।
এই চিঠি থেকে জানা যায় নওরোজ পত্রিকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়। নজরুল খুব হৃষ্টচিত্তে
নওরোজ লিখতেন না। এই চিঠি থেকে জানা যায় যে, সওগাত পত্রিকায় তিনি অগ্রহায়ণ সংখ্যা
থেকে লেখা শুরু করবেন। [মাহফুজুর রহমান-কে লেখা
পত্র]
এই মাসে প্রকাশিত রচনা
ডিসেম্বর ১৯২৭ (১৫ অগ্রহায়ণ- ১৫ পৌষ ১৩৩৪)
সওগাত পত্রিকার 'অগ্রহায়ণ ১৩৩৪ (নভেম্বর-ডিসেম্বর ১৯২৭)' সংখ্যায় প্রকাশিত হয়।
গানটির পাদটিকায় ছিল- 'হুইটম্যানের অনুরণনে'। রচনার স্থান ও
রচনাকাল উল্লেখ নেই । ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত
'জিঞ্জীর' নামক গ্রন্থে গানটি স্থান লাভ করেছিল।
হুইটম্যানের মূল কবিতা
PIONEERS! O PIONEERS!
COME my tan-faced children,
Follow well in order, get your weapons ready,
Have you your pistols? have you your sharp-edged axes
Pioneers! O pioneers!
For we cannot tarry here,
We must march my darlings, we must bear the brunt of danger,
We the youthful sinewy races, all the rest on us depend,
Pioneers! O pioneers!
O you youths, Western youths,
So impatient, full of action, full of manly pride and friendship,
Plain I see you Western youths, see you tramping with the fore-
most,
Pioneers! O pioneers!
Have the elder races halted?
Do they droop and end their lesson, wearied over there beyond
the seas?
We take up the task eternal, and the burden and the lesson,
Pioneers! O pioneers!
All the past we leave behind,
We debouch upon a newer mightier world, varied world,
Fresh and strong the world we seize, world of labor and the march,
Pioneers! O pioneers!
We detachments steady throwing,
Down the edges, through the passes, up the mountains steep,
Conquering, holding, daring, venturing as we go the unknown ways,
Pioneers! O pioneers!
We primeval forests felling,
We the rivers stemming, vexing we and piercing deep the mines
within,
We the surface broad surveying, we the virgin soil upheaving,
Pioneers! O pioneers!
Colorado men are we,
From the peaks gigantic, from the great sierras and the high
plateaus,
From the mine and from the gully, from the hunting trail we come,
Pioneers! O pioneers!
From Nebraska, from Arkansas,
Central inland race are we, from Missouri, with the continental
blood intervein'd,
All the hands of comrades clasping, all the Southern, all the
Northern,
Pioneers! O pioneers!
O resistless restless race!
O beloved race in all! O my breast aches with tender love for all!
O I mourn and yet exult, I am rapt with love for all,
Pioneers! O pioneers!
Raise the mighty mother mistress,
Waving high the delicate mistress, over all the starry mistress,
(bend your heads all,)
Raise the fang'd and warlike mistress, stern, impassive, weapon'd
mistress,
Pioneers! O pioneers!
See my children, resolute children,
By those swarms upon our rear we must never yield or falter,
Ages back in ghostly millions frowning there behind us urging,
Pioneers! O pioneers!
On and on the compact ranks,
With accessions ever waiting, with the places of the dead quickly
fill'd,
Through the battle, through defeat, moving yet and never stopping,
Pioneers! O pioneers!
O to die advancing on!
Are there some of us to droop and die? has the hour come?
Then upon the march we fittest die, soon and sure the gap is fill'd,
Pioneers! O pioneers!
All the pulses of the world,
Falling in they beat for us, with the Western movement beat,
Holding single or together, steady moving to the front, all for us,
Pioneers! O pioneers!
Life's involv'd and varied pageants,
All the forms and shows, all the workmen at their work,
All the seamen and the landsmen, all the masters with their slaves,
Pioneers! O pioneers!
All the hapless silent lovers,
All the prisoners in the prisons, all the righteous and the wicked,
All the joyous, all the sorrowing, all the living, all the dying,
Pioneers! O pioneers!
I too with my soul and body,
We, a curious trio, picking, wandering on our way,
Through these shores amid the shadows, with the apparitions
pressing,
Pioneers! O pioneers!
Lo, the darting bowling orb!
Lo, the brother orbs around, all the clustering suns and planets,
All the dazzling days, all the mystic nights with dreams,
Pioneers! O pioneers!
These are of us, they are with us,
All for primal needed work, while the followers there in embryo
wait behind,
We to-day's procession heading, we the route for travel clearing,
Pioneers! O pioneers!
O you daughters of the West!
O you young and elder daughters! O you mothers and you wives!
Never must you be divided, in our ranks you move united,
Pioneers! O pioneers!
Minstrels latent on the prairies!
(Shrouded bards of other lands, you may rest, you have done
your work,)
Soon I hear you coming warbling, soon you rise and tramp amid us,
Pioneers! O pioneers!
Not for delectations sweet,
Not the cushion and the slipper, not the peaceful and the studious,
Not the riches safe and palling, not for us the tame enjoyment,
Pioneers! O pioneers!
Do the feasters gluttonous feast?
Do the corpulent sleepers sleep? have they lock'd and bolted doors?
Still be ours the diet hard, and the blanket on the ground,
Pioneers! O pioneers!
Has the night descended?
Was the road of late so toilsome? did we stop discouraged nodding
on our way?
Yet a passing hour I yield you in your tracks to pause oblivious,
Pioneers! O pioneers!
Till with sound of trumpet,
Far, far off the daybreak call—hark! how loud and clear I hear
it wind,
Swift! to the head of the army!—swift! spring to your places,
Pioneers! O pioneers!
সওগাত। 'অগ্রহায়ণ ১৩৩৪' সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। রচনার স্থান ও
রচনাকাল উল্লেখ নেই।
১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে কুষ্টিয়ায় অনুষ্ঠিত 'বঙ্গীয় কৃষক শ্রমিক দল'-এর সম্মেলনে, নজরুল
কৃষ্ণনগর থেকে সপরিবারে কুষ্টিয়া আসেন। এখানে তিনি কয়েকদিন হেমন্তকুমার
সরকারের ভাড়া বাড়ি 'ডিউ কটেজ'-এ কয়েকদিন কাটান।
১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ ডিসেম্বর দিলীপকুমার
রায়, ইউরোপ ভ্রমণ শেষে কলকাতায় ফিরে আসেন। ২৮ ডিসেম্বর (২৯
অগ্রহায়ণ ১৩৩৪) কলকাতা ইউনিভার্সিটি
ইন্স্টিটিউট হলে তাঁকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। এই অনুষ্ঠানে দিলীপকুমার
রায়ের উদ্দেশ্যে নজরুল তাঁর স্বরচিত কবিতা 'সুরের দুলাল' পাঠ
করেন। পরে এই কবিতাটিতে সুররোপ করে গানে পরিণত করেন।
কল্লোল পত্রিকার মাঘ ১৩৩৪ সংখ্যায় এই রচনাটি গান হিসেবে
প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ২৮ বৎসর
৭ মাস। করেন। এই
গানটি হলো-
জানুয়ারি ১৯২৮ (১৬ পৌষ-১৭ মাঘ ১৩৩৪)
গানটি নাচঘর পত্রিকার
৭ই পৌষ ১৩৩৪ (২৩ ডিসেম্বর ১৯২৭) সংখ্যায় প্রকাশিত
হয়েছিল। গানটির পাদটীকায় উল্লেখ আছে- ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট
হলে দিলীপকুমার রায়ের সম্বর্ধনা উপলক্ষে রচিত ও উমাপদ ভট্টাচার্য কর্তৃক গীত।
[দ্রষ্টব্য: প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খানকে
লেখা নজরুলের পত্র
[পত্র]
সওগাত পত্রিকার 'পৌষ ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ' সংখ্যায়।
১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসে নজরুল কৃষ্ণনগরেই
অতিবাহিত করেন। বছরের শুরুতেই ইসলামী দর্শন পত্রিকার মাঘ ১৩৩৪ সংখ্যায় তাঁর
বিরুদ্ধে প্রকাশিত হয় 'নজরুলের কেরদানী।
।
এই মাসে প্রকাশিত নজরুলের নতুন রচনা
এই মাসে প্রকাশিত পূর্বে রচিত কবিতা
প্রগতি পত্রিকার 'মাঘ ১৩৩৪' সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। পরে বুলবুল-এর প্রথম সংস্করণে
অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
ফেব্রুয়ারি ১৯২৮ (১৮ মাঘ- ১৭ ফাল্গুন ১৩৩৪)
ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে (ফাল্গুন
১৩৩৪) ঢাকায় মুসলিম সাহিত্য-সমাজের দ্বিতীয় বার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণে নজরুল ঢাকায় আসেন
এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলিম হলের তৎকালীন হাউস টিউটর অধ্যাপক সৈয়দ আবুল হোসেনের বাসায় ওঠেন। এই বাসাতে নজরুল একটি গান রচনা করেন। গানটি হলো-
সম্মেলন শেষে নজরুল কাজী মোতাহার হোসেনের বর্ধমান হাউসের বাসায়।
ঢাকায় তিনি প্রায় তিন
সপ্তাহ ছিলেন। এই সময় এই বাসায় আড্ডার সূত্রে ঢাকার বুদ্ধিজীবী, সাহিত্যিক, সমাজসেবী,
রাজনৈতিক ব্যক্তবর্গের সাথে তাঁর বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল। এঁদের মধ্যে ছিলেন-
বুদ্ধদেব বসু, অজিত বসু, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, কাজী আব্দুল ওদুদ, ফজিলুতুন নেসা
প্রমুখ।
গানটি
সন্ধ্যা কাব্যগ্রন্থের প্রথম সংস্করণে
গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। গানটি পরে- 'জাগো সুন্দর
চির কিশোর' নাটিকায় [বেতার নাটিকা ২৪ মে ১৯৪০ (শুক্রবার,১০ জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৭)]
ব্যবহৃত হয়েছিল।
২১শে ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার, ৯ ফাল্গুন ১৩৩৪) 'শান্তি সাহিত্য সম্মেলনী' নজরুলকে সম্বর্ধনা দেয়। এই
অনুষ্ঠানে তিনি কয়েকটি গান পরিবেশন করেন এবং অভিনন্দনের জবাবে
সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন।
২৪শে ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার, ১২
ফাল্গুন ১৩৩৪) নজরুল ঢাকা ত্যাগ করেন। ঢাকা থেকে ফেরার
পথে স্টিমারে তিনি কাজী মোতাহার হোসেনকে একটি দীর্ঘ চিঠি লেখেন।
[মোতাহার
হোসেন-কে লেখা
পত্র]
২৫ শে ফেব্রুয়ারি (শনিবার, ১৩ ফাল্গুন ১৩৩৪) ঢাকা থেকে তিনি কৃষ্ণনগরে ফিরে আসেন।
বিষয়টি জানা যায় এই দিনে কাজী মোতাহার হোসেনকে লেখা চিঠি থেকে।
[ মোতাহার হোসেন-কে
লেখা
পত্র]
১ মার্চ ১৯২৮ (বৃহস্পতিবার, ১৮ ফাল্গুন ১৩৩৪)
থেকে নজরুল কণ্ঠের ক্ষতজনীত রোগে কাহিল হয়ে পড়েন এবং চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যাওয়ার
সিদ্ধান্ত নেন। এই অবস্থায় এই দিন তিনি
কৃষ্ণনগর থেকে মোতাহার হোসেন-কে একটি চিঠি লেখেন।
[মোতাহার হোসেন-কে লেখা
পত্র]
২ মার্চ ১৯২৮ (শুক্রবার, ৯ ফাল্গুন ১৩৩৪) নজরুলের কণ্ঠের ক্ষত রোগ তীব্রতর হয়ে ওঠোয় শেষ
পর্যন্ত নজরুলের কলকাতায় যাওয়া স্থগিত হয়ে যায়। ৬ মার্চ ১৯২৮ (মঙ্গলবার, ২৩ ফাল্গুন
১৩৩৪), নজরুল সপরিবারে কলকাতায় চলে আসেন। এই সময় তিনি বন্ধু নলিনীকান্ত সরকারের ১৫
