|
ধারণা করা হয় প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ বৎসর আগে
প্রাইমেট
বর্গের অন্তর্গত
হোমিনিডি
গোত্রের
হোমো
গণের অন্তর্গত
Homo sapiens
এর আবির্ভাব ঘটেছিল আফ্রিকার মরোক্কোর জেবেল ইর্হৌদ (Jebel
Irhoud)
-তে। উল্লেখ্য আগে মনে করা হতো, দুই লক্ষ বৎসর আগে আদি মানুষের উদ্ভব ঘটেছিল ইথিওপিয়া অঞ্চলে।
উল্লেখ্য,
হোমো স্যাপিয়েন্সের একটি উপ-প্রজাতি
১ লক্ষ ৬০ হাজার বৎসর আগে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিকশিত হয়েছিল। এই প্রজাতিটি হলো
Homo sapiens idaltu।
আধুনিক মানুষের মূল প্রজাতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়- Homo sapiens
sapiens
উপ-প্রজাতিকে।
আধুনিক মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম হলো-
Homo sapiens ।
ল্যাটিন
sapiens
-এর অর্থ হলো জ্ঞানী মানুষ। হোমো গণের আগের প্রজাতিগুলোর থেকে এই প্রজাতির মূল
পার্থক্য হলো- এর বুদ্ধিমত্তা। এমন কি নিয়ানডার্থালদের (হোমো নিয়ানডার্থালেনসিস)
সাথে মস্তিষ্কের পরিমাপগত
মিল (১৭০০ সিসি) থাকলেও বুদ্ধিমত্তার বিচারে
Homo sapiens
আরও অনেক বেশি এগিয়ে রয়েছে।
খাদ্য
মানুষ সর্বভুক
প্রাণী। আদিম মানুষ সবকিছুই কাঁচা খেতো। আগুন আবিষ্কারের পর থেকে মানুষ ফল জাতীয়
খাবার ছাড়া সবকিছুই রান্না করে খায়। মানুষ প্রাকৃতি থেকে অবিকৃত খাদ্য-উপাদান
সরাসরি খায় আবার প্রাকৃতিক উপকরণগুলোকে নানা প্রক্রিয়া খাদ্যে পরিণত করে গ্রহণ করে।
মানুষ প্রধান খাদ্য তালিকার অন্যতম উপকরণ শর্করা জাতীয় খাদ্য। এই খাদ্য মানুষ
সংগ্রহ করে ধান বা গম জাতীয় শস্য থেকে। মানুষ আমিষের চাহিদা মেটায় নানা ধরনের
প্রাণী থেকে। কিছু আমিষের চাহিদা মেটায় আমিষ-সমৃদ্ধ খাবার থেকে। চর্বিজাতীয় খাবার,
বনজ ফল ও তেলসমৃদ্ধ বীজ থেকে তেল সংগ্রহ করে স্নেহজাতীয় খাবারের অভাব পূরণ করে।
লবণের চাহিদা মেটায় মূলত সামুদ্রিক লবণ বা খনিজ লবণ থেকে। পানির চাহিদা মেটায় মূলত
সরাসরি পানি পান করে। এছাড়া পানি-সমৃদ্ধ ফল বা শস্য থেকেও পানির চাহিদা মেটায়।
প্রজনন ও বংশগতি
যৌন-প্রক্রিয়া দ্বারা নারী গর্ভবতী হয়। প্রায় ৯
মাস গর্ভধারণ করার পর, নারী একটি বা দুটি সন্তান প্রসব করে। কখনো কখনো এর চেয়ে বশি
সন্তান প্রসবের ঘটনাও দেখা যায়। মানব শিশু মূলত মায়ের যত্নে বড় হয়ে উঠে। প্রায় ১৫
বৎসরে মেয়ে শিশু এবং ১৮ বৎসর বয়সে পুরুষ শিশু প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে উঠে।
মানুষের সর্বোচ্চ প্রায় ১২০ বৎসর বাঁচে।
বংশগতির বিচারে মানুষ সু-প্রাণকেন্দ্রীয় কোষ-যুক্ত দ্বিবিভাজিতধর্মী বহুকোষী প্রাণী। ২৩টি করে ক্রোমোজম সেট নিয়ে এর কোষ গঠিত। এর একটি সেট পিতামাতার ক্রোমোজোম দ্বারা সংমিশ্রিত হয়। এর ভিতরে ১টি সেট মানব শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ করে। অবশিষ্ট ২২টি ক্রোমোজোম মানবশিশুর অন্যান্য বৈশিষ্ট্য বা গুণ ধারণ করে। অন্যান্য সু-প্রাইমেট-দের মতো- এদের স্ত্রী লিঙ্গ নির্ধারিত হয় XX লিঙ্গ ক্রোমোজোম এবং পুংলিঙ্গ নির্ধারিত হয় XY লিঙ্গ ক্রোমোজোম দ্বারা। মানুষের বংশগতি নির্ধারণের জন্য রয়েছে প্রায় ২২০০০ জিন।
সূত্র: