৩০ বৎসর অতিক্রান্ত বয়স

নজরুলের ৩০ বৎসর অতিক্রান্ত বয়স শুরু হয়েছিল ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৬ বঙ্গাব্দ (২৫ মে ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দ) থেকে। শেষ হয়েছিল ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৭ বঙ্গাব্দ (২৪শে মে ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ)।


নজরুলের ৩০ বৎসর অতিক্রান্ত বয়সের শুরু থেকেই তিনি সস্ত্রীক বাস করতেন কলকতায়। এই সময় তিনি ব্যস্ত ছিলেন আলেয়া নামক নাটক রচনা নিয়ে। একই সাথে তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের নতুন নাটক 'রক্তকমল' নিয়ে। এই দুটি নাটকের কাজ নিয়ে শুরু হয়েছিল তাঁর ৩০ বৎসর অতিক্রান্ত বয়স।
 
জুন ১৯২৯ (১৮ জ্যৈষ্ঠ-১৬ আষাঢ় ১৩৩৬)
জুন মাসের ২ তারিখে (রবিবার ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৬), মনোমোহন থিয়েটারে মঞ্চায়িত হয়েছিল শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের 'রক্তকমল‌' নাটক। এই নাটকের মাধ্যমে মঞ্চ নাটকের সাথে নজরুলের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।

আলেয়া
নজরুল এই নাটকটির রচনা শুরু করেছিলেন ১৩৩৬ বঙ্গাব্দের আষাঢ় মাসের আগেই। কল্লোল পত্রিকার 'আষাঢ় ১৩৩৬' সংখ্যার 'সাহিত্য-সংবাদ' বিভাগে'  বিষয়ে একটি তথ্য পাওয়া যায়। তথ্যটি হলো-
'নজরুল ইসলাম একখানি অপেরা লিখেছেন। প্রথমে তার নাম দিয়েছিলেন 'মরুতৃষ্ণা'। সম্প্রতি তার নাম বদলে 'আলেয়া' নামকরণ হয়েছে। গীতি-নাট্যখানি সম্ভবত মনোমহনে অভিনীত হবে। এতে গান আছে ত্রিশখানি। নাচে গানে অপরূপ হয়েই আশা করি এ অপেরাখানি জনসাধারণের মন হরণ করেবে।'
আলেয়া' যথাসময়ে মনোমহনে নাট্যমঞ্চে মঞ্চস্থ হয় নি। এরপর এই গীতিনাট্যটির প্রকাশের একটি ঘোষণা প্রকাশিত হয়েছিল স্বদেশ পত্রিকার 'আষাঢ় ১৩৩৮' সংখ্যায়। উক্ত ঘোষণায় বলা হয়েছিল-
'আগমী সংখ্যায় কবি নজরুলের গীতিনাট্য 'আলেয়া' আরম্ভ হইবে।'
কিন্তু শেষ পর্যন্ত 'আলেয়া' কোনো সাময়িকীতেই প্রকাশিত হয় নি। অবশেষে ১৩৩৮ বঙ্গাব্দের ৩রা পৌষ, কলকাতার 'নাট্যনিকেতন' রঙ্গমঞ্চে 'আলেয়া' মঞ্চস্থ হয়েছিল। প্রথম প্রকাশের তারিখও ছিল ৩রা পৌষ ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ। গ্রন্থটির প্রকাশক ছিলেন গোপালদাস মজুমদার, ডি,এম, লাইব্রেরী, ৬১ কর্নওয়ালিশ স্ট্রিট, কলকাতা। মুদ্রাকর: নরেন্দ্রনাথ কোঙার, ভারতবর্ষ প্রিন্টিং ওয়ার্কস, ২৩৩/১/১ কর্নমওয়ালিশ স্ট্রিট, কলকাতা। পৃষ্ঠা ৮+৭২। দাম এক টাকা। পরে ডি,এম, লাইব্রেরী থেকে 'আলেয়া ও ঝিলিমিলি' নামক সংকলনের সাথে থেকে প্রকাশিত হয়েছিল।

কল্লোল পত্রিকার 'আষাঢ় ১৩৩৬' সংখ্যার 'সাহিত্য-সংবাদ' বিভাগে'র সংবাদ অনুসারে আলেয়া নাটকের জন্য নজরুল ৩০টি গান রচনা করেছিলেন।

১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দের ১৯শে ডিসেম্বর (শনিবার ৩ পৌষ ১৩৩৮) কলকাতার নাট্যনিকেতন মঞ্চে নজরুলের 'আলেয়া' গীতিনাট্য মঞ্চস্থ হয়। এবং এই সময়ে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত আলেয়া নাটকে ২৮টি গান পাওয়া যায়। আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় এই গীতিনাট্যটি পরিমার্জনার সময় ২টি গান বাদ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোন দুটি গান বাদ পড়েছিল, তা জানা যায় না। 

১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে জয়তী ও নাচঘর পত্রিকায় 'আলেয়ার গান' শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিল আরও ৬টি গান। হতে পারে অতিরিক্ত গানগুলো ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে 'আলেয়া' মঞ্চস্থ হওয়ার সময় রচিত হয়েছিল। কিম্বা শুরু থেকেই সকল গানই রচিত হয়েছিল। এ সমস্যার কারণে আলেয়ার সকল গানের কালানুক্রম অনুসরণ করা দুরূহ হয়ে পড়ে। তাই প্রথম প্রকাশের বিচারে বর্জিত গানগুলোকে কালানুক্রমিক সূচিতে- নজরুলের ৩২ বৎসর অতিক্রান্ত বয়সের (১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দ) গানের তালিকায় রাখ হলো।

গ্রন্থাকারে প্রকাশিত আলেয়ার ২৮টি গান
  1. প্রস্তাবনা: পথিকের গান: নিতি নিতি মোরে ডাকে (নিশি নিশি মোরে [তথ্য]
    বর্তমানে গানটির প্রথম পঙক্তি 'নিশি নিশি মোরে ডাকে সে স্বপনে' হিসেবেও পাওয়া যায়।
  2. প্রস্তাবনা: প্রজাপতিদ্বয়ের গান: দুলে আলো শতদল  ‌‌[তথ্য]
  3. প্রস্তাবনা: কিশোরীগণ ও প্রজাপতিদ্বয়ের গান: মোরা ফুটিয়াছি বঁধু  [তথ্য]
  4. প্রথম অঙ্ক: ভোরের হাওয়ার গান: পোহাল পোহাল নিশি খোল গো আঁখি  [তথ্য]
  5. প্রথম অঙ্ক: সুন্দরীদের গান: ভোরের হাওয়া এলে  [ তথ্য]
  6. প্রথম অঙ্ক: কাকলি ও সুন্দরীদের গান: ফুল কিশোরী জাগো জাগো  [তথ্য]
  7. প্রথম অঙ্ক: সুন্দরীদের গান: যৌবন-তটিনী ছুটে চলে  [তথ্য]
  8. প্রথম অঙ্ক: কবির গান:  এসেছে ন'ব্‌নে বুড়ো  [তথ্য]
  9. প্রথম অঙ্ক: একটি মেয়ের গান: কেন ঘুম ভাঙালে প্রিয়  [তথ্য]
  10. প্রথম অঙ্ক: মালার গান: চাঁদনী রাতে কানন সভাতে  [তথ্য]
  11. প্রথম অঙ্ক: মদালসার গান: কেন রঙীন নেশায় মোরে রাঙালে  [তথ্য]
  12. প্রথম অঙ্ক: কাকলি ও সখীদের গান: ধর ধর ভর ভর, এ রঙিন পেয়ালী  [তথ্য]
  13. প্রথম অঙ্ক: তরুণীদের গান: আধো ধরণী আলো আধো আঁধার  [তথ্য]
  14. প্রথম অঙ্ক: কাকলির গান: আঁধার রাতে কে গো একেলা [তথ্য]
  15. প্রথম অঙ্ক: কাকলির গান: যৌবনে যোগিনী,আর কত কাল [তথ্য]
  16. প্রথম অঙ্ক: রঙ্গনাথের গান: খুঁচি খুঁচি সূচি-সারি  [তথ্য]
  17. প্রথম অঙ্ক: কাকলি ও বন্দীগণের গান: জাগো যুবতি! আসে যুবরাজ  [তথ্য]
  18. প্রথম অঙ্ক: ঝোড়ো হাওয়া ও ঘূর্ণির  গান: ঝঞ্ঝার ঝাঁঝর বাজে ঝনঝন  [তথ্য]]
  19. প্রথম অঙ্ক: নটরাজের গান: নাচিছে নটনাথ, শঙ্কর মহাকাল  [তথ্য]
  20. প্রথম অঙ্ক: বৃষ্টিধারার গান: নামিল বাদল! রুমু রুমু ঝুমু  [তথ্য]
  21. দ্বিতীয় অঙ্ক: চন্দ্রিকার গান: এ নহে বিলাস বন্ধু  [তথ্য]
  22. দ্বিতীয় অঙ্ক: চন্দ্রিকার গান: বেসুর বীণায় ব্যথার সুরে  [তথ্য]
  23. দ্বিতীয় অঙ্ক: চন্দ্রিকার গান: তাহারে দেখলে হাসি [তথ্য]
  24. দ্বিতীয় অঙ্ক: যোগিনীর গান: জাগো নারী জাগো বহ্নিশিখা [তথ্য]
  25. দ্বিতীয় অঙ্ক: সেনাদলের গান: টলমল টলমল পদভরে [তথ্য]
  26. তৃতীয় অঙ্ক: বৈতালিকের গান: আসিলে কে অতিথি সাঁঝে  [তথ্য]
  27. তৃতীয় অঙ্ক: তরুণী ও কিশোরীদের গান: মাধবী-তলে চল মাধবিকা-দল [তথ্য]
  28. তৃতীয় অঙ্ক: কাকলির গান:গহীন রাতে ঘুম কে এলে ভাঙাতে  [তথ্য]
     
  1. আসে বসন্ত ফুলবনে [তথ্য]
    সওগাত পত্রিকার 'পৌষ ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ' সংখ্যায় গানটির রচনার স্থান ও তারিখ উল্লেখ আছে- ' কৃষ্ণনগর, ২৮ অগ্রহায়ণ ৩৩'।
  2. ফাগুন-রাতের ফুলের নেশায়  [তথ্য]
  3. কেউ ভোলে না কেউ ভোলে [তথ্য]
  4. নিশীথ স্বপন তোর [তথ্য]
  5. ভাঙা মন (আর) জোড়া নাহি যায় [তথ্য]
  6. ঘোর তিমির ছাইল [তথ্য]
  7. কেমনে রাখি আঁখি-বারি চাপিয়া [তথ্য]
    সওগাত পত্রিকার 'ফাল্গুন ১৩৩৫ বঙ্গাব্দ ' সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত হয়।
  8. দারুণ পিপাসায় মায়া মরীচিকায় [তথ্য]
    মোর ঘুমঘোরে এলে মনোহর [তথ্য]
এই মাসে পত্রিকায় প্রকাশিত রচনা

রেকর্ডে প্রকাশিত গান

জুলাই ১৯২৯ (১৭ আষাঢ়-১৫ শ্রাবণ ১৩৩৬)
এই মাসে নজরুল ব্যস্ত ছিলেন চক্রবাকসন্ধ্যা কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের জন্য।

এই মাসে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল ৩টি গান ও ১টি কবিতা। এর ভিতরে ২টি গান ছিল নতুন। আগষ্ট ১৯২৯ (১৬ শ্রাবণ-১৫ ভাদ্র ১৩৩৬)
১২ আগষ্ট  (সোমবার, ২৭ শ্রাবণ ১৩৩৬) নজরুলের দুটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। কাব্যগ্রন্থ দুটি- চক্রবাক ও সন্ধ্যা
২৩ আগষ্ট (শুক্রবার, ৭ ভাদ্র ১৩৩৬) নবশক্তি' পত্রিকায় প্রকাশিত চিঠি হয়। এই চিঠিতে বেতারে প্রচারিত নজরুলের সুরের বিকৃতি নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশিত হয়েছিল। [২৩ আগষ্ট ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দ [নবশক্তি' পত্রিকায় প্রকাশিত পত্র]

পত্রিকায় প্রকাশিত নতুন রচনা
সেপ্টেম্বর ১৯২৯ (১৬ ভাদ্র-১৪ আশ্বিন ১৩৩৬)
৭ সেপ্টেম্বর (শনিবার, ২২ ভাদ্র ১৩৩৬), নজরুল সওগাত পত্রিকার সপ্তম বার্ষিক প্রীতি সম্মেলন যোগ দেন। এই মাসে ২টি নতুন কবিতা এবং ১টি পূর্বে রচিত গান পুনরায় প্রকাশিত হয়েছিল। অক্টোবর ১৯২৯ (১৫ আশ্বিন- ১৪ কার্তিক ১৩৩৬))
৫ই অক্টোবর (শনিবার, ১৯ আশ্বিন ১৩৩৬), সওগাতের অফিস ১১ ওয়েসলি স্ট্রিট থেকে কবি ও প্রাবন্ধিক আজিজুল হাকিমকে একটি চিঠি লেখেন। [কবি আজিজুল হাকিম-কে লেখা পত্র]