জোলিয়াটোলা স্ট্রিটের বাড়িতে এসে ওঠেন এবং কণ্ঠের ক্ষতের চিকিৎসা শুরু করেন।
৮ মার্চ ১৯২৮ (বৃহস্পতিবার ২৫ ফাল্গুন ১৩৩৪) নজরুল ১৫ জোলিয়াটোলা
স্ট্রিট থেকে মোতাহার হোসেন-কে একটি চিঠি লেখেন।
[মোতাহার হোসেন-কে
লেখা
পত্র]
১০ই মার্চ ১৯২৮ (শনিবার ২৭ ফাল্গুন ১৩৩৪) নজরুল ১৫ জোলিয়াটোলা
স্ট্রিট থেকে মোতাহার হোসেন-কে একটি চিঠি লেখেন। তবে চিঠিটা তিনি ডাকবাক্সে
ফেলছিলেন ১৮ তারিখে। [মোতাহার হোসেন-কে লেখােখা
পত্র]
তবে এই চিঠির উত্তর মোতাহার হোসেন দেন নি। এই তথ্যটি পাওয়া যায় ফজিলুতুন্নেসা-কে
লিখিত পত্র থেকে। মোতাহার হোসেনের কাছ থেকে তিনি শেষ চিঠি পেয়েছিলেন ১০ই মার্চ।
ফজিলুতুন্নেসার কাছে পত্র থেকে জানা যায়, ১৪ দিন আগে মোতাহার হোসেনের কাছ থেকে তিনি
শেষ চিঠি পেয়েছিলেন। এই বিচারে বলা যায়, নজরুল ২৪শে মার্চ (শনিবার, ১১ চৈত্র ১৩৩৪)
ফজিলুতুন্নেসা-কে তিনি চিঠি লিখেছিলেন। ঠিকানা ছিল ১১ ওয়েসলি স্ট্রিট থেকে।
উল্লেখ্য, নজরুল সপরিবারে ১১ ওয়েলসলি স্ট্রিটের সওগাত পত্রিকার অফিসে এসে উঠেছিলেন।
এই অফিস থেকেই নজরুল ফজিলুতুন্নেসা-কে তিনি চিঠি লিখেছিলেন। এই চিঠিতে
তাঁর 'সঞ্চিতা' কাব্য-সংকলন ফজিলুতুন্নেসা-কে উৎসর্গ করতে চেয়েছিলেন।
[২৪ তারিখে
লিখিত ফজিলুতুন্নেসার-কে লিখিত
পত্র]
গ্রামোফোন রেকর্ড কোম্পানিতে নজরুলের যোগদান
গ্রামোফোন রেকর্ড কোম্পানি নজরুলের গান রেকর্ডে প্রকাশের জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছিলেন
১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দের শুরুর দিকে। নজরুল তখন থাকতেন জেলেটোলার
নলিনীকান্ত সরকারের বাড়িতে। সম্ভবত নলিনীকান্ত সরকারের উদ্যোগে তাঁর বাড়িতে
গ্রামোফোন কোম্পানির রেকর্ডিং ম্যানেজার ভগবতী ভট্টাচার্যের সাথে এই বিষয়ে প্রথম
আলাপ হয়। মার্চ মাসে নজরুল কিছু শর্তসাপাক্ষে গ্রামোফোন কোম্পানিতে যোগদান
করেন। এই শর্তগুলো ছিল-
বেতারে নজরুলের যোগাদান
নজরুল ঠিক কবে থেকে
বেতারে সাথে যুক্ত হয়েছিলেন, তার সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ পাওয়া যায় না। এর প্রাথমিক
একটি সূত্র পাওয়া যায়-
মোতাহার হোসেন-কে লেখা পত্র থেকে। নজরুল সওগাত অফিস থেকে ৩১শে মার্চ (শনিবার, ১৮ চৈত্র ১৩৩৪)
এই চিঠিটি চিঠি লিখেছিলেন। এই
চিঠির উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল নজরুলের বেতারে অনুষ্ঠানের কথা। ৩১শে মার্চে লিখিত এই চিঠি থেকে জানা যায়, নজরুল কয়েক দিনের জন্য কৃষ্ণনগরে এসেছিলেন এবং
বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) কলকতায় ফিরে যাবেন। কারণ তাঁকে কলকাতা বেতারে তাঁকে গান
পরিবেশন করতে হবে।
[মোতাহার হোসেন-কে লেখা
পত্র]
এই চিঠির সূত্রে অনুমান করা যায়, চুক্তির বিষয়। নজরুল এই চিঠিতে লিখেছিলেন-
'...আমি আবার বিষ্যুতবার কলকাতা ফিরে আসব। সেদিন সন্ধ্যায়
Broadcasting-এ আমার গান গাইতে
হবে। তোমাদের ঢাকায় wireless সেট
নেই কারুর? তাহলে শুনতে পেতে হয়তো। কী গ্র্যান্ড হত বলো তো তাহলে! আমি এখান থেকে
গান করতেম- আর তোমরা ঢাকা থেকে শুনতে। এখন থেকে হপ্তায় অন্তত দু-তিন দিন করে
গাইতে হবে আমায় Broad casting-এ।
আমি বিষ্যুতবারে দুটো গান আর আমার নতুন কবিতা 'রহস্যময়ী' আবৃত্তি করব।
'রহস্যময়ী' চৈত্রের 'সওগাতে' বেরুবে। ওর 'তুমি মোরে ভুলিয়াছ' নামটা বদলে
'রহস্যময়ী' করেছি। দেখো এক কাজ করা যায়।...'
নজরুলকে বেতারে সপ্তাহে দুই-তিন দিন গান পরিবেশন করতে হবে- এমনটাই বেতারের সাথে
চুক্তি হয়েছিলো। এই চুক্তি অনুসারে নজরুল পরিবেশনের জন্য কোন দুটি গান নির্বাচন
করেছিলেন, তা জানা যায় না। তবে একটি কবিতার নাম পাওয়া যায়, তা হলো-
এই ধারায় নার্গিসের উদ্দেশে তিনি আরও একটি কবিতা রচনা করেছিলেন এই মাসে। কবিতাটি
হলো-
এই মাসে প্রকাশিত নতুন গান
এই মাসে প্রকাশিত পূর্বে রচিত বা প্রকাশিত গান
সওগাত চৈত্র ১৩৩৪।
প্রগতি। চৈত্র ১৩৩৪।
কালিকলম পত্রিকা। চৈত্র ১৩৩৪।
কালিকলম পত্রিকার 'চৈত্র ১৩৩৪' সংখ্যায় প্রকাশিত হয়।
৩১শে মার্চে মোতাহার হোসেনকে লেখা নজরুলের চিঠি থেকে জানা যায়, কৃষ্ণনগরে যাওয়ার
জন্য উতলা হয়ে উঠেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন- 'এখ্খনি হুগলি যাব, একজন সাহিত্যিক
বন্ধুর বাড়িতে সন্ধ্যায় গান। সেখানে দু-দিন থেকে বোধ হয় কৃষ্ণনগরেই যাব। কলকাতায়
কুড়ি-একুশ দিন কাটল, আর ভালো লাগে না এক জায়গা।...'
রচনার স্থান ও রচনাকাল উল্লেখ নেই । গানটি প্রথম
প্রকাশিত হয়েছিল সওগাত পত্রিকার 'পৌষ ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ' সংখ্যায়।
নজরুল-কৃত স্বরলিপি-সহ প্রকাশিত হয়েছিল সওগাত পত্রিকার 'চৈত্র ১৩৩৪ ' সংখ্যায়।
এই পত্রে একটি ছোটো কবিতার উল্লেখ পাওয়া যায়- 'জাগরণ' পত্রিকার জন্য।
চিঠির বাক্য অনুসারে জানা যায়- এই পত্রিকার জন্য মোতাহার হোসেন নজরুলের কাছে এই
পত্রিকার জন্য একটি লেখা চেয়েছিলেন। নজরুল তখনও এই পত্রিকার নাম জানতেন না। মোতাহার
হোসেনের অনুরোধে কবিতাটি পাঠিয়েছিলেন। চিঠিতে নজরুল এ বিষয়ে লিখেছিলেন-
'জাগরণ-এর জন্য লেখা চাওয়ার অর্থ বুঝলাম না। 'জাগরণ' বলে কাগজ বেরুচ্ছে
নাকি, না বেরুবে? কার কাগজ? চিঠি লিখবার আগের একটা ছোট্ট কবিতা লিখছিলাম-
সেইটেই দিচ্ছি এই সাথে।'
পত্রোলল্লেখিত ওই কবিতাটি ছিল-
এপ্রিল ১৯২৮ (১৯ চৈত্র ১৩৩৪- ১৭ বৈশাখ ১৩৩৫)
৩১শে মার্চে মোতাহার হোসেনকে লেখা নজরুলের চিঠি অনুসরণ করলে, জানা যায় থেকে জানা
যায়, অন্তত ৩ এপ্রিল পর্যন্ত নজরুল হুগলিতে একজন বন্ধুর বাসায় ছিলেন। হুগলিতে তিনি