৯ই অক্টোবর (বুধবার, ২৩ আশ্বিন ১৩৩৬), ৮/১ পানবাগান লেনের একটি দোতলা বাসায় নজরুলের তৃতীয় সন্তান সব্যসাচী জন্মগ্রহণ করেন। উল্লেখ্য, চৈনিক দার্শনিক সান ইয়াৎ সান-এর নামানুসারে নজরুল এই সন্তানের ডাকনাম রেখেছিলেন সানি এই দিনই নজরুলকে জাতীয় সংবর্ধনা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে কলকাতার ওয়েলেসি স্কোয়ারে অবস্থিত মুসলিম ইন্স্টিটিউট হলে অভ্যর্থনা সমিতি গঠনের জন্য একটি সভা আহ্বান করেন। এই সভার আয়োজনের উদ্যোক্তা ছিলেন একে ফজলুল হক, ভারতবর্ষ পত্রিকার সম্পাদক জলধর সেন, কলকাতা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হেদায়েত হোসেন, প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট এস ওয়াজেদ আলী, হাইকোর্টের আইনজীবী খান বাহাদুর আসাদুজ্জামান. এইচ এস সোহারাওয়ার্দী, সঙ্গীতজ্ঞ দীলিপকুমার রায়, কল্লোল পত্রিকার সম্পাদক দীনেশরঞ্জন দাশ, বামপন্থী রাজনীতিবিদ মুজফ্ফর আহমেদ, কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র, ডা. আর আহমদ, সৈয়দ বদরুদ্দোজা, সৈয়দ জালাল উদ্দীন হাশেমী প্রমুখ। এই সংবর্ধনা সভা যাতে না হয়, সে জন্য নজরুল-বিরোধীরা মৌলভী ও মাদ্রাসার ছাত্ররা আগে থেকেই সভাস্থল দখল করে নেয়। এদের ভিতরে 'মোহাম্মদী' পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মওলানা নজির উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নজরুলের বিরুদ্ধে বক্তৃতা দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করা শুরু করেন। এরপর নজরুলের সমর্থকরা সভাস্থলে এলে- নজরুল বিরোধীরা সভাস্থল ত্যাগ করে।

নজরুল সংবর্ধনা সভার প্রস্তুতি শুরু হয় খান বাহাদুর আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে। এই সভায় নজরুলের অসামান্য কাব্যসৃষ্টির জন্য বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে সংবর্ধনা প্রদানের প্রস্তাব সর্ব-সম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। এই প্রস্তাবের পক্ষে বক্তৃতা দেন- কবি খান মুহাম্মদ মঈনুদ্দীন, কবি ফজলুর রহামন (কৃষ্ণনগর), সৈয়দ জালাল উদ্দীন হাশেমী প্রমুখ। এই সভায় এই সংবর্ধনার অভ্যর্থনা কমিটি করা হয়। এর জন্য যে কমিটি তৈরি হয়, তার সভাপতি ছিলেন এস ওয়াজেদ আলী, সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ এম, নাসিরউদ্দীন (সওগাত-সম্পাদক), যুগ্ম সম্পাদক- দীনেশরঞ্জন দাশ (কল্লোল সম্পাদক)। সদস্যরা ছিলেন- মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী, আবুল মনসুর আহমদ, নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়, সৈয়দ জালাল উদ্দীন হাশেমী, শাহাদাৎ হোসেন, নলিনীকান্ত সরকার, হবীবুল্লাহ বাহার, পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায়, আইনুল হক খান, খান মুহাম্মদ মঈনুদ্দীন, প্রেমেন্দ্র মিত্র, শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়, আফজাল-উল হক, আবু লোহানী, দিলীপকুমার রায়, ফজলুর রহমান, উমাপদ ভট্টাচার্য।

এই মাসে প্রকাশিত গান
  • না মিটিতে সাধ মোর নিশি পোহায় [তথ্য]
    সওগাত পত্রিকার 'কার্তিক ১৩৩৬‌' (অক্টোবর ১৯২৯) সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। পরে চোখের চাতক  প্রথম সংস্করণ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
এই মাসে প্রকাশিত রেকর্ডে প্রকাশিত গান
এই মাসে এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি থেকে একটি রেকর্ড প্রকাশিত হয়। রেকর্ড নম্বর পি ১১৬৩৮। শিল্পী কে মল্লিক।
  • পরদেশী বঁধুয়া, এলে কি এতদিনে [তথ্য]
  • বসিয়া বিজনে কেন একা মনে [তথ্য]
নভেম্বর ১৯২৯ (১৫ কার্তিক- ১৪ অগ্রহায়ণ ১৩৩৬)
১২ই নভেম্বর (মঙ্গলবার ২৬ কার্তিক ১৩৩৬), সান্ধ্য-অনুষ্ঠানে নজরুল রেডিওতে আবৃত্তিতে অংশগ্রহণ করেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি তাঁর স্বরচিত কবিতা 'নারী' আবৃত্তি করেন। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দের  মার্চ মাসের দিকে নজরুলের সাথে এইচএমভির একটি চুক্তি হয়েছিল।  বেতার জগৎ পত্রিকার ১ম বর্ষ ৪র্থ সংখ্যায় [পৃষ্ঠা ১৬] মুদ্রিত অনুষ্ঠান সূচিতে এর উল্লেখ রয়েছে- বিতর্কিত অপ্রকাশিত নজরুলসঙ্গীত
জুন থেকে নভেম্বর মাসের ভিতরে এইচএমভি থেকে একটি রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। কণ্ঠ দিয়েছিলেন ইন্দুবালা। এই রেকর্ডের দুটি গান নজরুল সঙ্গীতের কোনো সংকলনে অন্তর্ভুক্ত হয় নি। এমন কি সমকালীন কোনো পত্রিকাতেও প্রকাশিত হয় নি। সম্ভবত নজরুল রেকর্ড কোম্পানির অনুরোধে এই দুটি গান রচনা করে ইন্দুবালাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে রেকর্ড করিয়েছিলেন। মুম্বাই থেকে প্রকাশিত 'The record news‌ পত্রিকার Annual 2008 সংখ্যার সূত্রে প্রাপ্ত এই গান দুটিকে নতুন গান হিসেবে উল্লেখ করা হলো। পত্রিকায় রেকর্ডটি প্রকাশের তারিখ উল্লেখ নেই। রেকর্ডের নম্বর  পি ১১৬৩২। এই রেকর্ডের পূর্বর্তী রেকর্ড ১১৬০০ প্রকাশিত হয়েছিল ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে এবং পরবর্তী রেকর্ডে পি ১১৬৬১-এর প্রকাশকাল ছিল ডিসেম্বর ১৯২৯। তাই এই রেকর্ডটির (পি ১১৬৩২) প্রকাশকাল ধরা হলো- জুলাই-নভেম্বর ১৯২৯। নিচে এর পূর্ণাঙ্গ পরিচয় দেওয়া হলো-
  • এইচএমভি। পি ১১৬৩২ [জুলাই-নভেম্বর ১৯২৯]
    • কত রাতি পোহায় বিফলে হায় -গজল
    • সখি দেখে আয় এলো কি দুয়ারে-গজল
আবার The record news‌ পত্রিকার Annual 2008 সংখ্যার ৩৯ পৃষ্ঠায় ইন্দুবালার কণ্ঠে রেকর্ডে ধারণকৃত প্রথম নজরুলসঙ্গীত হিসেবে দুটি গানের উল্লেখ পাওয়া যায়। গান দুটি হলো-

  • রুম্‌ ঝুম্‌ রুম্‌ ঝুম্‌ কে এলে নূপুর পায়  [তথ্য]
  • চেয়ো না সুনয়না আর চেয়ো না [তথ্য]

গান দুটির রেকর্ড নম্বর পি ১১৬৬১। রেকর্ড নম্বরের কালানুক্রম অনুসারে পি ১১৬৩২ রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর (অগ্রহায়ণ-পৌষ ১৩৩৬) মাসে। এই বিচারে পি ১১৬৩২ রেকর্ডের গান দুটিকে নজরুলের গান কিনা, সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।

ডিসেম্বর ১৯২৯ (১৫ অগ্রহায়ণ- ১৬ পৌষ ১৩৩৬)
এই মাসে নজরুল তাঁর দ্বিতীয় সঙ্গীত-সংকলন প্রকাশে ব্যস্ত ছিলেন। এর মধ্যে ১৫ই ডিসেম্বর (রবিবার ২৯ অগ্রহায়ণ ১৩৩৬), কলকাতার এলবার্ট হলে দুপুর ২টায় কলকাতার বুদ্ধিজীবী মহল নজরুলকে জাতীয় সংবর্ধনা জানায়। এই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা ছিলেন কল্লোল ও সওগাত পত্রিকার যথাক্রমে দীনেশরঞ্জন দাশ ও মোহাম্মদ নাসিরুদ্দীন। উল্লেখ্য এঁরা ছিলেন এই সম্বর্ধনা কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক। সদস্য হিসেবে ছিলেন আবুল কালাম শামসুদ্দীন, আবুল মনসুর আহমদ, হবীবুল্লাহ বাহার প্রমুখ। অভ্যর্থনা কমিটির সদস্য ছিলেন এস ওয়াজেদ আলী। অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় এবং প্রধান অতিথি নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু

অনুষ্ঠানে নজরুলকে পুষ্পশোভিত মোটার গাড়িতে সভাস্থলে আনা হয়। সভাস্থলে পৌঁছার পর, জয়ধ্বনি দিয়ে তাঁকে বরণ করা হয়। এরপর উমাপদ ভট্টাচার্য চল্ চল্ চ্ল গানটি উদ্বোধনী সঙ্গীত হিসেবে পরিবেশন করেন। এই সভার পক্ষ থেকে প্রদত্ত অভিনন্দন পত্র পাঠ করেন এস ওয়াজেদ আলী। পরে এই অভিন্দন পত্রটি একটি রূপোর বাক্সে ভরে নজরুলকে প্রদান করা হয়। একই সাথে তাঁকে দেওয়া হয় একটি সোনার দোয়াত ও কলম। সভায় অভিনন্দন-বক্তৃতা প্রদান করেন জলধর সেন। এরপর বক্তব্য রাখেন নেতাজী সুভাজচন্দ্র বসু। এছাড়া তাঁকে যাঁরা অভিনন্দন জানান, তাঁরা হলেন- অপূর্বকুমার চন্দ, করুণানিধান বন্দ্যোপাধ্যায়, জলধর সেন, শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়, প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রমুখ। সংবর্ধনা সভায় নজরুলের গান গেয়ে শোনান উমাপদ ভট্টাচার্য ও গোপালচন্দ্র সেন। নজরুল সভার উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের অনুরোধে পরিবেশন করেন 'টলমল টলমল পদভরে বীর দল চল সমরে‌। পরে সুভাষচন্দ্র বসুর অনুরোধে নজরুল পরিবেশন করেন- দুর্গম গিরি কান্তার মরু গানটি। এই অনুষ্ঠানে নজরুল যে প্রতিভাষণ দেন তা, মাসিক সওগাত পত্রিকায় 'পৌষ ১৩৩৬' সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। [প্রতিভাষণ]
এই মাসে প্রকাশিত হয়েছিল নজরুলের দ্বিতীয় গীতি-গ্রন্থ।

  • চোখের চাতক:
    ১৩৩৬ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণ মাসে (ডিসেম্বর ১৯২৯)  প্রকাশিত হয়েছিল 'চোখের চাতক' নামক সঙ্গীত-সংকলন। প্রকাশক গোপালদাস মজুমদার, ডি,এম লাইব্রেরি, ৬১ কর্নওয়ালিশ স্ট্রিট, কলিকাতা। পৃষ্ঠা ৪+৭৮। মূল্য এক টাকা। রাজসংস্করণ এক টাকা ষার আনা। এর উৎসর্গ পত্রে উল্লেখ ছিল-
    'কল্যাণীয়া বীণা-কণ্ঠী/শ্রীমতী প্রতিভা সোম/জয়যুক্তাসু।'
    এই গ্রন্থের মোট গান সংখ্যা ৫৩টি। এর ভিতরে পূর্বে প্রকাশিত গান ছিল ১৯টি। অবশিষ্ট ৩৪টি গান ছিল নতুন।

    পূর্বে প্রকাশিত গান
  1. পেয়ে কেন নাহি পাই হৃদয়ে [তথ্য]
    চোখের চাতক ৩২। জাগরণ পত্রিকার 'বৈশাখ ১৩৩৫‌' সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল
  2. আমার কোন কূলে আজ ভিড়লো তরী [তথ্য]
    চোখের চাতক-১। ঢাকা আষাঢ় ১৩৩৫। সওগাত পত্রিকার 'আশ্বিন ১৩৩৬‌' সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল।
  3. ওরে মাঝি ভাই ওরে মাঝি ভাই ও তুই কি দুখ্‌ পেয়ে কূল হারালি [তথ্য]
    চোখের চাতক ১৯। রচনাস্থান চট্টগ্রাম, জানুয়ারি ১৯২৯। সওগাত  পত্রিকার 'ফাল্গুন ১৩৩৫' সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
  4. কি হবে লাল পাল তুলে [তথ্য]
    চোখের চাতক ২২। ব্রহ্মমোহন ঠাকুর তাঁর নজরুল সঙ্গীত নিরদেশিকা গ্রন্থে গানটি রচনার  স্থান ও তারিখ উল্লেখ করেছেন- '২৪শে জানুয়ারি, ১৯২৯, চট্টগ্রাম'।
  5. তোমায় কূলে তুলে বন্ধু [তথ্য]
    চোখের  চাতক ১৭। সওগাত পত্রিকার 'ফাল্গুন ১৩৩৫‌' সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
  6. ফুল কিশোরী জাগো জাগো  [তথ্য]
    চোখের চাতক ২৬। 'আলেয়া' গীতিনাট্যে প্রস্তাবনা'র গান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। উল্লেখ্য, কল্লোল পত্রিকার 'আষাঢ় ১৩৩৬' সংখ্যার 'সাহিত্য-সংবাদ' বিভাগে'  বিষয়ে বিশেষ তথ্য পাওয়া যায়।
  7. আঁধার রাতে কে গো একেলা [তথ্য]
    চোখের  চাতক ২১। সওগাত  পত্রিকার 'আষাঢ় ১৩৩৬' সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
  8. আসিলে কে অতিথি সাঁঝ [তথ্য]
    চোখের চাতক ৩৩। আলেয়া নাটকে ব্যবহৃত হয়েছিল।
  9. মাধবী-তলে চল মাধবিকা-দল [তথ্য]
    চোখের চাতক ৫০। আলেয়া নাটকে ব্যবহৃত হয়েছিল।
  10. ফাগুন-রাতের ফুলের নেশায়  [তথ্য]
    চোখের চাতক ১০। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ২রা জুন কলকাতার মনোমোহন থিয়েটারে মঞ্চস্থ হয়েছিল শচীন্দ্রনাথের রক্তকমল। এই নাটকে গানটি ব্যবহৃত হয়েছিল।
  11. কেউ ভোলে না কেউ ভোলে [তথ্য]