কেন গিয়াছিলেন তা জানা যায়। প্রায় কুড়ি একুশ দিন একনাগাড়ে কলকাতায় থেকে হাঁফিয়ে
উঠেছিলেন। এই একঘেঁয়েমি অবস্থা থেকে মুক্তি লাভের আশায় হুগলি গিয়েছিলেন। পরে সেখান
থেকে তিনি সপরিবারের কৃষ্ণনগরে ফিরে এসেছিলেন সম্ভবত ৭ এপ্রিলে। আর ৮ এপ্রিল (রবিবার ২৬ চৈত্র ১৩৩৪) নজরুল
কৃষ্ণনগরে একটি কবিতা রচনা করেন। কবিতাটি হলো-
৮ এপ্রিল (রবিবার ২৬ চৈত্র ১৩৩৪) মোতাহার হোসেনের কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছিলেন।
১২ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার ৩০ চৈত্র ১৩৩৪) কলকাতা থেকে নজরুল এই চিঠির উত্তর দিয়েছিলেন।
এই চিঠির প্রথমেই রয়েছে- 'তোমার চিঠি রবিবার সকালে পেয়েছি কৃষ্ণনগরে – কলকাতা
এসেছি তিন-চারদিন হল।' অর্থাৎ নজরুল কলকাতায় এসেছিলেন ৮ বা ৯ এপ্রিল।
১২ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার ৩০ চৈত্র ১৩৩৪) তিনি বেতারের কবিতা ও গান পরিবেশনের জন্য
উপস্থিত হন। ওই অনুষ্ঠানে দুটি গান ও একটি কবিতা 'রহস্যময়ী' আবৃত্তি করার কথা
ছিল। কিন্তু গান দুটি পরিবেশিত হলেও আবৃত্তি করেন নি। ৩-৪ দিন পরে মোতাহার
হোসেনকে লেখা একটি চিঠি থেকে এই সংবাদ পাওয়া যায়। চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন- 'রেডিয়োতে সেদিন আবৃত্তি করিনি; কেন যেন ভালো লাগল না। তুমি ঠিক ধরেছ, তেওড়া তালে ‘দাঁড়াও আমার আঁখির আগে গানটা গীত হবার আগেই আমার গান হয়েছিল। আবৃত্তি আমিই ইচ্ছা করে করিনি। রেডিয়োতে গান দেবার আর সময় হবে না এক সপ্তাহের মধ্যে।
'
[১২ এপ্রিল ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দ মোতাহার হোসেন-কে লেখা
পত্র]
এই চিঠি থেকে জানা যায়, দিলীপকুমার রায় নজরুলকে সাথে নিয়ে কৃষ্ণনগরে যাওয়ার আয়োজন
করেছে। সম্ভবত এঁরা ১৪ই এপ্রিল বাংলা নববর্ষ উদযাপন করার জন্য কৃষ্ণনগরে যেতে
চেয়েছিলেন। চিঠিতে লিখেছিলন- 'দিলীপ আবার আমায় কৃষ্ণনগর ধরে নিয়ে যাচ্ছে পরশু। কৃষ্ণনগরই ওর আসল বাড়ি। সেখানে তিন-চারদিন হবে হয়তো। তারপর কলকাতা ফিরে আসব।...'