  12. চোখের চাতক-৮। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ২রা জুন কলকাতার মনোমোহন থিয়েটারে মঞ্চস্থ হয়েছিল শচীন্দ্রনাথের রক্তকমল। এই নাটকে গানটি ব্যবহৃত হয়েছিল।
  13. নিশীথ স্বপন তোর [তথ্য]
    চোখের চাতক ১১। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ২রা জুন কলকাতার মনোমোহন থিয়েটারে মঞ্চস্থ হয়েছিল শচীন্দ্রনাথের রক্তকমল। এই নাটকে গানটি ব্যবহৃত হয়েছিল।
  14. ভাঙা মন (আর) জোড়া নাহি যায় [তথ্য]
    চোখের চাতক ২৩। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ২রা জুন কলকাতার মনোমোহন থিয়েটারে মঞ্চস্থ হয়েছিল শচীন্দ্রনাথের রক্তকমল। এই নাটকে গানটি ব্যবহৃত হয়েছিল।
  15. ঘোর তিমির ছাইল [তথ্য]
    চোখের চাতক ১২। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ২রা জুন কলকাতার মনোমোহন থিয়েটারে মঞ্চস্থ হয়েছিল শচীন্দ্রনাথের রক্তকমল। এই নাটকে গানটি ব্যবহৃত হয়েছিল।
  16. দারুণ পিপাসায় মায়া মরীচিকায় [তথ্য]
    চোখের চাতক ১৩। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ২রা জুন কলকাতার মনোমোহন থিয়েটারে মঞ্চস্থ হয়েছিল শচীন্দ্রনাথের রক্তকমল। এই নাটকে গানটি ব্যবহৃত হয়েছিল।
  17. মোর ঘুমঘোরে এলে মনোহর [তথ্য]
    চোখের চাতক-৭। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ২রা জুন কলকাতার মনোমোহন থিয়েটারে মঞ্চস্থ হয়েছিল শচীন্দ্রনাথের রক্তকমল। এই নাটকে গানটি ব্যবহৃত হয়েছিল।
  18. কে তুমি দূরের সাথী [তথ্য]
    কল্লোল পত্রিকার 'শ্রাবণ ১৩৩৬ বঙ্গাব্দ' সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। চোখের চাতক-৪।
  19. না মিটিতে সাধ মোর নিশি পোহায় [তথ্য]
    চোখের চাতক ৩৪। সওগাত পত্রিকার 'কার্তিক ১৩৩৬‌' (অক্টোবর ১৯২৯) সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল।
  20. জনম জনম গেল আশা-পথ চাহি [তথ্য]
    চোখের চাতক ৩০। সওগাত  পত্রিকার 'অগ্রহায়ণ ১৩৩৬' সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
নতুন গান
  1. কাঁদিতে এসেছি আপনারে লয় [তথ্য]
    চোখের চাতক-২।
  2. ছাড়িতে পরান নাহি চায়  [তথ্য]
    চোখের চাতক-৩।
  3. আজি এ শ্রাবণ-নিশি কাটে কেমনে [তথ্য]
    চোখের চাতক-৫।
  4. আজ বাদল ঝরে (আজি বাদল ঝরে) [তথ্য]
    চোখের চাতক-৬।
  5. যাও যাও তুমি ফিরে[তথ্য]
    চোখের চাতক-৯।
  6. এত কথা কি গো কহিতে জানে [তথ্য]
    চোখের চাতক ১৪।
  7. মন কেন উদাসে [তথ্য]
    চোখের চাতক ১৫।
  8. আমার গহীন জলের নদী [তথ্য]
    চোখের চাতক ১৬।
  9. আমার সাম্পান যাত্রী না লয় [তথ্য]
    চোখের চাতক ১৮।
  10. কেন প্রাণ ওঠে কাঁদিয়া [তথ্য]
    চোখের চাতক ২০।
  11. আমার দুখের বন্ধু, তোমার কাছে [তথ্য]
    চোখের চাতক ২৪।
  12. আমি কি সুখে লো গৃহে রবো  [তথ্য]
    চোখের চাতক ২৫।
  13. জাগো জাগো পোহালো রাতি [তথ্য]
    চোখের চাতক ২৭।
  14. কে এলো ডাকে চোখ গেল [তথ্য]
    চোখের চাতক ২৮।
  15. এলে কি শ্যামল পিয়া (ওগো)  [তথ্য]
    চোখের চাতক ২৯।
  16. কেন নিশি কাটিলি অভিমানে [তথ্য]
    চোখের চাতক ৩১।
  17. পরজনমে দেখা হবে প্রিয় [তথ্য]
    চোখের চাতক ৩৫।
  18. বনে বনে দোলা লাগে [তথ্য]
    চোখের চাতক ৩৬।
  19. কে ডাকিলে আমারে আঁখি তুলে [তথ্য]
    চোখের চাতক ৩৭। সওগাত পত্রিকার 'পৌষ ১৩৩৬ সংখ্যায়' প্রকাশিত হয়েছিল।
  20. ঘেরিয়া গগন মেঘ আসে [তথ্য]
    চোখের চাতক ৩৮।
  21. হিন্দোলি' হিন্দোলি' ওঠে নীল [তথ্য]
     চোখের চাতক ৪০।
  22. দুলে চরাচর হিন্দোল-দোল [তথ্য]
    চোখের চাতক ৩৯।
  23. ওগো সুন্দর আমার  [তথ্য]
    চোখের চাতক ৪১।
  24. জাগো জাগো খোলো গো আঁখি [তথ্য]
    চোখের চাতক ৪২।
  25. বাজায়ে জল-চুড়ি কিঙ্কিণী [তথ্য]
    চোখের চাতক ৪৩।
  26. পরদেশী বধুঁ!ঘুম ভাঙায়ো চুমি' আঁখি [তথ্য]
    চোখের  চাতক ৪৪।
  27. ঝরিছে অঝোর বরষার বারি [তথ্য]
    চোখের চাতক ৪৫।
  28. চল্‌ সখি জল নিতে [তথ্য]
    চোখের চাতক ৪৬।
  29. কার বাঁশরি বাজে মূলতানী সুরে [তথ্য]
    চোখের
  30.  চাতক ৪৭।
  31. মোর ধেয়ানে মোর স্বপনে [তথ্য]
    চোখের চাতক ৪৮।
  32. নাইয়া কর পার [তথ্য]
    চোখের চাতক ৪৯।
  33. বৃন্দাবনে এ কি বাঁশরি বাজে  [তথ্য]
    চোখের চাতক ৫১।
  34. নিশীথ নিশীথ জাগি  [তথ্য]
    চোখের চাতক ৫২।
  35. দেখা দাও দেখা দাও ওগো  [তথ্য]
    চোখের চাতক ৫৩।
২৫শে ডিসেম্বর (মঙ্গলবার ১০ পৌষ ১৩৩৬) মনোমোহন থিয়েটারে মণিলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত 'জাহাঙ্গীর' নামক একটি নাটক মঞ্চস্থ হয়। ওই নাটকে বাদীগণের গান হিসেবে নজরুলের রচিত একটি নতুন গান পরিবেশিত হয়েছিল। বাদীরা গানটি পর্যায়ক্রমে ভেঙে ভেঙে পরিবেশন করেছিল। এই গানটি হলো-
  • রঙ-মহলের রঙ-মশাল মোরা [তথ্য]
৩১শে ডিসেম্বর (মঙ্গলবার, ১৬ই পৌষ ১৩৩৬) কলকাতার মনোমোহন থিয়েটারে মঞ্চস্থ হয়েছিল।
  • মহুয়া: 'ময়মনসিংহ গীতিকা‌' অবলম্বনে নাট্যকার মন্মথ রায়ের রচিত ‌‌একটি পঞ্চাঙ্ক নাটক। মনোমোহন থিয়েটার পরিচালক প্রবোধচন্দ্র গুহের অনুরোধে ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা ডিসেম্বর (বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৩৩৬) নাট্যকার এই নাটকটি লেখা শুরু করেন। পক্ষকালের ভিতরে নাটকটি রচনা করে তিনি প্রবোধচন্দ্র গুহের কাছে তা জমা দেন। সম্ভবত নাট্যকার পুরো নাটক শেষ করেছিলেন ৪-১৯ ডিসেম্বরের মধ্যে। এরপর প্রবোধচন্দ্র নাটকটি মঞ্চস্থ করার জন্য অভিনেতা-অভিনেত্রী নির্বাচন করে মহড়া শুরু করেন। এবং শেষ পর্যন্ত  ১৯২৯ বঙ্গাব্দের ৩১শে ডিসেম্বর (মঙ্গলবার, ১৬ই পৌষ ১৩৩৬) কলকাতায় মনোমোহন থিয়েটারে নাটকটি প্রথম মঞ্চস্থ হয়েছিল।

    গ্রন্থাকারে প্রকাশিত নাটকটির 'লেখকের কথা' অংশে নাট্যকার লিখেছেন- 'মহুয়া'র প্রথম সন্ধান পাই পরম শ্রদ্ধাভাজন দীনেশচন্দ্র সেন সঙ্কলিত মৈমনসিংহ গীতিকায়।' এই নাটকের জন্য গান লিখেছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। এ প্রসঙ্গে নাট্যকার '‌লেখকের কথা' অংশে লিখেছেন- যাহারা আমার দীনতায় আত্মপ্রকাশেই কুণ্ঠিত ছিল আজ তাহারা সগর্বে পাদপ্রদীপের সম্মুখে তাঁহারই গান গাহিতেছে যাঁহার গানে সারা বাঙলা মত্ত-মাতাল, তাঁহারই পরিকল্পিতরূপে আত্মপ্রকাশ করিয়াছে, যাঁহার রূপ পরিকল্পনায় সারা দেশ মুগ্ধ। আমার লেখনীর অক্ষমতাকে এমনি করিয়াই সার্থক সুন্দর করিয়াছেন আমার গীত-সুন্দর বন্ধু কবি নজরুল ইসলাম...'।
মন্মথ রায় নাট্যগ্রন্থাবলী চতুর্থ খণ্ডে (মনমথন প্রকাশন। ২২১ সি, বিবেকানন্দ রোড। কলিকাতা -৭০০০০৬। ১৯৫৮। পৃষ্ঠা: ১৭৭-২৫৪। পৃষ্ঠা: ১৭৭-২৫৪), মোট ১৪টি গান পাওয়া যায়। এই গানগুলো হলো-
  1. কে দিল খোঁপাতে ধুতুরা ফুল লো [প্রথম অঙ্ক। বেদে বেদেনীর গান] [তথ্য]
  2. বউ কথা কও বউ কথা কও [দ্বিতীয় অঙ্ক। মহুয়ার গান] [তথ্য]
  3. কত খুঁজিলাম নীল কুমুদ তোরে [দ্বিতীয় অঙ্ক। মহুয়ার গান] [তথ্য]
  4. ভরিয়া পরান শুনিতেছি গান [দ্বিতীয় অঙ্ক। মহুয়ার গান]  [তথ্য]
  5. একডালি ফুলে ওরে [দ্বিতীয় অঙ্ক। বেদেনীদের গান] [তথ্য]
  6. মহুল গাছে ফুল ফুটেছে [দ্বিতীয় অঙ্ক। বেদে-বেদেনীদের গান] [তথ্য]
  7. খোলো খোলো খোলো গো দুয়ার  [তৃতীয় অঙ্ক। পালঙ্কের গান] [তথ্য]
  8. আজি ঘুম নহে, নিশি জাগরণ [তৃতীয় অঙ্ক। বেদেনীদের গান] [তথ্য]
  9. ও ভাই এ নাও যাত্রী না লয়  [চতুর্থ অঙ্ক। রাধু পাগলের গান]
  10. [তথ্য]
    পূর্বেই ‌'চোখের চাতক‌‌' গ্রন্থে অন্তর্ভুক হয়েছিল।
  11. আমার গহীন জলের নদী [চতুর্থ  অঙ্ক। রাধু পাগলের গান] [তথ্য]
    পূর্বেই সওগাত পত্রিকার 'ফাল্গুন ১৩৩৫ ' সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত হয়। পরে ‌'চোখের চাতক‌‌' গ্রন্থে অন্তর্ভুক হয়েছিল।
  12. তোমায় কূলে তুলে বন্ধু [চতুর্থ অঙ্ক। রাধু পাগলের গান] [তথ্য]
    পূর্বেই ‌'চোখের চাতক‌‌' গ্রন্থে অন্তর্ভুক হয়েছিল। কালানুক্রমিকের বিচারে এটি নজরুলের সঙ্গীতজীবনের দ্বিতীয় পর্বের ১৩৭ সংখ্যক গান।
  13. ফণির ফণায় জ্বলে মণি [চতুর্থ অঙ্ক। মহুয়ার গান] [তথ্য]
  14. মোরা ছিনু একেলা হইনু দুজন [পঞ্চম অঙ্ক। মহুয়ার গান] [তথ্য]
  15. নতুন নেশায় আমার এ মদ [পঞ্চম অঙ্ক। মহুয়ার গান] [গান-৬১৫] [তথ্য]
বাংলা একাডেমী, ঢাকা থেকে প্রকাশিত নজরুল-রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ডের (নতুন সংস্করণ ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪০০/২৫ মে ১৯৯৩) ৮৮৩ পৃষ্ঠায় প্রদেয় গ্রন্থপরিচয় অধ্যায়ে উল্লেখ আছে-
‌'নজরুল-রচনাবলীর নতুন সংস্করণে মহুয়ার গান সংযোজিত হলো। ১৯৩০ সালের ১ জানুয়ারি এ গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। গ্রন্থের প্রকাশক গোপালদাস মজুমদার, ডি, এম, লাইব্রেরি, ৬১ কর্নওয়ালিশ স্ট্রিট, কলিকাতা। মুদ্রাকর কৃষ্ণপ্রসাদ ঘোষ, প্রকাশ প্রেস, ৬৬ মানিক-তলা স্ট্রিট, কলিকাতা। পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৩ এবং মূল্য দুই আনা।

মহুয়ার গান মন্মথ রায়ের মহুয়া নাটকের জন্য রচিত গানের সঙ্কলন। মহুয়া নাটক ১৯২৯ বা তার পূর্বে কোনো এক সময়ে প্রথম মঞ্চস্থ হয়। নাটকটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ১৯৩৯ সালে।