এই বছরের ১৪ এপ্রিল ছিল ১৩৩৫ বঙ্গাব্দের প্রথম দিন (শনিবার, ১ বৈশাখ ১৩৩৫)। এই দিন
আহমদ আলী সম্পাদিত 'জাগরণ' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল একটি কবিতা। এটি হলো-
১৫ এপ্রিল (রবিবার ২ বৈশাখ
১৩৩৫) নজরুল তাঁর নিজের রচিত ১৬টি গ্রন্থ ফজিলুতন্নেসাকে ডাক যোগে পাঠান। এই সংবাদ পাওয়া যায় ১৮ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার
৫ বৈশাখ ১৩৩৫) মোতাহার হোসেনকে লেখা নজরুলের একটি চিঠি থেকে।
[১৮ এপ্রিল ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দ মোতাহার হোসেন-কে লেখা
পত্র]
১৮ই এপ্রিলে লেখা এই চিঠি থেকে জানা যায়, ১৪ই এপ্রিল বাংলা নববর্ষ উদযাপন করার জন্য কৃষ্ণনগরে গিয়েছিলেন দিলীপকুমার
রায় এবং নলিনীকান্ত সরকার। নজরুল কলকতায় থেকে গিয়েছিলেন গ্রামোফোন কোম্পানির কাজে।
চিঠিতে তিনি ২০ এপ্রিল (শুক্রবার ৭ বৈশাখ ১৩৩৫), বিকেল ৪টা থেকে ৫টার ভিতরে
গ্রামোফোন কোম্পানির কাছে ৪টি গান ও নারী কবিতার আবৃত্তি জমা দেওয়ার
আশা ব্যক্ত করেছেন।
এই প্রশিক্ষণের সূত্রে নজরুলের রচিত চারটি গান- ধীরেন্দ্রনাথ নজরুলের কাছ থেকে শিখে নিয়ে, তা
আঙ্গুরবালা ও
কাসেম মল্লিক-কে শিখিয়েছিলেন। এই গানগুলো সম্ভবত রেকর্ড হয়েছিল এপ্রিল মাসে।
তবে বিক্রয়ের জন্য প্রকাশিত হয়েছিল জুলাই ও সেপ্টেম্বর মাসে। নজরুলের রেকর্ডে
প্রকাশিত গানের তালিকায় এই দুটি গান ছিল যথাক্রমে তৃতীয় ও চতুর্থ।
উল্লেখ্য নারী কবিতাটি নজরুল নিজেই আবৃত্তি করেছিলেন। এ বিষয়ে অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম তাঁর নজরুল জীবনী গ্রন্থে লিখেছেন-
'...নজরুলের প্রশিক্ষণে প্রথম প্রকাশিত নজরুল-সঙ্গীত-এর
রেকর্ডে আঙুরবালার গাওয়া দুটি গান ছিল, 'ভুলি কেমনে' ও 'এত জল ও কাজল', আরো
ছিল নজরুলের স্বরচিত স্বকণ্ঠে আবৃত্তি 'নারী' কবিতা এবং কে. মল্লিকের গাওয়া 'বাগিচায়
বুলবুলি তুই' এবং 'আমারে চোখ ইশরায় ডাক দিল হায়।' ঐ সব গান ও আবৃত্তির রেকর্ড
হয়েছিল ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসের দিকে আর প্রকাশিত হয়েছিল শেষ দিকে।
প্রকাশের বিচারে এই গানগুলোর কালানুক্রম হলো-
২১ এপ্রিল ১৯২৮ (শনিবার ৮ বৈশাখ
১৩৩৫) রাত্রি সাড়ে আটটা বা ৯টায় আটটায় বেতারে গান
ও আবৃত্তি পরিবেশনের কথাও জানা যায়-
মোতাহার
হোসেন-কে লেখা
পত্র থেকে।
এই মাসে প্রকাশিত অন্যান্য কবিতা ও গান
এই মাসে প্রকাশিত পূর্বে প্রকাশিত কবিতা
১ মে-২৪ মে ১৯২৮ (১৮ বৈশাখ-১০ জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৫)
নজরুলের ২৪ বৎসর
অতিক্রান্ত বয়স শেষ হয়েছিল গজল গান দিয়ে। কলকাতা
থেকে কৃষ্ণনগরে ফিরে ছিলেন গলার ক্ষত থেকে
মুক্ত হয়ে। তবে শারীরীকভাবে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে সময় লেগেছিল আরো কিছুদিন।
সাহানা দেবী-কৃত স্বরলিপিসহ মুদ্রিত হয়েছিল।
সূত্র