গীতিগ্রন্থ মহুয়ার গানে ১৫টি গান ছিল। তার মধ্যে ১৪ সংখ্যক গান (আমার গহীন জলের নদী) এবং ১৫ সংখ্যক গান (তোমায় কূলে তুলে বন্ধু আমি নামলাম জলে) চোখের চাতক (অগ্রহায়ণ ১৩৩৬) গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এখানে পরিবর্জিত হলো। মূল গ্রন্থের ১৩ সংখ্যাক গানটিও (ও ভাই আমার এ নাও যাত্রী না লয়) চোখের চাতক গ্রন্থে মুদ্রিত হয়, কিন্তু মহুয়ার গানে পাঠভেদ থাকায় গানটি এখানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। 
চোখের চাতক: মহুয়া ছাড়া এই মাসে আর যে সকল নজরুলের রচনা প্রাকশিত হয়েছিল. সেগুলো হলো- এই রেকর্ডটি প্রকাশের পরে ইন্দুবালার কণ্ঠে পি ১১৬৬১-সংখ্যক রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল ডিসেম্বর। এই রেকর্ড ও তার গানগুলো
ইন্দুবালা, আঙ্গুরবালা ও প্রতিভা সোমের (প্রতিভা বসু) কণ্ঠে ধারণ করা হয়েছিল।
  • এইচএমভি । ডিসেম্বর ১৯২৯। রেকর্ড নম্বর পি ১১৬৬১। শিল্পী ইন্দুবালা
    • চেয়ো না সুনয়না আর চেয়ো না [তথ্য]
    • রুম্‌ ঝুম্‌ রুম্‌ ঝুম্‌ কে এলে নূপুর পায়  [তথ্য]
  • এইচএমভি। ডিসেম্বর ১৯২৯। রেকর্ড নম্বর পি ১১৬৭০। শিল্পী আঙ্গুরবালা
    • কেমনে রাখি আঁখি-বারি চাপিয়া [তথ্য]
    • নহে নহে প্রিয় এ নয় আঁখি-জল [তথ্য]
  • এইচএমভি । ডিসেম্বর ১৯২৯।। রেকর্ড নম্বর পি ১১৬৭৩। শিল্পী প্রতিভা সোম (প্রতিভা বসু)।
    • ছাড়িতে পরান নাহি চায় [তথ্য]
    • স্মরণ পারের ওগো প্রিয় [তথ্য]
জানুয়ারি ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ (১৬ পৌষ- ১৭ মাঘ ১৩৩৬ বঙ্গাব্দ)
১লা জানুয়ারি (বুধবার ১৭ পৌষ ১৩৩৬ ) নজরুলের তৃতীয় গানের সংকলন 'মহুয়ার গান' প্রকাশিত হয়। মন্মথ রায়ের রচিত 'মহুয়া' নাটকে নজরুলের গানের সংকলন। প্রকাশক গোপালদাস মজুমদার, ডি,এম লাইব্রেরি, ৬১ কর্নওয়ালিশ স্ট্রিট, কলকাতা। মুদ্রাকর: কৃষ্ণপ্রসাদ ঘোষ, প্রকাশ প্রেস, ৬৬ মানিকতলা স্ট্রিট, কলকাতা। পৃষ্ঠা ১৩। মূল্য দুই আনা। এই গ্রন্থের গানগুলো সম্পর্কে পূর্বেই 'মহুয়া' নাটকের সাথে আলোচনা করা হয়েছে।

এ ছাড়া জানুয়ারি প্রকাশিত হয় তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস 'মৃত্যুক্ষুধা'।  প্রকাশের তারিখ হিসেবে পাওয়া যায় মাঘ ১৩৩৬। প্রকাশক: গোপালদাস মজুমদার, ডিএম লাইব্রেরি, ৬১ কর্ণওয়ালিশ স্ট্রিট কলিকাতা। পৃষ্ঠা: ১৬০। দাম দুই টাকা। উল্লেখ্য, গ্রন্থটি সওগাত পত্রিকার ‌'অগ্রহায়ণ ১৩৩৪ (নভেম্বর ১৯২৭) থেকে মাঘ ১৩৩৪ (জানুয়ারি ১৯৩০) পর্যন্ত দুএকটি সংখ্যা বাদ দিয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় তিনি সপরিবারে কৃষ্ণনগরের চাঁদসড়ক এলাকায় বাস করতেন।

৪ জানুয়ারি (শনিবার ২০ পৌষ ১৩৩৬), খেলাফত আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা মওলানা মোহম্মদ আলী লণ্ডনে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর স্মরণে নজরুল রচনা করেছিলেন 'আধেক হিলাল ছিল আসমানে‌' কবিতাটি রচনা করেছিলেন।

পত্রিকায় প্রকাশিত গান

  •  নাচঘর পত্রিকার '২৬ পৌষ ১৩৩৬ (শুক্রবার ১০ জানুয়ারি ১৯২৯) সংখ্যা
    কে ডাকিলে আমারে আঁখি তুলে [তথ্য]
  • সঙ্গীত বিজ্ঞান প্রবেশিকা। মাঘ ১৩৩৬। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি ১৯৩০।
    নহে নহে প্রিয় এ নয় আঁখি-জল  [তথ্য] [নমুনা]
    নলিনীকান্ত সরকার-কৃত স্বরলিপি-সহ প্রকাশিত হয়েছিল।
  • সওগাত। মাঘ ১৩৩৬। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি ১৯৩০।
    কার বাঁশরি বাজে মূলতানী সুরে [তথ্য]

রেকর্ডে প্রকাশিত গান

  • এইচএমভি। পি ১১৭৬০। শিল্পী: ইন্দুবালা
    সই নদীর পারে বকুল তলায় [তথ্য]

ফেব্রুয়ারি ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ (১৮ মাঘ-১৬ ফাল্গুন ১৩৩৬ বঙ্গাব্দ)
এই মাসে নজরুলের রচিত কোনো রচনার প্রকাশের তথ্য পাওয়া যায় না।

মার্চ ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ (১৭ ফাল্গুন- ১৭ চৈত্র ১৩৩৬ বঙ্গাব্দ)
এই মাসে প্রকাশিত নজরুলের রচনা।

  • ২রা মার্চ, সওগাত পত্রিকার  '১৮ ফাল্গুন ১৩৩৬' সংখ্যায় চানাচুর বিভাগে চতুর্বর্গ-ফলের বোঁটা (রস-রচনা) প্রকাশিত হয়েছিল।
  • জীবনে যাহারা বাঁচিল না (কবিতা)। সওগাত পত্রিকার 'চৈত্র ১৩৩৬' সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। পরে নির্ঝর কাব্যগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
  • ৩০শে মার্চ (রবিবার, ১৬ই চৈত্র) নজরুল হাইকোর্টের রায়ে 'রাজদ্রোহ' মামলা থেকে অব্যাহতি পান।

এপ্রিল ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ (১৮ চৈত্র ১৩৩৬- ১৭ বৈশাখ ১৩৩৭ বঙ্গাব্দ)
কবি আব্দুল কাদির-এর সম্পাদনায় মাসিক জয়তী পত্রিকার প্রকাশনা শুরু হয়েছিল বৈশাখ মাস । এই পত্রিকার প্রথম সংখ্যা অর্থাৎ 'বৈশাখ ১৩৩৭‌'  সংখ্যায় নজরুলের দুটি গান প্রকাশিত হয়েছিল। উল্লেখ্য এই দুটি গানই ইতিপূর্বে রচিত 'আলেয়া' নাটকে ব্যবহৃত হয়েছিল। গান দুটি হলো-

  • বেসুর বীণায় ব্যথার সুরে  [তথ্য]
  • জাগো নারী জাগো বহ্নিশিখা [তথ্য]

এছাড়া এই মাসে প্রকাশিত হয়েছিল একটি পুরানো কবিতা। কবিতাটি হলো-

  • চাঁদনি রাত (কবিতা)। জয়দেবপুরের পথে, অভিযান পত্রিকার 'কার্তিক ১৩৩৩' সংখ্যায় প্রকাশের জন্য পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কবিতাটি অপ্রকাশিত থেকে যায়। পরে জয়তী পত্রিকার বৈশাখ ১৩৩৭ সংখ্যায় কবিতাটি প্রকাশিত হয়েছিল। তবে তার আগেই সিন্ধু-হিন্দোল  কাব্যগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল।

১-২৪ মে ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ (১৭ বৈশাখ- ১০ জ্যৈষ্ঠ্য ১৩৩৭ বঙ্গাব্দ)
৩রা মে (শনিবার, ২০ বৈশাখ ১৩৩৭) খিদিরপুর সমিতির উদ্যোগে ২১ ডেন্ট মিশন রোডস্থ সেন্ট বারানাবাস হাইস্কুলে নজরুলকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। উক্ত সভার সভাপতিত্ব করেছিলেন রায় বাহাদুর দীনেশচন্দ্র সেন।

৭ই মে (বুধবার, ২৪ বৈশাখ ১৩৩৭) নজরুলের দ্বিতীয় সন্তান বুলবুল  (অরিন্দম খালেদ) বসন্ত রোগে আক্রান্ত হয় মৃত্য হয়। এই সন্তানের মৃত্যুতে নজরুল খুব ভেঙে পড়েন। তিনি তাঁর শোককে শক্তিতে পরিণত করেছিলেন রুবাইয়াৎ-ই-হাফিজের রুবাই অনুবাদের মধ্য দিয়ে। সদ্যপ্রয়াত বুলবুলকে উদ্দেশ্য করে- রুবাইয়াৎ-ই-হাফিজের উৎসর্গপত্রে নজরুল লিখেছিলেন-

'বাবা বুলবুল!
    ‌তোমার মৃত্যু-শিয়রে ব'সে 'বুলবুল-ই-শিরাজ' হাফিজের রুবাইয়াতের অনুবাদ আরম্ভ করি। যেদিন অনুবাদ শেষ করে উঠলাম, সেদিন তুমি-কাননের বুলবুল- উড়ে গেছে। যে দেশে গেছ তুমি, সে কি বুলবুলিস্তান ইরানের চেয়েও সুন্দর?'

এই গ্রন্থের ভূমিকাতে নজরুল প্রসঙ্গটি আবার উপস্থাপন করেছেন একটু ভিন্ন আঙ্গিকে। তিনি লিখেছেন-

'...যেদিন অনুবাদ শেষ হ'ল, সেদিন আমার খোকা বুলবুল চ'লে গেছে।

আমার জীবনের যে ছিল প্রিয়তম, যা ছিল শ্রেয়তম তারই নজরানা দিয়ে শিরাজের বুলবুল কবিকে বাংলায় আমন্ত্রণ করে আনলাম।

বাংলার শাসনকর্তা গিয়াসউদ্দিনের আমন্ত্রণকে ইরানের কবি-সম্রাট হাফিজ উপেক্ষা করেছিলেন। আমার আহবান উপেক্ষিত হয়নি। যে পথ দিয়ে আমার পুত্রের "জানাজা" (শবযান) চলে গেল, সেই পথ দিয়ে আমার বন্ধু, আমার প্রিয়তম ইরানী কবি আমার দ্বারে এলেন। আমার চোখের জলে তাঁর চরণ অভিষিক্ত হ'ল...।'

সন্তান বিয়োগ ব্যথায় কাতর কবি হাফিজের অনুবাদের মধ্য দিয়ে, তাঁর ৩০ বৎসর অতিক্রান্ত বয়সের সমাপ্তি ঘটে।

এই মাসে প্রকাশিত রচনা:

  • সওগাত পত্রিকার বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৭ সংখ্যা।
    জিনের বাদশা। গল্প।
  • অবতরণিকা। কবিতা। শিরোনাম ছিল- মরুভাস্কর। পরে মরুভাস্কর  কাব্যগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
  • জয়তী। পত্রিকার জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৭ সংখ্যা। রুবাইত-ই-হাফিজ। পারস্যের কবি হাফিজের ১০টি রুবাইয়ের অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। নজরুলকৃত অনূদিত এই রুবাইগুলো ছিল- ৬, ৭. ৮, ১২, ১৫, ৩২, ৪১, ৪৯, ৫৩ ও ৫৪।

সূত্র
  • কাজী নজরুল। প্রাণতোষ ভট্টাচার্য। ন্যাশনাল বুক এজেন্সী প্রাইভেট লিমিটেড। কলকাতা-১২। ১৩৭৩ বঙ্গাব্দ
  • কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতিকথা। মুজফ্‌ফর আহমদ। ন্যাশনাল বুক এজেন্সি প্রাইভেট লিমিটেড। ১২ বঙ্কিম চ্যাটার্জী স্ট্রীট, কলিকাতা-১২। প্রথম সংস্করণ সেপ্টেম্বর ১৯৬৫।
  • ঠাকুর-বাড়ির আঙিনায়। জসিম উদ্দিন। গ্রন্থপ্রকাশ। কলিকাতা।
  • নজরুল-জীবনী। রফিকুল ইসলাম। নজরুল ইন্সটিটউট, ঢাকা। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দ।
  • নজরুল তারিখ অভিধান। মাহবুবুল হক। বাংলা একাডেমী, ঢাকা। জুন ২০১‌০ খ্রিষ্টাব্দ।
  • নজরুল যখন বেতারে। আসাদুল হক। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী। মার্চ ১৯৯৯।
  • নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। প্রথম-দ্বাদশ খণ্ড [বাংলা একাডেমী, ঢাকা]
  • নজরুল সঙ্গীত নির্দেশিকা। ব্রহ্মমোহন ঠাকুর [কবি নজরুল ইনস্টিটিউট। আষাঢ় ১৪২৫/জুন ২০১৮]
  • নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ (নজরুল ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২)।
  • নাট্যকার নজরুল। অনুপম হায়াৎ। নজরুল ইন্সটিটিউট। জুন ১৯৯৭।
  • বিদ্রোহী-রণক্লান্ত, নজরুল জীবনী। গোলাম মুরশিদ। প্রথমা, ঢাকা। ফেব্রুয়ারি ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ। 
  • মন্মথ রায় নাট্যগ্রন্থাবলী চতুর্থ খণ্ড। মনমথন প্রকাশন। ২২১ সি, বিবেকানন্দ রোড। কলিকাতা -৭০০০০৬। ১৯৫৮। পৃষ্ঠা: ১৭৭-২৫৪।